‘ধুমপায়ীদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তিনগুণ’
‘ধুমপায়ীদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তিনগুণ’
ধূমপানের প্রতিক্রিয়া এতটাই ব্যাপক যে, এর ফলে শরীরের প্রায় সব অঙ্গেরই ক্ষতি হতে পারে। ডায়াবেটিস আছে এমন মানুষদের ক্ষেত্রে ধূমপানের প্রভাব আরও মারাত্মক। কেননা, ডায়াবেটিস আছে এমন ধুমপায়ীদের শরীরে ‘ব্লাড সুগার’ বা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে নিকোটিন। অন্যদিকে, ধূমপানের অভ্যাসের কারণেই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
মঙ্গলবার জিনিউজের এক প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বিভিন্ন গবেষণায় অধূমপায়ীদের তুলনায় ধুমপায়ীদের মধ্যে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় তিন গুণ বেশি বলে দেখা গেছে।
ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ বলে যথাযথভাবে চিকিৎসাধীন না থাকলে এ থেকে মারাত্মক সব শারীরিক জটিলতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ডায়াবেটিসের জটিলতা থেকে হৃদ্রোগ, কিডনির রোগ, স্নায়ুরোগ, চোখের রোগ এবং ফুট আলসারের মতো নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
ধূমপানের কারণে ডায়াবেটিসজনিত এই সব জটিলতা বেড়ে যেতে পারে। বিশেষত পরিপাকের ওপর ধূমপানের প্রভাব থেকে প্রদাহ বেড়ে যায় এবং রক্তনালিগুলো ভেতরের দিক থেকে আক্রান্ত হয়ে থাকে। ধূমপানের কারণে নিকোটিনের প্রভাবে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে ডায়াবেটিক ব্যক্তিদের জন্য রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে। এ কারণে ডায়াবেটিস আছে এমন ব্যক্তিরা ধুমপায়ী হলে তাঁদের হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। আর ধুমপায়ীদের মধ্যে কিডনি ও স্নায়ুর রোগের ঝুঁকি সব সময়ই বেশি।
অধূমপায়ী ডায়াবেটিকদের চেয়ে ধুমপায়ী ডায়াবেটিকদের মধ্যে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় তিনগুণ বেশি হতে পারে। ধূমপানের কারণে রক্তনালির ভেতরের দিকের আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে সেখানে বাড়তি মেদ জমা হয়ে রক্তনালি সরু হয়ে যেতে পারে। এমন হলে হৃদ্রোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবমতে ধূমপানের কারণে প্রতি বছর সারা বিশ্বে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ মারা যান। এদের মধ্যে প্রায় ৫০ লাখই মারা যান সরাসরি ধূমপানের কারণে। আর পরোক্ষ ধূমপানের কারণে অকালমৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ।