নিখোঁজের ২৩ ঘন্টা পর চরফ্যাশনের পৌর কাউন্সিলর সামুকে অচেত অবস্থায় নরসিংদি থেকে উদ্ধার
চরফ্যাশন : ভোলার চরফ্যাশন পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের জনপ্রিয় কাউন্সিলর, যুবলীগ নেতা আকতারুল আলম সামু ঢাকার খিলগাঁও থেকে নিখোঁজ হওয়ার ২৩ ঘন্টা পর মঙ্গলবার সন্ধায় নরসিংদির মাদবদীর বড়মসজিদের কাছ থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছেন।
সামুর পারিবারিক সুত্র জানায়, যুবলীগ নেতা আকতারুল আলম সামু ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব’র সাথে দেখা করার জন্য গত রবিবার চরফ্যাশন থেকে ঢাকা যান। ঢাকায় তার মামাতো ভাই ডাক্তার ফিরোজ সালাউদ্দিনের ৫৬৭/২, ব্লক-সি, খিলগাঁও’র বাসায় উঠেন। গত সোমবার রাত ৮টার দিকে ওই বাসা থেকে ডাক্তারের খিলগাঁও’র বেলবু ডায়াগনস্টিক সেন্টারের উদ্দেশ্যে গিয়ে আর বাসায় ফিরেনি। তাকে রাতে ঢাকার সবকয়টি হাসপাতাল, থানা, র্যাব, ডিবি’র অফিসসহ বহু জায়গায় খোঁজা-খুজি করে না পেয়ে, তার ছোট ভাই আফসার উদ্দিন রাসেল বদী হয়ে মঙ্গলবার ঢাকার খিলগাঁও থানায় জিডি করেছেন, জিডি নং ১৩৩৯, তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩। সন্ধায় নরসিংদির মাদবদীর বড়মসজিদের কাছ থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করেছেন বলে সংবাদ পেয়েছেন।
নরসিংদির মাদবদীর পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এস আই জাহাঙ্গির আলম মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে জানান, স্থানীয়রা মাদবদীর বড়মসজিদের কাছে অচেত অবস্থায় সামুকে পেয়ে ওই মসজিদের ঈমামের কাছ নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পুলিশ ফাড়িতে খবর দেয়। খবর পেয়ে ফাড়ির পুলিশ তাকে মঙ্গল বার সন্ধার সময় উদ্ধার করেছেন। তার জ্ঞান ফিরলেও পুরোপুরি সুস্থ্য না হওয়ায়কোন তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানান ফাড়ির ইনচার্জ।
আকতারুল আলম সামুর বড় ভাই আনজামুল আলম মুনির জানান, তিনি চরফ্যাশন পৌরসভার খুব স্পর্শকাতর এলাকা থেকে কাউন্সিলর নির্বচিত হয়েছেন। সেখানে কাউন্সিরর নির্বাচন নিয়ে তার সাথে এন্টি পক্ষের বিরোধ আছে, সাবেক সাংসদ নাজিম উদ্দিন আলমের সাথে মতনৈক্য রয়েছে যার জন্য ১৯৯৬ সালে সামু আওয়ামীলীগে যোগদান করেছেন। যোগদান করায় সামুকে বিএনপি দলীয় সাবেক সাংসদ আলমের নির্দেশে মীর সায়েদের নেতৃত্বে এক দল সন্ত্রাসী হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে হাত পায়ের রগ কেটে দেয়, পৌর এলাকায় মাদক ও ভেজাল বিরোধী সভা সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে কতিপয় মাদক সেবী ও বিক্রেতার চক্ষুশুল হয়েছেন, সম্প্রতি পৌরসভার কিছু উন্নয়ন মূলক কাজে সাংসদের নির্দেশে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্বে থাকাতে বিএনপিগরনার কিছু অবৈধ দখলদারদের সাথে তার শত্রুতা সৃষ্টি হয়েছে এবং অদৃশ্য কারণে নিজ রাজনৈতিক দলের নিতিনির্ধারকদের কাছেও তিনি ছিলেন উপেক্ষিত। এ সকল গ্রুপের যে কোন মহল স্বার্থ হাছিল করতে এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলে ধারনা
চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) আবুল বাসার জানান, নিখোঁজের এক দিন পর উদ্ধারের খবর পেয়েছি। তিনি সুস্থ্য হয়ে এলাকায় আসার পর কি কারণে নিখোঁজ হয়েছেন তা জানাযাবে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি অজ্ঞান পাটির খপ্পড়ে পড়েছেন। আমরা ঘটনাটির রহস্য উদঘাটনের জন্য খোঁজ খবর নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১১ ডিসেম্বর সকালে এক ওই ভাবে এক ওই দলের চরফ্যাশন পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ফ্যাশন এলাকা থেকে বাজারের উদ্দেশ্যে বের হয় পৌর যুবলীগ সাধারন সম্পাদক জামাল মোল্লা। এরপর দুপুরে সে আর বাড়ি ফিরে আসেনি তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। সেই ঘটনার ৯ মাস অতিবাহিত হলেও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ ব্যর্থ হওয়ায় বর্তমানে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব সিআইডিতে দেওয়া হয়েছে। এদিকে মামলার অগ্রগতি এবং স্বামীর কোনো সন্ধান না পেয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তার স্ত্রী ইয়াসমিন বেগম ও পরিবারের লোকজন। এদিকে চরফ্যাশন পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের জনপ্রিয় কাউন্সিলর, যুবলীগ নেতা আকতারুল আলম সামু নিখোঁজের সংবাদে জামাল মোল্লার মতো আশংকিত থাকলে সন্ধার পর তার উদ্ধারের সংবাদে সেই আশংকা মুক্ত হয়েছে উপজেলার রাজনৈতিক দলের সকল নেতা-কর্মিরা।