দলে ফেরার অপেক্ষায় বরিশালের সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপন
খোকন আহম্মেদ হীরা ॥
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া গত ২১ অক্টোবরের সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “যারা আমার পরিবার সম্পর্কে অপপ্রচার করছে, ষড়যন্ত্র করছে তাদের ক্ষমা করে দিলাম”। দলের এ ক্লান্তি লগ্নেও সংস্কারপন্থির ধুয়া তুলে দূরে সরিয়ে রাখা বিএনপি দলীয় সাবেক সাংসদ সদস্যদের দলে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে খালেদা জিয়ার সুস্পষ্ট কোন বক্তব্য না আশায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরেছেন বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের বৃহৎ একটি অংশের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা।
তার পরেও আনুষ্ঠানিক ভাবে দলে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) নির্বাচনী এলাকার বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক ও বিগত ওয়ান ইলেভেনের সময় সংস্কারের ধুয়া তুলে দূরে সরিয়ে রাখা এম. জহির উদ্দিন স্বপন ও তার সমর্থকেরা।
গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির বৃহৎ একটি অংশের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে তারা আশা করেছিলেন পূর্বের সকল মান-অভিমান ভুলে দলের স্বার্থে সংস্কার আর কু-সংস্কার ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হবে। কিন্তু তিনি (খালেদা জিয়া) সে কথা না বলায় আগামীর আন্দোলন-সংগ্রামকে সামনে রেখে এ আসনের বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। সূত্রটি আরো জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার বরিশাল-১ আসনে আন্দোলন সংগ্রাম থেকে শুরু করে হারানো এ আসনটি পূণরুদ্ধারের জন্য জহির উদ্দিন স্বপনের কোন বিকল্প নেই। গৌরনদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান মুকুল, সাবেক সাধারন সম্পাদক শরীফ জহির সাজ্জাত হান্নান, আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক আবুল হোসেন লাল্টু, সাবেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব জামাল উদ্দিন ফকির, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাফর ইকবাল, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাতি মিজানুর রহমান আকবর, সাধারন সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, সরকারি গৌরনদী কলেজের ভিপি কে.এম আনোয়ার হোসেন বাদল, সাবেক ভিপি জাকির হোসেন রাজা, ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি শরীফ মোঃ জামালসহ দু’উপজেলার বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের অধিকাংশ নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা বলেন, চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কিছু বলুক আর নাই বলুক, দলের স্বার্থে জহির উদ্দিন স্বপনের নির্দেশে তারা রাজপথে আছেন এবং থাকবেন। নেতৃবৃন্দরা মান-অভিমানে দীর্ঘদিন দূরে সরিয়ে রাখা জহির উদ্দিন স্বপনসহ সকল কেন্দ্রীয় নেতাদের দলের ক্লান্তি লগ্নে একত্রিত করনের জন্য বেগম খালেদা জিয়ার কাছে জোর দাবি করেন।
সূত্রমতে, গত ১৫ অক্টোবর সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপনের মায়ের মৃত্যুর পর থেকে তিনি (স্বপন) নিজ নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করে আগামীর আন্দোলন সংগ্রামের জন্য দু’উপজেলায় দলের মধ্যে নিস্কিয় হয়ে পরা নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের চাঙ্গা করতে একাধিকবার বৈঠক করেছেন। ১৭ অক্টোবর মায়ের কুলখানি উপলক্ষ্যে তিনি দু’উপজেলার প্রায় ২০ হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের একত্রিত করেছেন। রাজনৈতিক মাঠে জহির উদ্দিন স্বপনের সক্রিয় হওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে এখানকার ঝিমিয়ে পরা বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
এ ব্যাপারে সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, দলের এ ক্লান্তি কালে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের সাথে নিয়ে জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশকে পালন করতে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এরইমধ্যে তার সমর্থকেরা বিএনপিসহ ১৮ দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে দু’উপজেলার প্রত্যেকটি ভোট কেন্দ্রগুলোর জন্য সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।