পতন আফ্রিকান ফুটবলের
পতন
আফ্রিকান ফুটবলের
পেলে একবার বলেছিলেন ২০০০ সালের আগেই আফ্রিকার কোনো একটি দেশের বিশ্বকাপ জয়ের কথা। সেই ভবিষ্যদ্বাণী ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ১৮ বছরে ৪টি বিশ্বকাপ পেরিয়ে গেলেও সে ধরনের কিছু হয়নি। কিন্তু বিশ্বকাপে আফ্রিকান দেশগুলোর প্রতিনিধিত্ব বোধ হয় এতটা আলোহীন আর কখনোই ছিল না। ২০০২ সালে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছিল সেনেগাল, ২০১০ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে গিয়েছিল ঘানা। কিন্তু এবার? সেনেগাল, মিসর, নাইজেরিয়া, তিউনিসিয়া, মরক্কো—এই পাঁচ প্রতিনিধির সবাই বিদায় নিলেন প্রথম রাউন্ড থেকেই!১৯৮২ সালের পর এবারই বিশ্বকাপটা এত বাজে কাটল আফ্রিকার। শেষ ভরসা হিসেবে টিকে ছিল সেনেগাল। গতকাল কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি ড্র করলেই দ্বিতীয় রাউন্ডে চলে যেত সেনেগালিজরা। কিন্তু তারা হেরে গেল ১-০ গোলে। বিদায়টাও হলো ফিফার নতুন চালু করা ‘ফেয়ার প্লে’ আইনের মারপ্যাঁচে! গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে চারটি হলুদ কার্ড দেখেছে জাপান। দুটি হলুদ কার্ড বেশি দেখেছে সেনেগাল। এতেই জাপান টপকে গেল আফ্রিকাকে। নির্দিষ্ট করে বললে এশিয়া টপকে গেল আফ্রিকাকে।
আফ্রিকার কোনো দল বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফিরবে, এমন বড় স্বপ্ন হয়তো ছিল না। কিন্তু মোহাম্মদ সালাহ ও সাদিও মানেদের মতো বিশ্বসেরা তারকাদের দেশগুলো গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারবে না, এটাও কেউ প্রত্যাশা করেনি। সালাহর মিসর তো প্রথম দু ম্যাচ হেরেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত করেছে। মরক্কো ও তিউনিসিয়াও তাই।
আশাটা টিকিয়ে রেখেছিল ওবি মিকেলের নাইজেরিয়া ও মানের সেনেগালের। কিন্তু আর্জেন্টিনার বিপক্ষে হেরে কপাল পুড়েছে সুপার ইগলদের। আর গতকাল হলুদ কার্ডের খড়গে পুড়ল সেনেগাল। মোট ১৫টি ম্যাচের মধ্যে আফ্রিকান দলগুলোর জয় তিনটিতে। বাকি ১২টিতেই হেরেছে তারা। সেনেগাল-ঘানার আগে ১৯৯০ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছিল রজার মিলার ‘অদম্য সিংহ’ ক্যামেরুন।
রাশিয়ায় আফ্রিকার পতনটা কষ্ট দিচ্ছে আইভরি কোস্ট ও চেলসির সাবেক তারকা দিদিয়ের দ্রগবাকে। তিনি আফ্রিকান ফুটবলকে নতুন করেই সাজাতে বলছেন, ‘আফ্রিকা একদিন সফল হবেই। কিন্তু আমাদের ভাবতে হবে বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে খেলতে আসার আগে কীভাবে আসা উচিত।’
দ্রগবার কথা মনে রাখলে হয়তো ২০২২ সালে নতুন চেহারার আফ্রিকাই দেখা যেতে পারে। তত দিন অপেক্ষা করতেই হবে।