নেপালে তীব্র সঙ্কট, বন্ধ হচ্ছে কলকারখানা রাতে বিদ্যুত দিচ্ছে না ভারত,
নেপালে তীব্র সঙ্কট, বন্ধ হচ্ছে কলকারখানা
রাতে বিদ্যুত দিচ্ছে না ভারত,
কর্মকর্তারা বলছেন, বিদ্যুতের উচ্চ মূল্য ধরার কারণে নেপাল ইলেকট্রিক অথরিটি (এনইএ) বিদ্যুত কিনতে সক্ষম হয়নি, বিশেষ করে রাতের জন্য।
এ সময় ভারতেই বিদ্যুতের চাহিদা থাকে তীব্র। ফলে রপ্তানি করার জন্য বা প্রতিবেশীকে দেয়ার মতো পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ তাদের হাতে থাকে না। ফলে এ সময়টাতে নেপালে রাতের বেলা বিদ্যুতের বড় ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।
বর্ষা মৌসুমে উদ্বৃত্ত বিদ্যুত রপ্তানি করার সুযোগ বেছে নিয়েছে নেপাল। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে (মধ্য ডিসেম্বর থেকে মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত) দেশটির যে পরিমাণ বিদ্যুত প্রয়োজন, তার অর্ধেকের বেশির জন্য নির্ভর করতে হয় ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের ওপর। এ সময়ে নেপালের নদীগুলোর পানির স্তর নিচে নেমে যায়। এই নদী ব্যবহার করেই তারা উৎপাদন করে পানিবিদ্যুৎ। সেখানে যেসব পানিবিদ্যুৎ বিষয়ক প্রকল্প আছে তার বেশির ভাগই পরিচালিত হয় প্রবহমান নদীর ওপর ভিত্তি করে। এই পানির প্রবাহ চ্যানেল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে টার্বাইনকে ঘোরায়। কিন্তু পানির প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে শুষ্ক মৌসুমে সক্ষমতার মাত্র ৩০ থেকে ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হয়।
তার মতে, সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৭টা পর্যন্ত ভারত থেকে নেপালে কোনো বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকেই না। মার্চের শেষের দিকে ভারত থেকে নেপালে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয় রাতের বেলা। এ অবস্থা চলে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত। উপরন্তু মধ্য ফেব্রুয়ারিতে তানাকপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্ধারিত মূলে নেপালকে বিদ্যুৎ দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। ওদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে কয়লার দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক। এ কারণে ভারত তার কয়লাচালিত বেশ কিছু বিদ্যুতকেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলেও সঙ্কট গাঢ় হয়েছে।
এনইএ’র মতে, নেপালের আভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ উৎপাদন এখন প্রায় ৮৫০ মেগাওয়াট। তবে পিক-আওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা পৌঁছে যায় ১৭০০ মেগাওয়াট। সুরেশ ভট্টরাই বলেন, ভারত থেকে যেহেতু আমরা অধিক পরিমাণ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে পারছি না, তাই সুনির্দিষ্ট শিল্প খাতগুলোতে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ দিতে পারছি না। তা সত্ত্বেও সব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে আমরা দিনে কমপক্ষে ১৫ থেকে ১৬ ঘন্টা বিদ্যুৎ দিয়ে যাচ্ছি। যখন বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হবো না, তখন আমরা সংশ্লিষ্ট কারখানাকে পূর্ণাঙ্গভাবে চালু না রাখার পরামর্শ দেবো।
এনইএর মতে, নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে টুইন বা দুটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে নেপাল। ভট্টরাই বলেন- প্রথমত, ভারতের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে পারছি না আমরা। ভারত কর্তৃপক্ষ বিদ্যুতের অতি উচ্চ মূল্য নির্ধারণ করেছে। দ্বিতীয়ত, নদনদীতে পানির স্তর কমে গেছে। এপ্রিলে এসে তা অনেক কমে গেছে। এসবই আভ্যন্তরীণ বিদ্যুত উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে।