দলীয় সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের আমির তথা চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। রোববার রাজধানীর পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের এ অবস্থান তুলে ধরেন তিনি। একইসঙ্গে গত ১২ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি। এ ছাড়া জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ৮ দফা দাবি জানান চরমোনাই পীর।আওয়ামী লীগের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের সমঝোতার গুঞ্জন শোনা গেলেও দলটির আমির বলেছেন, সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন দেশবাসী মেনে নেবে না।

মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই সংসদ ভেঙে জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানান চরমোনাই পীর। এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকে জাতীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব করেন রেজাউল করীম। তার অন্যান্য প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে, বর্তমান মন্ত্রিসভার কেউ জাতীয় সরকারে থাকতে পারবে না। আর জাতীয় সরকারে যারা থাকবে, তারা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে না। জাতীয় সরকার ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন আয়োজন করবে। তবে কোনো কারণে তা সম্ভব না হলে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করলেও চরমোনাইয়ের পীর সব নিবন্ধিত দলের সমন্বয়ে জাতীয় সরকারের দাবি তুলেছেন। তিনি বলেন, বিগত দিনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে পরাজিতরা প্রশ্ন তুলেছে। জাতীয় সরকারে সবার অংশগ্রহণ থাকবে। তাই কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না।

জাতীয় সরকারে কারা থাকবে জানতে চাইলে রেজাউল করীম বলেন, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলরত রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের সঙ্গে আলোচনার পর কাঠামো প্রকাশ করব। সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী ২৪ জুন মতবিনিময় সভা আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো বর্জন করলেও স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনে অংশ নিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। তবে বরিশাল সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর ওপর হামলা হওয়ায় আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিতব্য রাজশাহী ও সিলেট সিটি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় দলটি। রেজাউল করীম জানান, তার দল দলীয় সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।

এদিকে বরিশাল সিটি নির্বাচনে ফয়জুল করীমের ওপর হামলার প্রতিক্রিয়ায় সিইসি বলেছিলেন, ‘উনি কি ইন্তেকাল করেছেন’? তার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে চরমোনাই পীর বলেন, সিইসি অবিবেচকের মতো তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও উপহাস করেছেন। তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় তার অপসারণ চাই। এ দাবিতে ২১ জুন নির্বাচন কমিশন অভিমুখে মিছিলের ঘোষণা করেছেন ইসলামী আন্দোলনের আমির। সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, আশরাফ আলী আকন, মাহবুবুর রহমান, নুরুল হুদা ফয়েজী, মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।