পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচল শুরু।
প্রথমবার দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়েছে ট্রেন। মঙ্গলবার দুপুর ১টা ২১ মিনিটে ভাঙা স্টেশন থেকে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে। ২টা ৪৭ মিনিটে ট্রেনটি শিবচর প্রান্ত থেকে পদ্মা সেতুতে উঠে। ৩টা ১৩ মিনিটে পদ্মা সেতু অতিক্রম করে। পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে সময় লাগে ১৬ মিনিট। এসময় পদ্মাপাড়ের শিবচরের সাধারণ মানুষের মধ্যে ট্রেন চলাচল নিয়ে অন্যরকম উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে শিবচরের পদ্মাস্টেশনে এসে দেখা গেছে, কর্মব্যস্ত সময় পার করছে শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয় অনেকেই এসে ঘুরে ফিরে দেখছেন স্টেশন। মতিউর রহমান শেখ নামের স্থানীয় এক বীর মুক্তিযোদ্ধার সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, ট্রেন দেখতে আসলাম। আজকে এখান দিয়ে ট্রেন যাবে পদ্মাসেতু পার হয়ে। শুনতেছি জুন থেকে ট্রেন চলাচল করবে। আমরা অল্প খরচে বিভিন্ন স্থানে যেতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, ভাঙ্গা থেকে ট্রেন পদ্মা পার হইয়া ওই পারে যাইবে। দেখতে দেখতে এই এলাকার কত পরিবর্তন হইলো। পদ্মায় সেতু হইলো। এখন ট্রেনও চলবে। আমাদের কাছে আনন্দ লাগতেছে।’ তিনি বলেন, ‘ট্রেন চালু হইলে আমরা সহজেই বিভিন্ন স্থানে যেতে পারবো। আর খরচও অনেক কম হইবে। আজকে মন্ত্রী আসবে। ট্রেন পদ্মাসেতু পার হয়ে মাওয়া যাবে। এই কারণে দেখতে আসলাম।’
জাজিরা প্রান্ত থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত তিনটি স্টেশন রয়েছে। শিবচরে ২ টি স্টেশন এবং ভাঙ্গায় জংশন রয়েছে। স্টেশনগুলোর ওপর দিয়ে ৩২ কিলোমিটার লাইন নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া ভাঙ্গা জংশনটি আধুনিকায়ন করার কাজ চলছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা-পদ্মা সেতু হয়ে নতুন চার জেলা (মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল) অতিক্রম করে যশোরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন জানান, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটারের অংশে আগামী সেপ্টেম্বর যাত্রীবাহী রেল চলাচল করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথে লেভেল ক্রসিংবিহীন ৩২টি রেল কালভার্ট, ৩৭টি আন্ডারপাস ও ১৩টি রেল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের রেল স্টেশনসহ নতুন ১৪টি স্টেশন নির্মাণ ও পুরনো ছয়টি স্টেশনের কাজ।’