নোয়াখালীতে নারীকে নির্যাতন: প্রধান আসামিসহ দুজনের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি

11/10/2020 11:07 pmViews: 27

প্রধান আসামিসহ দুজনের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি

প্রধান আসামিসহ দুজনের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় হওয়া মামলার প্রধান আসামিসহ দুজন আদালতে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ রোববার বিকেলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দুজন বিচারক এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

স্বীকারোক্তি দেওয়া তিনজন হলেন প্রধান আসামি নুর হোসেন ওরফে বাদল (২২) ও ৫ নম্বর আসামি মাইন উদ্দিন ওরফে সাজু (২১)। তাঁদের আগে আরও পাঁচজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আজ বিকেল পাঁচটার দিকে ওই দুই আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করা শুরু হয়। সন্ধ্যার পর রেকর্ড শেষ হয়। এর আগে প্রত্যেক আসামিকে নিয়মানুযায়ী তিন ঘণ্টা করে সময় দেওয়া হয়। নুর হোসেনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাশফিকুল হক। মাইন উদ্দিনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন অন্য সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নবনীতা গুহ। ওই দুজন ছাড়াও আজ রিমান্ড শেষে অন্য আসামি রহমত উল্যাহকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

জানতে চাইলে পর্নোগ্রাফি আইনে দায়ের হওয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওই দুই আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে জবানবন্দি পুরোটা তিনি পড়ে দেখেননি। তাই আসামিরা কী বলেছেন, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।জবানবন্দি পুরোটা তিনি পড়ে দেখেননি। তাই আসামিরা কী বলেছেন, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।

মোস্তাফিজুর রহমান, পরিদর্শক, পিবিআই, নোয়াখালী

গত ২ সেপ্টেম্বর বেগমগঞ্জের একলাশপুরে ঘরে ঢুকে স্বামীকে বেঁধে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেন দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা। তাঁরা এই ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণ করে রাখেন। পরে তাঁরা ওই নারীকে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় তাঁরা ধারণ করা ভিডিও চিত্র ৪ অক্টোবর ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। পরে সারা দেশে এর বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এতে পুলিশের টনক নড়ে। পুলিশ ওই দিন সন্ধ্যায় জেলা শহরের মাইজদী হাউজিং এলাকার বাসা থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে। রাতে ওই নারী দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান সহযোগী নুর হোসেনসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় সাত-আটজনকে আসামি করে থানায় দুটি মামলা করেন। একটি মামলা নেওয়া হয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে। অন্যটি নেওয়া হয় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে। মামলা দুটি পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

পিবিআই সূত্রে জানা যায়, মামলা দুটিতে পুলিশ, র‍্যাব ও পিবিআই এ পর্যন্ত ১১ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। এ পর্যন্ত ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাতজন আদালতে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁরা হলেন একলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুর রহিম, আনোয়ার হোসেন ওরফে সোহাগ, নুর হোসেন ওরফে রাসেল, মঈনুদ্দিন সাহেদ, নুর হোসেন ওরফে বাদল ও মাইন উদ্দিন ওরফে সাজু। এ ছাড়া দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেনকে অস্ত্রসহ নারায়ণগঞ্জে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি সেখানকার কারাগারে রয়েছেন।

নোয়াখালী পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান মুন্সি জানান, আজ সকালে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে ঘটনার সময় প্রধান আসামির পরনে থাকা জিনসের প্যান্ট এবং দুপুরে বাদীর বসতঘর থেকে কিছু ব্যবহার্য জিনিস মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে।

Leave a Reply