দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন- ভোলা -৪ : বি.এন.পি অভ্যন্তরীন কোন্দলে আ’লীগ মাঠ গোছাতে ব্যাস্ত
ছালাহউদ্দিন,মনপুরা : আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মাঠ গোছাতে ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তৃনমুল ত্যাগী নেতাকর্মীদের কাছে টানতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। ঈদে ব্যানার পোষ্টার দিয়ে ঈদ শুভেচ্ছা জানাতে ভুল করেননি আ’লীগ ও বি.এন পির বর্তমান ও সাবেক সংসদ সদস্যরা। নির্বাচন সর্বদলীয় সরকারের অধীনে বা অন্তবর্তী সরকারের অধীনে হবে না কি ততা¡বধায়ক সরকারের অধীনে হবে এ নিয়ে মত বিরোধ থাকলেও দুদলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দলীয় হাই কমান্ডের দিকে তাকিয়ে আছেন। এদিকে আ’লীগের অভ্যন্তরীন কোন্দল না থাকায় বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুল্যাহ আল ইসলাম জ্যাকবের মনোনয়ন নিশ্চিত বলে দাবী করছেন চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলা আ’লীগ নের্তৃবৃন্দ। মনোনয়ন পাবার ব্যাপারে এম.পি জ্যাকব বলেন আমি এলাকার উন্নয়ন মুলক কাজ করেছি। উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য আমাকে আগামী সংসদ নির্বাচনে দল নোমিনেশন দিবেন। নোমিনেশন পাবার ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী।অপরদিকে বি.এন.পির অভ্যন্তরীন কোন্দল প্রকাশ্যে রুপ নিয়েছে। মনোনয়ন পেতে জোর লুবিং গ্রুপিং করছেন সাবেক বি.এন.পির তিন তিন বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক এ.জি এস আলহাজ্ব নাজিম উদ্দিন আলম। রাজ পথের এই পরীক্ষিত নেতা এলাকায় দলীয়ভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করেছেন। তৃনমুল নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করে মাঠ পর্যায়ে দলকে শক্তিশালী করে মনোনয়ন নিশ্চিত করেছেন বলে উপজেলা বি.এন.পির নের্তৃবৃন্দ জানিয়েছেন। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার একান্ত কাছের । রাজ পথের আন্দোলন সংগ্রামে তার ভুমিকা রয়েছে। মনোনয়ন পাবার ব্যাপারে সাবেক এম.পি নাজিমউদ্দিন আলম শতভাগ আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। অপর দিকে বি.এন.পিতে সদ্য যোগ দেওয়া(চরফ্যাশন-মনপুরা)চৌধুরী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা লায়ন এম.নজরুল ইসলাম চৌধুরী গত ৫বছর ধরে এলাকায় গরীব অসহায় মানুষের পাশে সাহয্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। বিভিন্ন দুর্যোগে তিনি ত্রান বিতরন করেন এবং শীতার্তদের মাঝে প্রতিবছর শীত বস্্র বিতরন করে এলাকার সাধারন মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। এসব কারনে এলাকায় ব্যাপক ইমেজ সৃষ্টি হয়েছে। অপর দিকে বি.এন.পির একাংশ লায়ন এম.নজরুল ইসলামের সাথে যোগ দেওয়ায় কিছুটা মনোবল চাঙ্গা হয়ে বি.এন.পির পক্ষে দলীয় কার্যক্রম জোরদার করেছেন। অপর দিকে সাবেক এম.পি নাজিম উদ্দিন আলমকে সংস্কারবাদ হিসেবে প্রচার করে নিজকে তারেক জিয়ার আস্তাভাজন হিসেবে দাবী করে আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে জোর প্রচার প্রচারনা করে যাচ্ছেন । মনোনয়ন প্রত্যাশী লায়ন এম.নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন আমি বি.এন.