জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, ‘দেশের সংবিধান পরিবর্তন করে জনগণের দাবি মেনে তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। গণতন্ত্রের অপরিহার্য উপাদান নির্বাচন। সেটা হতে হবে অবাধ ও সুষ্ঠু। সেটা করতে হলে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে করতে হবে। কিন্তু এরা দিনের ভোট রাতে করে। লজ্জা তো ঈমানের অঙ্গ। কিছুটা তো লজ্জা থাকা উচিত নেতাদের। সুতরাং বলবো, ২০১৪ ও ২০১৮ গেছে যাক। এবার ২০২৪ আর সেভাবে যাবে না। যদি আওয়ামী লীগ বোঝে তাহলে আসুন, আলোচনা করুন। এবারের নির্বাচন হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। সে দাবি আদায়ে যা করা দরকার আমরা সেই আন্দোলন করবো ইনশাআল্লাহ।’ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। মো. তাহের বলেন, ‘আজকে দেশের শাসক ও মানুষ সৎ হলে ডোনার দেশ হতাম। কিন্তু সেটা করতে পারিনি। আপনারা না পারলে আমাদেরকে সহযোগিতা করুন। তাহলেই দেশের পরিবর্তন হবে। সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।’

দীর্ঘ এক দশক পর রাজধানীতে ইনডোরে (ঘরোয়াভাবে) সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিরোধ, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ এবং ওলামায়ে কেরামের মুক্তি এবং কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত। নানা নাটকীয়তার পর শুক্রবার রাতে মৌখিক শর্তে সমাবেশের অনুমতি দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এরপর শনিবার দুপুর ২ টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কুরআন তিলাওয়াত ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশনের মাধ্যমে এই সমাবেশ শুরু হয়। ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাইরের খোলা জায়গায় এবং ফুটপাতে অসংখ্য নেতাকর্মী উপস্থিত আছেন। একপর্যায়ে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি মূল সড়কে গিয়ে ঠেকে। ফলে মৎস্যভবন ক্রসিং থেকে শাহবাগ অভিমুখী সড়কটিতে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নেতাকর্মীরা জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান সহ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন। বক্তব্যের পাশাপাশি বিভিন্ন ইসলামী সংগীত পরিবেশন ও কবিতা আবৃত্তি করা হয়। সমাবেশ ঘিরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের চারপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন ছিল।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী জেনারেল ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। এ সময় জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের বক্তব্য পড়ে শোনানো হয়। আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, প্রচার সম্পাদক এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্দুর রহমান মুসা, সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মাঈনুদ্দিন আহমেদ, দক্ষিণের নায়েবে আমীর ড. অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর আমীর আ. জব্বার, ঢাকা মহানগরীর উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিমুদ্দিন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন, কামাল হোসেন, ড. আবদুল মান্নান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্জুরুল ইসলামসহ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াত ও শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।