দেশজুড়ে পলিটেকনিকে তা-ব, সংঘর্ষ ভাংচুর আগুন গুলি

29/09/2013 5:55 pmViews: 17
০ বিতর্কিত গেজেট বাতিল দাবি
০ কুমিল্লায় পুলিশ ফাঁড়ি, ইউএনওর গাড়ি ও তহসিল অফিস জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে

indexZZZপ্রথম বাংলা রিপোর্ট ॥ ২০০৮ সালের বিতর্কিত গেজেট বাতিল ও সুযোগসুবিধা বৃদ্ধির দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো রাজধানীসহ দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও রাস্তা অবরোধ করে হামলা চালিয়েছে কারিগরি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীরা। পূর্বঘোষণা অনুসারে দাবি বাস্তবায়নে রবিবার একই কর্মসূচী পালন করা হয়েছে সকল (৪৯) সরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। রাস্তা অবরোধ ছাড়াও পুুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, ব্যাপক ভাংচুরসহ রীতিমতো তান্ডব চালানো হয়েছে ঢাকা, কুমিল্লা, পটুয়াখালী, রংপুর, যশোর, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়। কুমিল্লা পলিটেকনিককে ঘিরে চলেছে তা-ব। যেখানে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে জামায়াত-শিবির ঢৃুকে পড়ার পর পুলিশ ফাঁড়ি, ইউএনও’র গাড়ি, তহশিল অফিসে আগুন দেয়া হয়েছে। ঘটনায় আহত হয়েছেন ২০ পুলিশসহ শতাধিক ব্যাক্তি। শিক্ষার্থীদের গুলিতে আহত হয়েছেন এক পুলিশ কনস্টেবল। পটুয়াখালীতে সংঘর্ষে সাংবাদিক-পুলিশসহ আহত হয়েছেন শতাধিক। আন্দোলনে কারিগরি বোর্ডের অধীন ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। দাবি পূরণে ঢাকায় দিনভর অবরোধ, ভাংচুর শেষে আজ সকল পলিটেকনিকে প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দেয়া হয়েছে আগামীকাল সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচীর হুমকিও।
এদিকে গেজেট সংশোধনসহ সঙ্কট নিরসনে আজ রাজউক চেয়ারম্যান, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সভাপতি, সেক্রেটারিসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে জরুরী বৈঠক ডেকেছেন পূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব। বেলা দুইটায় পূর্ত মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে একই বিষয় নিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ও বোর্ডের চেয়ারম্যানকে নিয়ে বৈঠক করেছেন শিক্ষা সচিব। যেখানে দ্রুত সংকট নিরসনে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। জানা গেছে, ২০০৮ সালের একটি প্রজ্ঞাপন বাতিল, ডিপ্লোমা কর্মকর্তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির দাবিতে শুক্রবার থেকে দেশব্যাপী চলা কর্মসূচির অংশ হিসেবেই রবিবার বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনে নামে কারিগরি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীরা। তারা বলেন, ২০০৮ সালের বিতর্কিত প্রজ্ঞাপনে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। এমনকি ডিপ্লোমাধারীরা প্রকৌশলী নয় বলে বলা হয়েছে। এটা বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে পোশাগত সমস্যার সমাধান করতে হবে। ২০০৮ সালের পূর্ত মন্ত্রনালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে ইঞ্জিনিয়ারের সংজ্ঞায় কেবল গ্রাজুয়েট প্রকৌশলীদের ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বলা হয়েছে সুপারভাইজার। যেখানে ইঞ্জিনিয়ারের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, কেবল গ্রাজুয়েট প্রকৌশলীরাই ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে স্বীকৃতি পাবে। আর ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা হবে সুপারভাইজার। ফলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইঞ্জিনিয়ারিং সার্টিফিকেট প্রাপ্ত এবং দেশের ইঞ্জিনিয়ারিং কর্মকান্ডের প্রায় ৮০/৯০ ভাগ কাজ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। ২০১২ সালে সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে গঠিত সরকারি উচ্চ পর্যায়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশে ২০০৮ সালের গেজেটে ইঞ্জিনিয়ারের সংজ্ঞায় পুননির্ধারণ ও বিতর্কিত অংশটি বাদ দিয়ে সংশোধনের সুপারিশ করা হয়। সরকারের আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একাধিক পত্রের মাধ্যমে তাগিদ দেয়া হলেও প্রশাসনের কতিপয় কারিগরি আমলার অব্যাহত ষড়যন্ত্র ও বাধার মুখে বিতর্কিত গেজেট সংশোধনের কার্যকর কোন পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ফলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীরা নেমেছে রাস্তায়। অভিযোগ পাওয়া গেছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একাধিক তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও অদৃশ্য শক্তির কারসাজি ও ষড়যন্ত্রে আজর পর্যন্ত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের পেশাগত সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস ও আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে কার্যকর কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছেনা।
