দুই নেত্রীর খেয়ালে কাটছে না সংকট
 ঢাকা: প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের দুই শীর্ষ নেত্রীর চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করার ইস্যুতে কয়েক দফা সম্ভাবনা জাগলেও শেষ পর্যন্ত সংলাপে বসা হয় নি তাদের। খুঁজে পাওয়া যায়নি চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে উত্তরণের গ্রহণযোগ্য সমাধান।
ঢাকা: প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের দুই শীর্ষ নেত্রীর চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করার ইস্যুতে কয়েক দফা সম্ভাবনা জাগলেও শেষ পর্যন্ত সংলাপে বসা হয় নি তাদের। খুঁজে পাওয়া যায়নি চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে উত্তরণের গ্রহণযোগ্য সমাধান।
দুই শীর্ষ নেত্রীর বক্তৃতা-বিবৃতি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক পদক্ষেপ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কখনো সখনো তারা সঙ্কট নিরসনে সংলাপে বসার লোক দেখানো আগ্রহ দেখিয়েছেন বটে। কিন্তু যখনই সংলাপের সম্ভাবনা জেগেছে তখনই কোনো না কোন ছুতোয় পিঠ টান দিয়ে আলোচনা ঘুরিয়ে দিয়েছেন তাদের কেউ না কেউ।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি যখনই সংলাপ নিয়ে আলোচনায় বসার ব্যাপারে ইতিবাচক কথা বলেছেন, তখনই হয়তো বেঁকে বসেছেন বিরোধী দলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
আর বিরোধী দলীয় নেতা আগ্রহী দেখিয়েছেন তো খোদ প্রধানমন্ত্রীই হয়ে উঠেছেন অনাগ্রহী। আবার শেখ হাসিনা ইতিবাচক বক্তব্য দিলে কড়া সমালোচনায় পরিষ্কার জল ঘোলা করে দিয়েছেন খালেদা জিয়া।
মে মাসের গোড়াতে প্রধানমন্ত্রী যখন গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, তখন খালেদার কণ্ঠে বেজেছে উল্টো সুর। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকারকে পদত্যাগের আলটিমেটাম দিয়ে সঙ্কট সমাধানের ইচ্ছাকে নিজেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন তিনি।
এরপর আড়াই মাস পার করে সেই খালেদা জিয়াই সংলাপের ব্যাপারে নরম সুরে কথা বলতে শুরু করেছেন।
রমজান শুরুর পর থেকে অংশ নেওয়া প্রায় প্রতিটি ইফতার মাহফিলেই এখন তত্ত্বাবধায়ক পুনর্বহাল ইস্যু নিয়ে সংলাপে বসার আগ্রহ প্রকাশ করছেন তিনি।
যদিও সদ্য শেষ হওয়া বাজেট অধিবেশনে তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে কোনো প্রস্তাব দেন নি বিরোধী দলীয় নেতা।
গত ৩ জুন শুরু হওয়া মহাজোট সরকারের সর্বশেষ এই বাজেট অধিবেশনে উত্থাপনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক পুনর্বহাল বিষয়ক একটি মুলতবি প্রস্তাব জমা দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে অধিবেশন শুরুর মাত্র কয়েক মিনিট আগে তা প্রত্যাহার করে নেয় বিএনপি।
এরপর কয়েক দফা ওয়াকআউট করেও অধিবেশনে থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি পুনর্বহাল নিয়ে বিরোধী দল শুধু গরম গরম বক্তৃতাই দিয়েছে। কোনো ফরমাল প্রস্তাবই তোলে নি। এ পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে সংসদে আলোচনা না হওয়ার দায় বিরোধী দলের ওপরই চাপিয়েছে সরকার পক্ষ।
কাজেই দেখা যাচ্ছে, একই ইস্যুতে যখন নরম হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, তখন বিরোধী দলীয় নেত্রী কঠোর হচ্ছেন। আর যখন বিরোধী দলীয় নেত্রী নরম হচ্ছেন, তখন কঠোর অবস্থানে চলে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
তাই যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল নিয়ে সংলাপ আর হচ্ছে না। চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট থেকেও মুক্তি মিলছে না দেশবাসীর।
 
 
















