না.গঞ্জের সন্দেহভাজনদের ব্যাংক হিসাবে ‘অস্বাভাবিক’ লেনদেন
ঢাকা : নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজনদের ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিকতা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘অভিযুক্ত এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের যতগুলো ব্যাংক হিসাব চিহ্নিত করা গেছে সেগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করছে।
তদন্তে দেখা গেছে, কিছু হিসাবে নারায়ণগঞ্জের ঘটনার আগে ও পরে ছোট-বড় লেনদেন হয়েছে। তবে এই লেনদেনের সঙ্গে ঘটনার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না তা এখনো নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান জানান, শহীদ চেয়ারম্যানের দাবির পর সন্দেহভাজন এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের খোঁজ নিতে শুরু করেন তারা। ৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথম এই নিয়ে তদন্ত শুরু করে। কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকে এ নিয়ে পরিদর্শন চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘কোনো সুনির্দিষ্ট হিসাব সম্পর্কে এখনই কোনো মন্তব্য করবো না। এই ঘটনাটির সঙ্গে ব্যাংক লেনদেনের অভিযোগ ওঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। এখনো তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনে গণমাধ্যমকে আনুষ্ঠানিকভাবে সব জানানো হবে।’
তবে কোন কোন ব্যাংকে, কার কার কতগুলো হিসাব তদন্ত করা হয়েছে সে বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য দেননি।
তদন্ত দলের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘আমরা কয়েকটি অ্যাকাউন্ট দেখেছি, যেখানে এই ঘটনার আগে ও পরে যে ধরনের লেনদেন হয়েছে, গত ছয় মাসে তা হয়নি।’
লেনদেনে সন্দেহজনক কিছু মিলেছে কি না জানতে চাইলে মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘যেহেতু বিষয়টি এখনো প্রমাণিত না, সেহেতু লেনদেনগুলোকে আমরা এই মুহূর্তে সন্দেহজনক বা সন্দেহজনক নয়, কোনোটাই বলব না।’
উল্লেখ্য, নারয়াণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও তার চার সহযোগী এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালকসহ মোট সাতজনকে গত ২৭ এপ্রিল শহরের একটি এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়। এরপর ৩০ এপ্রিল তাদের লাশ ভেসে ওঠে শহর সংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীতে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের হত্যা করা হয়েছে।
নিহত নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, র্যাব ছয় কোটি টাকা নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আর এই অর্থ দিয়েছেন মামলার প্রধান আসামি আরেক কাউন্সিলর নূর হোসেন। এসব টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে।
ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে র্যাব-১১ এর সাবেক কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন এবং নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানাকে চাকরি থেকে অবসরে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে তারেক সাঈদ ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিরা হলেন- কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াসিন আলী, নূর হোসেনের কর্মচারী হাসমত আলী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম, যুবদল নেতা আনোয়ার ও বিএনপি সমর্থক ইকবাল হোসেন।