রবিবার দুই দফা দাবিতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ দুটি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট শিক্ষার্থীরা। তেজগাঁও সাতরাস্তার মোড়ে তাদের অবরোধের কারণে মগবাজার থেকে মহাখালীমুখী শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সড়কে সকাল ১০টা থেকে দুই ঘণ্টা এবং ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়কের পূর্ব অংশে অবরোধের কারণে মিরপুর রোডে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকে। এ সময় বেশ কিছু যানবাহনও ভাংচুর করে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ-ভাংচুরের মধ্যে পড়ে আতঙ্কিত হয়ে ছুটোছুটি করতে দেখা যায় পথচারীদের। সাতরাস্তা এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে বাঁশের লাঠি হাতে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় ছাত্রদের। পরে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে বেলা ১২টার দিকে মগবাজার-মহাখালী সড়কে যান চলাচল শুরু হয়। আর মোহাম্মদপুর এলাকার বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডি ২৭ নম্বর মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে মিরপুর রোডেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এক পর্যায়ে ছাত্ররা যানবাহন ভাংচুর শুরু করলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তবে রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণ অংশের মধ্যে যোগযোগ রক্ষাকারী দুটি প্রধান সড়ক দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় আশেপাশের এলাকাগুলোতে সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজট। ফলে গাড়ি চালকদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এছাড়া রাজধানীর ধানমন্ডি-২৭ রাপা প্লাজার সামনে বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে সড়ক অবরোধ করতে গেলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এসময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অসংখ্য প্রাইভেটকার ভাঙচুর করে তারা। এসময় পুলিশ বাধা দিলে শিক্ষার্থীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। ধানমন্ডি থানা উপ পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীরা গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করায় পুলিশ লাঠিচার্জ করে।
কুমিল্লা থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানিয়েছেন, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, গুলিবিনিময় ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর-এ-সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার, ওসি ও ২০ পুলিশসহ শতাধিক আহত হয়েছে। এসময় কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি, স্থানীয় তহশিল অফিস ও সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পাজেরো গাড়িসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও পুলিশের ২টি শটগান ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পরিস্থি’তি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের সঙ্গে র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এসময় পুলিশ কয়েকশ’ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় কোটবাড়ি এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাস ও তৎসংলগ্ন কুমিল্লা-কোটবাড়ি সড়কে এ ঘটনা ঘটে। দুপুর থেকে শিক্ষার্থীরা কুমিল্লা-কোটবাড়ি সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনসহ সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে যানবাহনে ভাংচুর শুরু করে। একপর্যায়ে ছাত্ররা ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমন চালিয়ে পুলিশ সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থ’লে ছুটে যায় অতিরিক্ত পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি। এসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কমপক্ষে ৪/৫ হাজার বহিরাগত যোগ দিয়ে পুলিশের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েকশ’ রাউন্ড রাবার বুলেটের গুলি বর্ষন করে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা জাহানকে তহশিল অফিসে অবরুদ্ধ করে রেখে তার সরকারি পাজেরো জিপ গাড়ি ভাংচুর করে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এছাড়া একই সময়ে কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি ও স্থানীয় তহশিল অফিসে ভাংচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং কোটবাড়ি সড়কে একটি মোটর সাইকেল আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। পুলিশের নিকট থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয় ২টি শটগান। বিকালে ছিনতাই হওয়া ২টি শটগান উদ্ধার করা হয়। সংঘর্ষ চলাকালে কোটবাড়ি এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এবং আতংক ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। সংঘর্ষ, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, গুলি বিনিময়ের ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী আশ্রাফ, সহকারী পুলিশ সুপার (সদর-এ-সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম, সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি গাজী শাখাওয়াত হোসেন, এসআই হুমায়ুন, এসআই ফারুক, কনস্টেবল অমিত হাসান, উজ্জল মুন্সী, সিদ্দিক, ইকবাল হোসেন, জহির, সাঈদ, রায়হানসহ ২০ পুলিশ আহত হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষার্থী ও পথচারীসহ আরো অন্তত ৮০ জন আহত হয়েছে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ পুলিশ কনস্টেবল রায়হানকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সদর দক্ষিণ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু জানান, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে লালমাই পাহাড়সহ বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানের শিবির কর্মীরা এ তান্ডবে যোগ দেয়। এছাড়াও পলিটেকনিক্যালের অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামানের ইন্ধনে শিক্ষার্থীরা এ তান্ডব ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হয় বলেও তিনি দাবি করেন।’ তবে এ ধরণের অভিযোগ অস্বীকার করেন অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামান। জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, দাবি আদায়ের নামে এ ধরণের ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত থেকে রাষ্ট্রের সম্পদ নষ্টসহ পুলিশের উপর যারা হামলা চালিয়েছে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পটুয়াখালী থেকে নিজস্ব সংবাদাদাতা জানান, আন্দোলনরত পটুয়াখালী পলিটেনিকের শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সকাল ১০ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা সহিংসতায় পুলিশ সাংবাদিকসহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। পুলিশ শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে পটুয়াখালী পলিটেকনিক ক্যাম্পাসসহ ও এর আশ পাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। পুলিশের অভিযানে ছাত্ররা বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে যানবাহনে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এদিকে একই দাবিতে কুয়াকাটা বরিশাল মহাসড়কের কলাপাড়া এলাকা মহসড়ক অবরোধ করে রেখেছে শিক্ষার্থীরা। পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালীয়ে ২৬ জন শিক্ষার্থীকে আটক করেছে। সংঘর্ষে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ডেইলীস্টারের সাংবাদিক মো. সোহরাব হোসেন, কালেরকন্ঠের জেলা প্রতিনিধি এমরান হাসান সোহলে, ১০ পুলিশসহ শতাধীক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
রংপুরে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীদেও সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শহরের গ্রান্ড হোটেল সংলগ্ন সড়েেক এ সংঘর্ষ হয়। এতে পথচারী-শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৫০জন আহত হয়েেেছন। ১০ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। চট্টগ্রামে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকায় বেলা ১১টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হলে প্রায় দুই ঘন্টার জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রী সাধারণকে। বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ঐ এলাকায় ১০/১২টি গাড়ি ভাংচুর করে। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে ও সড়কে এ কর্মসূচি পালিত হয়। বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয় ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকার সড়কে। নগরীর বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেও ছাত্রছাত্রীরা এ কর্মসূচীতে যোগ দেয়। ফলে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এ এলাকার সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে যায়। এতে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ যানজট। পুলিশ প্রথমে তাদেরকে বুঝিয়ে সরাবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে ধাওয়া দিলে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়, তারা প্রথমে শিক্ষার্থীদের বোঝাবার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আন্দোলনকারীরা অনড় থাকলে শেষ পর্যন্ত পুলিশকে মৃদু এ্যাকশনে যেতে হয়। সড়ক মুক্ত করতে ধাওয়ার পাশাপাশি লাঠিচার্জ করতে হয় শিক্ষার্থীদের উপর। তবে এতে কোন গুরুতর আহতের ঘটনা ঘটেনি। বেলা ১টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। যশোরে পলিটেকনিক শিক্ষার্থী ও প্রমিকদের সংঘর্ষ চলাকালে দুর্ব্ত্তৃদের হামলার শিকার হয়েছেন দৈনিক গ্রামের কাগজের ফটো সাংবাদিক এমএ মানিক। দুর্বৃত্তরা তাকে মারপিটের পর তার ক্যামেরা ভাঙচুর করে ছিনিয়ে নেয়। সকাল ১১টার দিকে যশোর শহরের খাজুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ হামলার প্রতিবাদে দুপুর দেড়টায় যশোরে কর্মরত সাংবাদিকরা বিক্ষোভ মিছিল, পথসভা করেছেন। প্রেসসক্লাবের সামনে থেকে একটি মিছিল শুরু হয়ে দড়াটানায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন সভাপতি মিজানুর রহমান তোতা, সম্পাদক আহসান কবীর প্রমুখ। শরীয়তপুরে পূর্ব নির্ধারিত সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করেছে করেছে শরীয়তপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। পাবনায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে তালা ঝুলিয়ে সেমিস্টার পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। ভোলার বোরহানউদ্দিনে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন করে ভোলা-চরফ্যাশন সড়ক অবরোধ করে রাখে। এসময় তারা কলেজ গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন করে ভোলা-চরফ্যাশন সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ ঘটনার দুই ঘণ্টা পর দুপুর ১২টার দিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে তারা অবরোধ তুলে নেয়। কুড়িগ্রামে শিক্ষার্থীরা রোববার নির্ধারিত পরীক্ষা বর্জন করে সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। শিক্ষার্থীরা হাতে হাত রেখে প্রায় এক কিলোমিটারব্যাপী রাস্তায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। এর ফলে ওই সড়কে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং সড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীসহ জনসাধারণ। কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউ শিক্ষার্থীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আবদুুর রহমানকে দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ করে রাখে। দুই দফা দাবীতে অচল হয়ে পড়েছে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে অবস্থান নেয় বিপুল সংখ্যক র‌্যাব ও পুলিশ। পরিস্থি’তি সামাল দিতে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আবদুুর রহমান পলিটেকনিক ইনস্টিটিউ কলেজ ক্যাম্পাসে গেলে আন্দোলনকারীরা কলেজের প্রশাসনিক ভবনের মূল দরজা তালা দিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে তিনি আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে আধা ঘন্টা সময় নেন। এর পরও কোন সুরাহা না হওয়ায় আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাস বর্জনসহ অবস্থান কর্মসুচীর ঘোষণা দেয়। পরে পুলিশ ও র‌্যাব গিয়ে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে ইউএনওকে উদ্ধার করে। সাতক্ষীরায় দাবি আদাযের জন্য সড়কে গাছের গুড়ি , বিদ্যুতের খুটি ও ইট ফেলে সাতক্ষীরায় সড়ক অবরোধ কর্মসূচী পালন করার পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় পলিটেকনিকের ছাত্রদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশের এস আই শাহজান, পলিটেকনিক ছাত্র আব্দুর রউফ , রিয়াজ, নাহিদ, পিন্টুসহ ১০ ছাত্র আহত হয়। সাতক্ষীরা-যশোর সড়কের পলিটেকনিক মোড়ে বেলা ১১ টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে। বিক্ষোভ চলাকালে রাস্তার দু ধারে গাড়ী চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। বিক্ষোভ কাররীরা এ সময় কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। পুলিশ পরিম্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে । এদিকে কলেজের অধ্যক্ষ আজিজুল ইসলামকে তারা তালা মেরে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। কিশোরগঞ্জে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী স্থায়ী এ সংঘর্ষে করিমগঞ্জ থানার ওসিসহ ১২ পুলিশ ও ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আহতদের অনেকেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শেরপুরে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভাংচুর ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় পলিটেকনিক্যাল ইনিস্টিটিউটের ২৯ শিক্ষার্থীসহ অজ্ঞাতনামা অনেকের বিরুদ্ধে পুলিশের কর্তব্যকাজে কাজে বাধা ও অ্যাসল্টের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে সদর থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে ওই মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলায় আটক ২৬ শিক্ষার্থীকে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বন্দে আলী গ্রেফতার দেখিয়ে রবিবার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করেন। পরে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ সেলিম মিয়া তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষার্থীরা রবিবার বিক্ষোভ প্রদর্শন ও ৪ উপজেলার সংযোগ সড়ক অবরোধসহ গাড়ি ভাংচুর করেছে। প্রতিবাদে মটর পরিবহন শ্রমিকেরা। বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা একটি যাত্রীবাহি বাসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। এতে বাসের স্টাফসহ কমপক্ষে ১৫ জন যাত্রী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ৫জনকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মুন্সীগঞ্জ পলিট্যাকনিক ইনস্টিটিউটশন চত্বরে অগ্নি সংযোগ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র-শিক্ষক সংগ্রাম পরিষদ। এ সময় তারা অধ্যক্ষের কার্যালয় ঘেরাও করে রাখে। নানা সেøাাগান দেয় শিক্ষার্থীরা।

Leave a Reply