দেশের উন্নয়নে নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করুন
দেশের সার্বিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করতে নিজস্ব মেধা ও চিন্তার প্রয়োগ ঘটানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আমরা কখনো অন্যের মডেলের ওপর নির্ভর করবো না। গতকাল প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের গভর্ন্যান্স ইনোভেশন ইউনিটের (জিআইইউ) মহাপরিচালক মো. আবদুল লতিফ প্রমুখ। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ৪৮ জনকে প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ দেয়া হয়। বিশ্বব্যাপী শীর্ষ র?্যাঙ্কিংয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডির জন্য ১০ জন ও মাস্টার্সের জন্য ৩৮ জন এবার এই ফেলোশিপ পেয়েছেন।
এ সময় বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, জলবায়ু, প্রাকৃতিক পরিবেশ, দেশবাসীর মানসিকতা, প্রাকৃতিক সম্পদ ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য ফেলোদের প্রতি আহ্বান জানান সরকারপ্রধান। বলেন, দেশের উন্নয়নের পরিকল্পনা তৈরি করতে আপনাকে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জ্ঞানের সঙ্গে দেশের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করার জ্ঞানকে সমন্বয় করতে হবে, যা টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, সঠিক পরিকল্পনা যে দেশকে সার্বিক উন্নয়নের দিকে নিয়ে যেতে পারে, তা গত সাড়ে ১৪ বছরে আমরা প্রমাণ করেছি।
উন্নয়নের এ অদম্য গতি কেউ থামাতে পারবে না। শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের অর্থে বিদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে দেশে ফিরে জনগণ ও দেশের কল্যাণে কী অবদান রাখছেন, তা সব সময় ভেবে দেখতে হবে। বিদেশি উচ্চশিক্ষা থেকে অর্জিত জ্ঞান ব্যবহার করে আপনারা দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য কী করছেন, তা মনে রাখবেন। আমি আমাদের ছেলেমেয়েদের বলতে চাই যে, তোমরা প্রতিভা বিকাশের জন্য প্রযুক্তির দ্বারা তৈরি সুযোগকে কাজে লাগাও।
এটি আমাদের লক্ষ্য এবং আমরা লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম গড়ে তুলতে চাই। আমরা পিছিয়ে পড়তে চাই না। সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। কারণ, শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতির উন্নতি সম্ভব নয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শিক্ষা খাতে ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শিক্ষার সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, উচ্চশিক্ষার জন্য ফেলোশিপ প্রদানসহ সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
একই সঙ্গে সরকার মেরিটাইম, অ্যারোস্পেস, এভিয়েশন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মতো বিভিন্ন ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে শিক্ষাকে বহুমাত্রিক করেছে। গবেষণা ও বিজ্ঞানকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। উচ্চশিক্ষার্থীদের গবেষণায় গুরুত্ব দিতে হবে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে গবেষণা খুবই কম। তাই চিকিৎসাবিজ্ঞানে আমাদের আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো আমরা। আজকের তরুণেরাই হবে স্মার্ট দেশ গড়ার সৈনিক। তাই আমাদের দেশকে জানতে হবে, বুঝতে হবে এবং অনুভব করতে হবে যেখান থেকে আপনি জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। দেশের উন্নয়নের পরিকল্পনা তৈরি করতে আপনাকে বিদেশে উচ্চ শিক্ষার জ্ঞানের সঙ্গে দেশের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করার জ্ঞানকে সমন্বয় করতে হবে যা টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।