দায়িত্ব নিলেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির
দায়িত্ব নিলেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির
টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার মধ্যেই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব নিলেন নতুন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। তাই দায়িত্ব নিয়েই চট্টগ্রামকে পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা ও জলাবদ্ধতা নিরসনকে অগ্রাধিকার দেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল দুপুর ১২টায় ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোহাম্মদ হোসেনের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এ দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এ উপলক্ষে সিটি করপোরেশনের কে বি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নগর ভবন সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে নগর ভবনে আসেন নবনির্বাচিত মেয়র। এরপর নগর ভবনের কেবি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে খতমে বোখারি শরিফ ও মিলাদ মাহফিল শেষে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন মেয়র। এরপর বেলা ১২টায় ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোহাম্মদ হোসেনের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এ দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
দায়িত্ব গ্রহণের পর সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আ জ ম নাছির বলেন, বিগত তিন মাসে তিনি সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমের উপর হোম ওয়ার্ক সম্পন্ন করে চট্টগ্রামকে একটি বাসযোগ্য বিশ্বমানের শহর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছেন। চট্টগ্রামকে পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা ও জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করব। এছাড়া, দায়িত্ব গ্রহণের শুরুতে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবেন বলেও জানালেন তিনি।
এসময় তিনি আরও বলেন, প্রায় দুইশ’ কোটি টাকা দায়দেনা মাথায় নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি, যেদিন এই দায়িত্ব শেষ হবে সেদিনও একই ভাবে করপোরেশনের অবস্থা সবাইকে জানিয়ে যাবো। আমি এমন পরিকল্পনা গ্রহণ করবো যা বাস্তবায়ন করা যায়, অবাস্তব কোন পরিকল্পনা আমি গ্রহণ করবো না।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র দাবি করেন, তার গৃহীত পদক্ষেপের ফলে চলতি বর্ষা মওসুমে নগরবাসীর জলাবদ্ধতার ভোগান্তি অনেক কম হচ্ছে, পর্যায়ক্রমে এই ভোগান্তি দূর করার লক্ষ্যে কাজ করছেন তিনি। এছাড়া, প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে করপোরেশনে নাগরিক সেবাকে আরও গতিশীল করার উদ্যোগও তিনি গ্রহণ করবেন। এছাড়াও শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলেও মেয়র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বর্তমান পরিস্থিতি ও যাবতীয় পরিসংখ্যান তুলে ধরে একটি প্রামাণ্য চিত্র উপস্থাপন করা হয়।
এসময় প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ইছহাক মিয়া, চসিক সচিব রশিদ আহমদ, প্রধান নির্বাহী কাজী মোহাম্মদ শফিউল আলম, মেয়রের একান্ত সচিব মনজুরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৮শে এপ্রিল মেয়রের পাশাপাশি ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কমিশন থেকে গত ৩০শে এপ্রিল সিটি মেয়রের গেজেট প্রকাশিত হয়। এরপর ৬ই মে সিটি মেয়র এবং কাউন্সিলররা শপথ নেন। কিন্তু পূর্বের করপোরেশনের মেয়াদ শেষ না হওয়ায় তারা এতদিন দায়িত্ব নিতে পারেননি। সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য পদত্যাগ করলে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে গত তিন মাস দায়িত্ব পালন করেন প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ হোসেন। যদিও নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর গত তিন মাস ধরে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলেও জলাবদ্ধতা নিরসন, ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার এবং বিলবোর্ড উচ্ছেদ নিয়ে করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক এবং প্রয়োজনীয় মৌখিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন।