ধনী হওয়ার পথে ১০ অন্তরায়

04/07/2014 4:34 pmViews: 7

 

ধনী হওয়ার পথে ১০ অন্তরায়

ধনী হতে কে না চায় ? তবে দশটি কারণে আপনি কখনও ধনী হতে পারবেন না। জেনে নিন সেই কারণগুলো…

১। মাত্রাতিরিক্ত খরুচে স্বভাব

আপনার যদি সাধ্যের বাইরে বেহিসেবি খরচ করার বদভ্যাস থাকে তাহলে আপনার জেনে ভালো লাগবে যে, পৃথিবীতে আপনি একাই নন। একটি জরিপের তথ্য অনুযায়ী সারা বিশ্বে প্রায় ৫২ শতাংশ মানুষের মাত্রাতিরিক্ত খরচের বদভ্যাস আছে।

ইচ্ছে হলেই সঞ্চয় ভেঙ্গে বেহিসেবি খরচ করা বন্ধ করা উচিত। প্রতিমাসে আপনার উপার্জনের প্রতিটি কণা উড়িয়ে দেওয়া আর আপনার ধনী হওয়ার বাস্তবতার মাঝে বিস্তর ফারাক আছে। আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে আপনার সারা মাসের উপার্জন কোথায় খরচ হচ্ছে। কোথায় একটু সঞ্চয় করা যায় সে চেষ্টা করুন। হোক না অল্প, তাও চেষ্টা করুন।

আপনি অবশ্যই আপনার সারা মাসের খরচের জন্য একটি বাজেট বানাবেন। আপনার অবসর জীবন অথবা আপদকালীন বিপদের কথা ভেবে কিছু সঞ্চয় করার চেষ্টা করুন। আখেরে লাভ হবে।

২। পর্যাপ্ত সঞ্চয় না থাকা

অসঞ্চয়ীদের আড্ডায় স্বাগতম! সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গিয়েছে, মাত্র ৪ শতাংশ আমেরিকান মাস শেষে একটি ক্ষুদ্র সঞ্চয় করার চেষ্টা করার চেষ্টা করে।  আপনি যদি ভবিষ্যতে নিজেকে একজন সচ্ছল ব্যক্তি হিসেবে দেখতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই সঞ্চয়ের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।

সঞ্চয় তো করবেন, কিন্তু শুরুটা কিভাবে হতে পারে? আপনার পরিবারের যে কেউ যে কোন সময়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। তাঁদের কথা মনে রেখে আজই একটি ইমার্জেন্সি ফান্ড তৈরি করে ফেলুন। যখন আপনার ইমার্জেন্সি ফান্ড ভালো একটা আকার পাবে তখন এটা রেখে দিয়ে আপনার কলেজের টিউশন ফি অথবা আপনার পছন্দের কোন জিনিস কেনার জন্য আরেকটি ফান্ড করতে পারেন। এইভাবেই শুরু হোক সঞ্চয়ের পথে পথ চলা।

৩। অতিরিক্ত ঋণ

অতিরিক্ত ঋণের বোঝা আপনার ধনী হওয়ার পিছনে একটি বড় বাধা। কিছু কিছু ঋণ অর্থনৈতিক সাফল্যের পিছনে ভূমিকা রাখে, যেমন আপনি কোন রিয়েল এস্টেট অথবা নতুন কোন ব্যবসায় বিনিয়োগ করলেন –এটা আপনার জন্য লাভজনক হতেও পারে। কিন্তু আপনি চড়া সুদে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে আপনার পছন্দসই জিনিস কিনলেন আর অপরদিকে ব্যাংকে আপনার খাতায় লাল ফিগার বাড়তে লাগলো – এটা আপনার ধনী হওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায়।

৪। পরিকল্পনা শূন্য জীবন

কোন ধরণের সুনিশ্চিত পরিকল্পনা ছাড়া ধনী হওয়ার চিন্তা করা আর বামুন হয়ে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখা অনেকটা একইরকম। কথায় আছে, যারা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ তারা মূলত পরিকল্পনা করতেও ব্যর্থ।

কিভাবে খরচ করবেন বা সঞ্চয় করবেন পরিকল্পনা করুন। হয়তো প্রথমেই পেরে উঠবেন না। অভ্যস্ত হতে নিজেকে খানিকটা সময় দিন।

৫। ইমার্জেন্সি ফান্ড না থাকা

ইমার্জেন্সি ফান্ডের কথা আগেই বলেছিলাম। বিশেষজ্ঞরা বলেন, অনাগত বিপদের কথা ভেবে অবশ্যই আপনার উচিত অন্তত ৬ মাসের রোজগার জমিয়ে রাখা।

আমাদের জীবনটা একটা অনিশ্চয়তার খেলা। আপনার কাছে এমন কোন নিশ্চয়তা নেই যে, আপনার হাশিখুশি মুহূর্তগুলো কখন যে শোকে পরিণত হবে তা আপনি নিশ্চিতভাবে বলতে পারবেন।

৬। অভিযোগের ফিরিস্তি

মাসে অল্প কয়েকটা টাকা কামাই, খরচের বহর দিন দিন বাড়ছে, আমার জীবনে আর কি হবে, দেনা পরিশোধ করা এ জীবনে আর সম্ভব না – সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত আমরা এই অভিযোগগুলো করি। এটা ঠিক যে, পুরানো অভ্যাস দূর করা অনেক কঠিন।

