দেশে মজুদ গ্যাসে চলবে ১৬ বছর : প্রতিমন্ত্রী
দেশে মজুদ গ্যাসে চলবে ১৬ বছর : প্রতিমন্ত্রী
২৮ জুন ২০১৫
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, দেশের প্রাথমিক উত্তোলনযোগ্য গ্যাস ছিল ২৭.১২ বিসিএফ। এ পর্যন্ত ( মে ২০১৫) ১২.৯৬ বিসিএফ গ্যাস উত্তোলিত হয়েছে। বর্তমানে দেশে ১৪.১৬ টিসিএফ মজুদ রয়েছে ( জুন ২০১৫)। চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এ পর্যন্ত ( মে) ৮১৫.৯৮ বিসিএফ গ্যাস উত্তোলন হয়েছে। গ্যাস উত্তোলনের এই হার অপরিবর্তিত থাকলে আরো প্রায় ১৬ বছর অর্থাৎ ২০৩১ সাল পর্যন্ত মজুদকৃত গ্যাস ব্যবহার করা যেতে পারে।
সংসদে আজ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের (মাদারীপুর-৩) এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এই তথ্য জানান। সকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভবিষ্যতে গ্যাসের চাহিদা আরো বৃদ্ধি পাবে। ফলে গ্যাসের মজুদ হ্রাস পেলে অপরিবর্তিত হারে উৎপাদন বজায় রাখা সম্ভব হবে না। সময়ে সময়ে গ্যাসের প্রেসার হ্রাসের কারণে বিদ্যমান ফিল্ডগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকবে। এমতাবস্থায় বর্ধিত ঘাটতিসহ ১৬ বছরের অধিক সময় স্বল্পহারে এই গ্যাস ব্যবহার সম্ভব হবে।
গৃহস্থালি জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহারকারী ১ কোটি ৭৮ লাখ
এনামুল হকের ( রাজশাহী-৪) এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে গৃহস্থালি জ্বালানি হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারকারী প্রায় ১ দশমিক ৭৮ কোটি, যা মোট জনগণের ১১ দশমিক ১ ভাগ। মন্ত্রী বলেন, গত কয়েক বছরে গ্যাসের উৎপাদন যথেষ্ট বৃদ্ধি পেলেও এখনো দেশের বিদ্যমান গ্রাহকচাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করা অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায় দেশের অবশিষ্ট সকল লোকদের প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। এক্ষেত্রে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার করতে হবে।
জ্বালানি তেলে সরকার ভর্তুকি দেয় না
মো: আয়েন উদ্দিনের (রাজশাহী-৩) এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, জ্বালানি তেল বিক্রয়ে সরকার বর্তমানে কোনো ভর্তুকি প্রদান করছে না।
বিদ্যুতের সুবিধাভোগী ৭৪ ভাগে উন্নীত
মমতাজ বেগমের (মানিকগঞ্জ-২) এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকর ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বর্তমানে বিদ্যুতের সুবিধাভোগী জনগণের সংখ্যা শতকরা ৭৪ ভাগে উন্নীত হয়েছে।
৩১ রেন্টাল কুইক রেন্টালের উৎপাদন ক্ষমতা ২১৩৭ মেগাওয়াট
সেলিম উদ্দিনের (সিলেট-৫) এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে এ পর্যন্ত ভাড়ায় নির্মিত ৩১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিদ্যমান। এ কেন্দ্রগুলোর মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২১৩৭ মেগাওয়াট।
মন্ত্রী বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বাস্তবায়নে আরো সময়ের প্রয়োজন বিধায় দেশের বিরাজমান বিদ্যুৎ চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে সরকার ভাড়ায়চালিত কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে। বিদ্যুতের চাহিদা ও উৎপাদনের মধ্যে ব্যবধান হ্রাস পেলে ভাড়ায় চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীলতা কমে আসবে।
বেগম ওয়াসিকা আয়েশা খানের এক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ জানান, বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমান ৭৬০০-৭৮০০ মেগাওয়াট।
১২ বছরে ৮১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র
বেগম পিনু খানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, গত ১২ বছরে বাংলাদেশে মোট ৮১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। উক্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৬৮৬৫ মেগাওয়াট।