নদীতীরে স্থানান্তরযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

19/08/2020 11:35 pmViews: 7

একনেক সভায় সাত প্রকল্প অনুমোদন

নদীতীরে স্থানান্তরযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নদীতীরে স্থানান্তরযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

মঙ্গলবার একনেকের সভায় সাত প্রকল্পের অনুমোদন করেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি: ইত্তেফাক

উপকূলীয় নদী ড্রেজিং করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, চোখের সামনে বড় বড় ভবন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য সবজায়গায় সবকিছু তৈরি করা যাবে না। স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা—এগুলো নির্মাণের সময় সতর্ক থাকতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন।

শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মে-লনকক্ষে একনেক বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে গণভবন থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। সভা শেষে নিজ দপ্তর হতে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নদী খননের সঙ্গে সঙ্গে খালও পরিষ্কার রাখতে হবে। ড্রেজিং গভীর করে করতে বলেছেন, যাতে করে ভাঙন কম হয়। আমাদের বন্যার সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করে চলতে হবে। বন্যার পানি যাতে দ্রুত নেমে যেতে পারে সেজন্য উপকূলীয় অঞ্চলের নদীগুলো ড্রেজিং করার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। নদীভাঙন প্রবণ এলাকায় স্কুল, কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা এমন ভাবে নির্মাণ করতে হবে যাতে ভাঙন শুরু হলে এগুলো দ্রুত সরিয়ে নেওয়া যায়। মুন্সিগঞ্জে ঘড়বাড়িগুলো টিনের একতলা, দোতলা। নদীভাঙন শুরু হলে দ্রুত এগুলো স্থানান্তর করা যায়। প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের মডেল ডেভেলপ করতে বলেছেন। যাতে করে বড় বড় ভবন নদীগর্ভে চলে না যায়।

 

একনেক সভায় ৩ হাজার ৪৬১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয় সংবলিত সাতটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো নিয়ে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন নির্দেশনা ও অনুশাসনের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, দেশে আর ‘স্লুইসগেট’ না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কারণ এর বেশির ভাগ কাজ করছে না, সঠিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষণও হচ্ছে না। এজন্য এগুলো নির্মাণের আগে একটি সমীক্ষা করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

সভায় সড়ক বিভাগের প্রকল্পে ডাকবাংলো নির্মাণ না করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধামন্ত্রী। সভায় ৫২৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে খুলনা সড়ক জোনের আওতাধীন মহাসড়কে বিদ্যমান সরু ও ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন কংক্রিট সেতু/বেইলি সেতুর স্থলে কংক্রিট সেতু নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ২৪টি জরাজীর্ণ কংক্রিট সেতু ও ২৫টি বেইলি সেতুর স্থলে মোট ৪৯টি নতুন কংক্রিট সেতু নির্মাণ করার লক্ষ্য রয়েছে। এই কাজের তদারকি করার জন্য প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে পরিদর্শন বাংলো নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়।

এ বিষয়ে পরকল্পনামন্ত্রী জানান, এখন যাতায়াত ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পরিদর্শন শেষ করে ফেরা যায়। আগে সেই ব্রিটিশ আমলে যখন যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ ছিল, থাকার জায়গা ছিল না তখন এসব বাংলো নির্মাণ করা হতো। এ প্রকল্প হতে বাংলো নির্মাণ বাদ দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাছাড়া উন্নত সড়কে টোল আদায়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে। যাতে করে সড়কের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ এই টোলের টাকায় মেটানো যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

একনেক সভায় ৮৪৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বারৈয়ারহাট- হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পে ভারতীয় ঋণ (এলওসি) হতে ৫৮১ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ের লক্ষ্য রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে খাগড়াছড়ির রামগড় দিয়ে ভারতের সঙ্গে যোগযোগ সহজ হবে। সভায় জানানো হয়েছে, প্রকল্পটি আগামী দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ করাসহ প্রকল্প এলাকার জনগণের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে।

সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো :৫২৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘দাউদকান্দি-গোয়ালমারী-শ্রীরায়েরচর (কুমিল্লা)-মতলব উত্তর (ছেঙ্গারচর) মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, ৭১২ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন হতে পটুয়াখালী জেলাধীন বাউফল উপজেলার ধুলিয়া লঞ্চঘাট হতে বরিশাল জেলাধীন বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপাশা রক্ষা প্রকল্প, ৫৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প, ৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে গভীর সমুদ্রে টুনা ও সমজাতীয় পেলাজিক মাছ আহরণে পাইলট প্রকল্প এবং ২৬১ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে ইমার্জেন্সি মালটি সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স প্রকল্প (১ম সংশোধিত)। রোহিঙ্গাদের সহায়তায় নেওয়া প্রকল্পটিতে ৩ লাখ ডলার অনুদান বাড়িয়েছে বিশ্বব্যাংক।

Leave a Reply