বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ চলাকালে যশোর শহরের মার্কাস মসজিদ ও উপশহর বিআরটিসি কাউন্টারের সামনের বাসে অগ্নিসংযোগ, হেলপার মুরাদ মোল্লাকে পুড়িয়ে হত্যা ও নাশকতার মামলায় স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামসহ বিএনপি ও জামায়াতের ৬৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় একজনের অব্যহতির আবেদন করা হয়েছে চার্জশিটে। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরির্শক (ওসি তদন্ত) শেখ গণি মিয়া।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, আসামিরা বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে পরিগণিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে। বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলাম ও জামায়াত নেতা অধ্যাপক আব্দুর রশিদের নির্দেশে আসামিরা মানুষ হত্যা ও সম্পদের ক্ষতিসাধনের লক্ষ্যে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি রাতে অন্যদিনের মতো সারাদিন বাসে হেলপারি করে মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার কানুটিয়া গ্রামের তোরাব মোল্লার ছেলে মুরাদ মোল্লা মার্কাস মসজিদের সামনে বাস পার্কিং করে ঘুমিয়ে পড়ে। গভীর রাতে অপরিচিত সন্ত্রাসীরা মুরাদের বাসসহ তিনটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে। আগুনে পুড়ে গুরুতর আহত হন মুরাদ। এ ব্যাপারে কোতয়ালি মডেল থানার এসআই শহিনুর রহমানা বাদী হয়ে নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করেন। মামলার তদন্তকালে ১০ জানুয়ারি সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুরাদ মারা যায়। মামলার তদন্ত শেষে আটক আসামিদের দেয়া তথ্য ও স্বাক্ষীদের বক্তব্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নেছার আহম্মেদ মুন্নার অব্যহতির আবেদন করা হয়েছে চার্জশিটে। অভিযুক্ত ৫৫ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- ঝিকরগাছা উপজেলার বোধখানা গ্রামের হাজী নূর মোহাম্মদের ছেলে শেহাব উদ্দিন, ফুলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে রুহুল আমিন, লাউজানী গ্রামের আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম, শহরতলীর শেখহাটি জামরুলতলা এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে খালিদ হোসেন, অভয়নগরের মাগুরা গ্রামের ইজ্জত আলীর ছেলে মুকুল হোসেন, সদর উপজেলার ঘুনি গ্রামের আতশীডাঙ্গা গ্রামের নওয়াব আলীর ছেলে ওয়াসিম গাজী, উপশহর এফ ব্লকের ১৬২ নম্বর বাড়ির মোস্তফা কামাল বাবুর ছেলে পাভেল, বাঘারপাড়া উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের নিকমল শিকদারের ছেলে মাঈনুল ইসলাম, বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুর রশিদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, নগর বিএনপির সভাপতি ও যশোর পৌরসভার মেয়র মারুফুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সহ-সভাপতি গোলাম রেজা দুলু, জেলা বিএনপির সদস্য ও তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা যুবদলের সভাপতি এহসানুল হক মুন্না, ছাত্রদল সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন বাবুল, যুবদলের বহিস্কৃত নেতা রিপন চৌধুরী, এনায়েতপুর গ্রামের রব মেম্বার, শহরের ঘোপ বেলতলা এলাকার লাবু, বেড়ে মারুফ, ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের হাবিবুল্লাহ, ঘোপের তরিকুল ইসলামের বাড়ির পেছনের ফারুক, ইসমাইল হোসেন, রিকশা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মনু মিয়া, ঘোপ সেন্ট্রা রোডের খচ্চর সেলিম, জেল রোডের ইব্রাহিম, মোটা সাঈদ, ঘোপ বৌ বাজার এলাকার সাপুড়ে আক্তার, জেল রোডের মিলন, ইউনুচ আলী, শান্ত, রুহুল আমিন, বারান্দীপাড়া রিফুজি কলোনীর আজিম, পূর্ব বারান্দী সরদারপাড়ার সাগর, সুমন, কিসমত নওয়াপাড়া এলাকার রাজু মেম্বার, কামরুল ইসলাম, নবাব মেম্বার, হাশিমপুর গ্রামের হোসেন, খাজুরা গ্রামের খোকন ড্রাইভার, বারান্দী মাঠপাড়া এলাকার ইয়ার আলী, ওসমার আলী, কাক্কু মিয়া, উপশহর এফ ব্লকের কবির হোসেন, আবু হানিফ এবং ভেকুটিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, শহরের মোল্যা পাড়ার নির্মল বিট, লোনঅফিস পাড়ার কৃষ্ণ সাহানী, সজিব নাথ, বিকে রোড বস্তা পট্টির ফজলে রাব্বী মোফাসা, বারান্দী মোল্যাপাড়ার ম্যাচের আলী কদর, শংকরপুরের রেজানুল ইসলাম, বকচরের শুভ চৌধুরী তোফা, বেজপাড়ার আশরাফুল ইসলাম, ঝুমঝুমপুর বালিয়াডাঙ্গার সেকেন্দার, ইস্কেন্দার, ধর্মতলা ম্যাচের প্রকৃতি রাজ, চুড়িপট্টির বিপুল সিদ্দিকী, মতিয়ার রহামন কোরবান, রাজাপুরের সবদুল হোসেন, পালবাড়ি শামছুর রহমানের বাড়ির ভাড়াটিয়া তরিকুল ইসলাম, শেখহাটির কবির হোসেন রয়েল, হামিদপুরের শফিকুল ইসলাম।