নির্বাচন নিয়ে দ্বিধায় বিজিএমইএ
নির্বাচন নিয়ে দ্বিধায় বিজিএমইএ
তৈরী পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর ২০১৫-১৬ বছরের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য আগামী ৮ই সেপ্টেম্বর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। সে হিসেবে আর মাত্র এক মাস পরেই বর্তমান কমিটিকে নতুন নেতৃত্বের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। ইতিমধ্যেই নমিনেশন পত্র তোলা ও জমা দেয়ার তারিখ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কিন্তু আগামী দুই বছরের জন্য নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন নাকি সমঝোতায় নির্ধারণ করা হবে তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছে সংগঠনটি। বিজিএমইএ’র একাধিক ভোটার মানবজমিনেক বলেছেন, ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব চাই। সমঝোতার ভিত্তিতে নেতৃত্ব আসার বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তারা।
সূত্রগুলো জানায়, সমঝোতার ভিত্তিতে প্রার্থী দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষ সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম। তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রার্থী না হলে সভাপতি, সহসভাপতি ও পরিচালক হতে নির্বাচন লাগবে না। আর এতে সদস্যরা নেতা নির্বাচনে নিজেদের ভোটের অধিকার হারাবেন। সব কিছু ঠিক থাকলে সম্মিলিত পরিষদ থেকে আগামী ২৫শে সেপ্টেম্বর সমঝোতার মাধ্যমে সাবেক দ্বিতীয় সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বিজিএমইএর সভাপতির দায়িত্ব নেবেন। এ ছাড়া পরিষদ থেকে চারজন এবং ফোরাম থেকে তিনজন সহসভাপতি নির্বাচন করা হবে। এর আগেও দুই মেয়াদে সমঝোতার ভিত্তিতে বিজিএমইএর কমিটি হয়েছিল। পরে আবার নির্বাচনে ফিরে আসে সংগঠনটি। এদিকে বর্তমান কমিটির মেয়াদ গত মার্চে শেষ হলেও তা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।
বিজিএমইএ’র সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, এরকম সমঝোতার নির্বাচন অনেকেই মেনে নেবেন না। নির্বাচন হলে প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে যেতেন, এতে ভোটারদের মূল্যায়ন হতো। পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হতো। তবে সমঝোতার বিষয়ে সিনিয়রদের সিদ্ধান্তের বাইরে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের নেতারা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সিরিজ বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে সংগঠনের নেতৃত্ব আগামী দুই মেয়াদের জন্য কিভাবে ভাগাভাগি হবে সেটি চূড়ান্ত করা হয়। আগামী ২০১৫-১৬ মেয়াদের জন্য বিজিএমইএ’র নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। সে হিসেবে ৮ই সেপ্টেম্বর ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা। এবার কমিটির পরিচালক পদের সংখ্যা ২৭ থেকে ৩৫-এ উন্নীত হবে। তাদের মধ্য থেকে একজন সভাপতি ও সহসভাপতি হবেন সাতজন।
বিজিএমইএ সূত্র জানায়, আগামী দুই মেয়াদের প্রথম ২ বছরের জন্য সম্মিলিত পরিষদ থেকে সভাপতি হবেন। পরের দুই বছরের জন্য সভাপতির পদটি পাবে ফোরাম। সেই হিসেবে আসছে সেপ্টেম্বরে বিজিএমইএর সভাপতি হতে পারেন সাবেক সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। গত বছরই তাকে এ পদের জন্য মনোনয়ন দেয় সম্মিলিত পরিষদ। এ ছাড়া আগামী দুই বছরের জন্য সম্মিলিত পরিষদ সভাপতিসহ ঢাকায় তিন ও চট্টগ্রামের একটি সহসভাপতির পদ এবং ফোরাম ঢাকায় দুই ও চট্টগ্রামে একটি সহসভাপতি পদ পাবে। পরের বছর দুই পক্ষের মধ্যে এ সংখ্যক পদ অদলবদল হবে। তবে তৃতীয় মেয়াদ থেকে কি হবে তা সময় বলে দেবে।
সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, বর্তমান ব্যবসার যে করুণ অবস্থা, সেটি থেকে বেরিয়ে আসতে ও সংগঠনের সক্ষমতা বাড়াতেই সমঝোতার উদ্যোগটি নেয়া হয়েছে। তবে তিনি বলেন, ভোটের মাধ্যমে কেউ নির্বাচিত হলে তার কাজের জবাবদিহির একটা জায়গা থাকত। এখন এটি কমে যেতে পারে। তবে আবার ভালও হতে পারে।