দেশের অবস্থা মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে
সোমবার দুপুরে খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে খুলনা জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ অবস্থা থেকে মুক্ত হতে জাতীয় পার্টিকে ক্ষতায় আনতে হবে বলেও মন্তব্য করেন এরশাদ।
তিনি বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র প্রাণহীন। দলীয়করণ, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসে দেশে সুশাসন নেই। সুশাসনের অভাবে দেশের মানুষ আজ জর্জরিত।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, গণতন্ত্রে প্রাণ শক্তি ফিরিয়ে আনতে, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এবং দলীয়করণ, দখলবাজি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাস মুক্ত দেশ গড়তে হলে জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করতে হবে। তাই আজ এ বয়সে দলকে শক্তিশালী করতে রাস্তায় নেমেছি।
তিনি বলেন, এখন মানুষ প্রতিবাদ করতে পারে না। সংবাদমাধ্যম লিখতে পারে না। টেলিভিশনের টকশোতে মানুষ কথা বলতে পারে না। মানুষ ভোটও দিতে পারছে না। এমন অবস্থায় এসে আমরা দাঁড়িয়েছি। আজ গণতন্ত্র কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে? সরকার যদি শক্ত হতো তাহলে দেশে সুশাসন কিছুটা ফিরে আসতো।
এরশাদ বলেন, দেশ থেকে আজ হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। বেসিক ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক ও শেয়ারবাজারের হাজার কোটি টাকা লুট করে নেয়া হয়েছে। এই টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এই পাচার হওয়া টাকার একটি টাকা সরকার ফিরিয়ে আনতে পারেনি।
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনার জানেন, এই লুটপাট ও পাচারের সঙ্গে কারা জড়িত রয়েছে। এ ব্যাপারে দেশের পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। অথচ আমার নামে অপপ্রচার করা হয়েছিল যে, আমি হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছি। তার কোনো প্রমাণ আজও কেউ দিতে পারেনি।
সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতীয় পার্টির আমলে দেশের মানুষ নিরাপদে ছিল। কিন্তু বর্তমানে দেশের কী অবস্থা দাঁড়িয়েছে তা আজ মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে মুক্ত হতে জাতীয় পার্টিকে ক্ষতায় আনতে হবে।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি শিয়ালের গর্তে চলে গেছে। মাঝে মাঝে গর্ত থেকে উঁকি দেয়ার মতো বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। এ দলের আর দাঁড়ানোর মতো শক্তি নেই।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সুনীল শুভ রায়ের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলু এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান ও তাজ রহমান, পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, খুলনা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু, সাবেক এমপি মোক্তার হোসেন, হাদিউজ্জামান, মোল্লা মুজিবুর রহমান প্রমূখ।
এর আগে জেলার নয়টি উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
সম্মেলনে পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ খুলনা জেলা কমিটির শুধু সভাপতি হিসেবে বর্তমান সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধুর নাম ঘোষণা করেন। সাধারণ সম্পাদকের ব্যাপারে তিনি কাউন্সিলরদের ওপর দায়িত্ব অর্পণ করেন।