তবে কোন কিছুই পরিবর্তন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি নিজে না পরিবর্তন করার চেষ্টা করছেন। অনুযোগ আর কারণ দর্শানো এই বেলা বাদ দিন। এর পরিবর্তে বাজে অভ্যাসগুলোর জন্য নিজেকেই দায়ি করুন এবং কিভাবে নিজেকে পরিবর্তন করা যায় তা নিয়ে চিন্তা করুন। লেগে থাকলে আপনি অবশ্যই পারবেন।

৭।  আগামিকালের চিন্তা পরে

উহু, এটা কোন মজার বিষয় নয়। আপনাকে অবশ্যই আপনার অবসরকালিন জীবনের কথা ভাবতে হবে। বাজারের নতুন আইফোন বা ট্যাব কেনার জন্য আপনি যে ধার করেন দয়া করে এই বদভ্যাসগুলো আপনার অবসর জীবনের দিকে তাকিয়ে এখনই বাদ দিন। হ্যাঁ, অবশ্যই আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী আপনার প্রয়োজনীয় জিনিশ কিনবেন, কিন্তু টিনএজারদের মত ফালতু আবেগে জড়াবেন না।
তো ঝেড়ে ফেলুন এখনই ‘কিনে ফেলব’এই মানসিকতা। একটু সঞ্চয় করুন।আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন, আপনিই হচ্ছেন আগামি দিনের ধনী!

৮। সব সোনার ডিম এক বাক্সে নয়

আপনার সমস্ত উপার্জন এক খাতে বিনিয়োগ করে হয়তো বা আপনি লাভবান হলেও হতে পারেন। যেমন আপনি আপনার সমস্ত সঞ্চয় শেয়ারের পিছনে বিনিয়োগ করলেন, কে জানে হয়তো বা ভাগ্য খুলেও যেতে পারে। কিন্তু জেনে রাখুন এটা কখনোই ধনী হওয়ার রাস্তা হতে পারে না।

আপনার সমস্ত উপার্জন এক জায়গায় বিনিয়োগ করা আপনাকে মাত্রাতিরিক্ত ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে। আপনি অল্প অল্প করে বিভিন্ন খাতে আপনার সারা জীবনের উপার্জন বিনিয়োগ করুন। খারাপ কিছু হলে অন্তত ভেসে থাকার জন্য খড়কুটো পাবেন!

৯। দেরিতে শুরু করা

সময় এগিয়েই যাবে। কিন্তু আপনি বসে থাকবেন কী না সেটাই দেখার বিষয়। আপনার ইনকাম কম হলে আজ থেকেই অল্প অল্প করে জমানো শুরু করুন। ঋণ থাকলে আজ থেকেই শোধ করার জন্য জমাতে থাকুন। যা করবেন, আজ থেকেই করুন।

১০। শুরু হোক আজ থেকেই

আপনিও হয়তো বা সাধারণ আর দশটা মানুষের মত। যারা বিশ্বাস করে, কেউ অথবা কোন কিছু আপনাকে আসন্ন বিপদ থেকে উদ্ধার করবে। এটা ঠিক, যে কোন সময় আপনার ভাগ্য খুলে যেতে পারে, হঠাত করে কর্পোরেট হাউজে একটা জব পেয়ে গেলেন, শেয়ারে চড়া লাভ হলো কিংবা উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পদ অথবা লটারিতে জিতে গেলেন লক্ষ লক্ষ টাকা – যাই হোক যে কোন সময় আপনার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যেতে পারে, কিন্তু একটা কথা জেনে রাখুন আপনি যদি সত্যি নিজেকে একজন সচ্ছল মানুষ হিসেবে দেখতে চান, আপনাকে হঠাত করে সম্পদ লাভের স্বপ্ন ঝেড়ে ফেলতে হবে। যা করতে হবে আজ থেকেই করতে হবে, এখন থেকেই করতে হবে।

এটা ঠিক আমাদের জীবন খুবই অনিশ্চিত। কেউ জানে না কী হবে আর কী হবে না। সবার জীবনেই ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে, তাহলে আজকের দিনের আপনি কেন ‘আপনার জীবনে কী উন্নতি সাধন করতে পারবেন’ সে ব্যাপারে নজর দিচ্ছেন না?

একটা ব্যাপার আপনার জেনে ভালো লাগবে যে, আপনি কিন্তু এখনই ধনী।এই কথাটা নিয়ে একটু চিন্তা করুন।আপনাকে কেউ যদি বলে আপনার একটা হাতের বিনিময়ে আপনাকে ১০ লক্ষ টাকা দিবে, আপনি কি আপনার হাত দিয়ে দিবেন? আপনার মাথায় কি এই চিন্তা আসবে যে, আমার তো দুইটি হাত আছে,একটি গেলে সমস্যা কি? উত্তর ‘না’।

শারীরিক সুস্থতা আর ধনী হওয়া দুটো এক জিনিশ নয়।আপনি যখন একটু সচ্ছলতার জন্য উদয়স্ত পরিশ্রম করেন তখন এই কথাগুলো নিয়ে চিন্তা করুন। আপনার দুটো হাত আছে। আপনি শারীরিক ভাবে সুস্থ।

সবশেষে একটাই কথা ‘don’t give up’ ।

Leave a Reply