নাতানজের পরমাণু কেন্দ্রে নাশকতার অভিযোগে সোমবার ইসরাইলকে দায়ী করে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ প্রতিশোধের অঙ্গীকার করেন।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানকে পরমাণু অস্ত্র অর্জনের জন্য কোনো সুযোগ দেয়া হবে না এবং ইসরাইল কখনো ইরানকে তা বানাতে দিবে না। সোমবার ইসরাইল সফররত মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লোয়েড অস্টিনের সাথে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি।
তবে সংবাদ সম্মেলনে ইরানের নাতানজ পরমাণু কেন্দ্রে নাশকতার বিষয়ে দেশটির অভিযোগ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি নেতানিয়াহু।
এর আগে নাতানজের পরমাণু কেন্দ্রে নাশকতার অভিযোগে সোমবার ইসরাইলকে দায়ী করে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ প্রতিশোধের অঙ্গীকার করেন।
ইরানের কর্তৃপক্ষ এ দুর্ঘটনাকে ‘পরমাণু সন্ত্রাস’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলছে, তারা এ নাশকতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার অধিকার রাখে।
এদিকে ২০১৫ সালে বিশ্বশক্তির সাথে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি পুনরায় চালু করতে গত সপ্তাহে ভিয়েনায় আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা এই আলোচনাকে ‘গঠনমূলক’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ তার বক্তব্যে বলেন, ‘জায়নবাদীরা প্রতিহিংসার কারণে এ হামলা করেছে। নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবার ব্যাপারে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি দেখে তারা এসব করছে।……… তারা প্রকাশ্যে বলেছে যে তারা এটা হতে দিবে না। কিন্তু, আমরাও জায়নবাদীদের ওপর আমাদের প্রতিশোধ নিব।’
এদিকে সোমবার নাতানজের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধের জন্য দায়ী ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে দেশটির গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে জানায় ইরানি সংবাদমাধ্যম নুর নিউজ।
নুর নিউজের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘দায়ী ব্যক্তিকে শনাক্ত করা করা হয়েছে। এ ব্যক্তিকে গ্রেফতারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে যে নাতানজ পরমাণু কেন্দ্রের হলগুলোতে বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ করার জন্য দায়ী।’
২০১৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় ভিয়েনায় ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স ও জার্মানি পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করে। জয়েন্ট কম্প্রেহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন বা সংক্ষেপে জেসিপিওএ নামে পরিচিত এই চুক্তির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। এর বিনিময়ে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করতে সম্মত হয়।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেন। যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে ইরান চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে সীমিত পরমাণু কর্মসূচি জোরদার করে।
বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও তিনি জানিয়েছেন, ইরানকে আগে তার পরমাণু কর্মসূচি থেকে সরে আসতে হবে। অপরদিকে ইরান আগে দেশটির ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি করছে।