‘পরিবেশবান্ধব শিল্পে সব ধরনের সহায়তা দেবে সরকার’
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু প্লাস্টিক শিল্প মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, পরিবেশবান্ধব শিল্প স্থাপনে এগিয়ে আসুন, সরকার সব ধরনের নীতি সহায়তা দেবে। পরিবেশবান্ধব সবুজ শিল্পায়নের লক্ষ্য অর্জনে যেসব কারখানায় পরিবেশ দূষণকারী বর্জ্য উত্পাদিত হয় সেগুলোতে বাধ্যতামূলকভাবে বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি) স্থাপনের জন্য শিল্প মালিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য ধ্বংস করে এমন কোনো ধরনের শিল্পায়নের প্রতি সরকারের সমর্থন নেই এবং থাকবে না বলেও হুঁশিয়ার করেন শিল্পমন্ত্রী।
এদিকে সব ধরনের পণ্যে সর্বজনীন প্যাকেজিং অ্যাক্ট বাস্তবায়নে সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্লাস্টিক ব্যবসায়ীরা শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই (ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি) সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ।
বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তারা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী। আর বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিপিজিএমইএ সভাপতি মো.জসিম উদ্দিন, সাবেক সভাপতি ফেরদৌস ওয়াহেদ, শাহেদুল ইসলাম হেলাল, খাজা আনোয়ারুল হক, পরিচালক শাহজাহান, আবুল খায়ের প্রমুখ।
কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে সম্ভাবনাময় প্লাস্টিক শিল্পের উন্নয়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান শিল্পমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ শিল্পে বিরাজমান পণ্য বৈচিত্র্যকরণের সুবিধা কাজে লাগিয়ে এর টেকসই বিকাশে যথাযথ অবদান রাখতে হবে। পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার সূচিত নতুন ধারাকে জোরদার করার কোন বিকল্প নেই। এর মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে শিল্প সমৃদ্ধ মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার অভিযাত্রাকে এগিয়ে নিতে সক্ষম হওয়ার বিষয়ে দৃঢ়ভাবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্লাস্টিকের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট অ্যাক্ট না থাকায় এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত বেশ কিছু কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জানিয়ে মাতলুব আহমাদ বলেন, প্যাকেজিং বিষয়ে পাট শিল্পের জন্য যে আইন করা হয়েছে তাতে সমস্যার সমাধান হবে না। কারণ অভ্যন্তরীণ ও রফতানি উপযোগী এমন কিছু পণ্য রয়েছে যেগুলোর প্যাকেজিং প্লাস্টিক ছাড়া সম্ভব নয়। প্রসঙ্গত, সমপ্রতি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে ৬টি (ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি) পণ্যে প্যাকেজিং এ প্লাস্টিকের পরিবর্তে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার পরিপ্রেক্ষিতে এ আলোচনা এসেছে। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, প্লাস্টিক খাতে শুল্ক প্রত্যাহারসহ প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তা পেলে এ খাত অচিরেই একটি সম্ভবনাময় খাতে পরিণত হবে।
চার দিনের ১১তম আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক সামিটের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিপিজিএমইএ)। সামিটের সহআয়োজক হিসাবে রয়েছে তাইওয়ানের চান চাও ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেড। সামিটে ২২ দেশের ৩৫০টি স্টল রয়েছে। এখানে মেশিনারিজ, মোল্ড, কাঁচামাল উত্পাদনকারী ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানসহ দেশে ব্যবহূত বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক পণ্য উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিয়েছে।