নিবন্ধন অবৈধ: আপিল প্রস্তুতে ২ মাস সময় পেলো জামায়াত ইসলামী

31/01/2023 10:57 pmViews: 2

mzamin

রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেয়া নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত করতে চূড়ান্তভাবে দুই মাস সময় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।

আদালতে জামায়াতের পক্ষে ছিলেন এডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন। রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। শুনানিতে আদালতৈর কাছে সময় চান  আইনজীবী জয়নুল আবেদীন তুহিন। আদালত বলেন, দুই মাস সময় মঞ্জুর করা হলো, সঙ্গে ডিফল্ট অর্ডার।

পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানিয়া আমীর বলেন, আপিলটি শুনানির জন্য অনেকবার উদ্যোগ নিয়েছি। আদালত তাদের অনেকবার সময় দিয়েছেন। ওনারা গড়িমসি করে ফাইল প্রস্তুত করছেন না। আপিল বিভাগ আদেশ দিলেন, যদি দুই মাসের মধ্যে তারা আপিলের সারসংক্ষেপসহ ফাইল শুনানির জন্য প্রস্তুত না করেন, তাহলে তাদের আপিল খারিজ হয়ে যাবে। তারা যদি তাদের করা আপিল আদৌ শুনানি করতে চান, তাহলে ফাইল প্রস্তুত করে এই সময়ের মধ্যে শুনানি করতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, আদালত আগামী দুই মাসের জন্য সময় দিয়েছেন।

এ দুই মাসের মধ্যে কনসাইজ স্টেটমেন্ট (আপিলের সার সংক্ষেপ) জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আর কোনো সময় দেবেন নাও বলে উল্লেখ করেছেন আদালত। তিনি বলেন, আদালতের আদেশ অনুসারে মামলার শুনানিতে জামায়াতে ইসলামী অংশ নেবে। আশা করি সব শর্ত পূরণ করেই জামায়াত নিবন্ধন ফিরে পাবে। আর দুই মাসের মধ্যে আপিল প্রস্তুত করতে পারব। আমাদের প্রধান আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মদ আলী। এছাড়া ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক ও এহসান সিদ্দিক আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত আছেন। তারা এ মামলাটি পরিচালনা করবেন।

২০০৮ সালের ৪ঠা নভেম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দল হিসেবে জামায়াতকে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট আবেদন করেন তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি।

 প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৫ জানুয়ারি হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ রুল দেন। রুলে রাজনৈতিক দল হিসেবে ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০বি (১)(বি)(২) এবং ৯০সি অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও সংবিধানপরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না কেন, তা জানতে চাওয়া হয়। জামায়াতের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল, দলের তৎকালীন আমির, নির্বাচন কমিশনসহ চার বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। ২০১৩ সালের ১লা আগস্ট রুলের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট  চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর  নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে  রায় দেন হাইকোর্টের তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সনদ দেন। এরপর রায় স্থগিত চেয়ে জামায়াত আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে, যা ২০১৩ সালের ৫ আগস্ট খারিজ হয়।

এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এর আওতায় রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছিল। দলটির নিবন্ধন নম্বর ছিল ১৪। ২০০৯ সালে হাইকোর্টে করা ৬৩০ নম্বর রিট পিটিশনের রায়ে আদালত জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করায় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০এইচ ধারা অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করা হলো।

Leave a Reply