পি পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। দল আমার কাজের মূল্যায়ন করে আমাকে নোমিনেশন দিবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। তবে মনোনয়ন পাবার ব্যাপারে তিনিও শত ভাগ আশাবাদী। অপর দিকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোষ্টর,ব্যানার করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন সাবেক যুগ্ন সচিব এ.কে.এম আবদুছ সালাম।তিনিও মনোনয়ন প্রত্যাশী।তবে তিনি কোন দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী তা এখনও মুখ খুলে বলতে নারাজ। তবে তিনি মনোনয়ন পাওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে বিশেষ সূত্রে জানা যায়। অপর কোন দলের তেমন কোন কর্মকান্ড না থাকায় এ আসনে নির্বাচনী প্রার্থীর নাম শোনা যায়নি। তবে মুল প্রতিযোগীতা হবে আ’লীগ ও বি.এন.পির প্রার্থীর মধ্যে। মনোনয়ন প্রত্যাশী এম.পি জ্যাকব এলাকায় বিগত সাড়ে চার বছরে ব্যাপক উন্নয়ন মলূক কর্মকান্ড করেছেন। চরফ্যাশন-মনপুরা স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা থেকে শুরু করে সকল রাস্তা পাকা করন ,ভোলা থেকে পানিউন্নয়ন র্বোড,আদালত চরফ্যাসনে স্থানান্তর,নতুন ২টি থানা স্থাপন,৩টি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র স্থাপন, নদীভাঙ্গা কবল থেকে চরফ্যাসন মনপুরাকে রক্ষার জন্য ব্লকের কাজ, ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পন্ন একটি মেশিন হস্তান্তর, ১ হাজার মেট্রিক টন ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন খাদ্য গুদাম নির্মান,২টি আধুনিক অডিটোরিয়াম নির্মান,২টি চারতলা বিশিষ্ট সাবরেজিষ্টার ভবন নির্মান, ২টি র্কোট ভবন নির্মান, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের ভবন নির্মান, ফায়ার বিগ্রেড মনপুরায় অনুমোদন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন নির্মান সহ চরফ্যসন-মনপুরায় ব্যাপক উন্নয়ন মুলক কাজ করেছেন । আ’লীগ উন্নয়নের এ ধারা কাজে লাগিয়ে ভোটের হিসাব নিজেদের অনুকুলে আনতে পারে বলে মনে করছেন দলের প্রবীন নেতারা । অপর দিকে দলীয় কর্মীদের পাওয়া না পাওয়ার ক্ষোভ দলের মধ্যে কাল হয়ে দাড়াতে পারে। আর এসব সমস্যা দুর করে দলের তৃনমুল নেতাকর্মীদের দিয়ে নির্বাচনী এলাকায় কাজ করাতে পারলেই কেবল আগামী নির্বাচনে সফলতা আসবে বলে মনে করেন তৃনমুল নেতাকর্মীরা। তৃনমুল নেতাকর্মীদের দলীয় কর্মকান্ডে ও কাছে টানতে ব্যার্থ হলে ফল বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে মনে করছেন মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। আ’লীগ উন্নয়ন মুলক কর্মকান্ডের চিত্র সাধারন মানুষের মাঝে ভালভাবে উপস্থাপন করতে পারলেই এবং দলীয় তৃনমুল কর্মীদের পাওয়া না পাওয়ার ক্ষোভ মিটিয়ে দলের পক্ষে কাজ করলে কেবল আসনটি পুনরায় জয়ী হওযার সম্ভবনা রয়েছে। অন্যথায় আসনর্টি ফল বিপর্যয় ঘটবে। অপর দিকে বি.এন.পি তাদের আসনটি পুনরায় ফিরেয়ে পাবার জন্য মরিয়া হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। দলীয় সাংগঠনিক কার্যক্রম জোর দার করা থেকে শুরু করে অভ্যন্তরীন কোন্দল মিটিয়ে দলের পক্ষে কাজ করলে এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ ,পদ্মা সেতু,হেফাজত ইসলামের ইস্যুকে ব্যাবহার করে দলের পক্ষে কাজ করলে জয়ী হওয়ার সম্ভবনাই বেশী। দলের অভ্যন্তরীন কোন্দল মেটাতে ব্যার্থ হলে ফল বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে দলীয় ত্যাগী নেতাকর্মীরা মনে করেন।এ ক্ষেত্রে আ’লীগ প্রার্থী জয়ী হওযার সম্ভবনা রয়েছে।তবে আ’লীগ ও বি.এন.পির মধ্যে প্রতিযোগীতা হবে হাড্ডা হাড্ডি।