দক্ষিণাঞ্চল থেকে পাচার হচ্ছে ইলিশ ॥ আসছে মাদক

29/09/2013 9:34 amViews: 13

Barisal...Photoপ্রেমানন্দ ঘরামী, বরিশাল, ২৯সেপ্টেম্বর, প্রথম বাংলা ॥ মৌসুমের শেষ সময়ে ইলশে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর জোয়ারের পানির সাথে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালী ইলিশ। তার পরেও সাধারন ক্রেতাদের মুখে হাসি নেই। পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ মাছ রপ্তানি সরকারি ভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হলেও চোরাচালানিরা প্রতিনিয়ত উপকূল থেকে ট্রাক ভর্তি করে ও নৌ-পথ দিয়ে শত শত টন ইলিশ মাছ ভারতে পাচার করে দিচ্ছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ইলিশ চোরাচালানিরা দিনে দিনে বেপরোয়া হয়ে মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করছেন জিরা, মরিচ, এলাচ এবং ফেনসিডিলসহ নানা ধরনের মাদকদ্রব্য। এতে করে একদিকে যেমন দেশের ইলিশ বাইরে চলে যাচ্ছে অন্যদিকে মাদকের প্রভাবে ধ্বংস হচ্ছে দেশের যুবসমাজ। সীমান্তপথে মাঝে মধ্যে বিজিবি’র সদস্যরা অভিযান চালিয়ে দু’একটি চালান আটক করলেও অধিকাংশ সময়ই চোরাচালানিরা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। সূত্রে আরো জানা গেছে, বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের চোরাচালানিরা নদী কিংবা সাগর থেকে শত শত টন ইলিশ মাছ ক্রয় করে ভারতে পাচার করার ফলে এখন আর দখিনের মাছের আড়ৎগুলোতে আগের মতো ইলিশ মাছ আসছেনা।

বরিশালের একাধিক আড়তদাররা জানিয়েছেন, বিভাগের মহিপুর, আলিপুর, কুয়াকাটা, পাথরঘাটা, ঢালচর ও মনপুরাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগে যে পরিমাণ ইলিশ মাছ বরিশালের মোকামে আসতো এখন তা আসছে না। আগে এসব মোকামের ইলিশ বরিশাল হয়ে বৈধ পথে ভারতে রপ্তানি হতো। বর্তমানে রপ্তানি বন্ধ থাকায় চোরাই পথে বিভিন্ন মোকাম থেকে ইলিশ মাছ চলে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বাজারে। সরাসরি মেঘনা, তেঁতুলিয়াসহ বঙ্গোপসাগর থেকেও নৌ-পথে ইলিশ পাচার করা হচ্ছে বলেও তারা উল্লেখ করেন। যে কারণে বরিশালের মোকামের কদর অনেকটাই কমে গেছে। নদী ও সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছ ধরা পড়া সত্বেও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে থেকে গেছে জাতীয় মাছের স্বাদ।

সূত্রমতে, এ দেশে এক কেজির একটি ইলিশের দাম ৮ থেকে ৯ শত টাকা হলেও ভারতে সেই ইলিশের দাম প্রায় দেড় হাজার টাকা। তাই চোরাচালানিরা নদী থেকে জেলেদের কাছ থেকে ইলিশ মাছ ক্রয় করে অবৈধভাবে ভারতের বাজারে নিয়ে বিক্রি করছেন। জেলেরা আড়ৎদারদের কাছ থেকে অগ্রীম টাকা নেয়ায় এখন নগদ টাকা না পাওয়ার আশংকায় চোরাচালানিদের কাছে নদী ও সাগরে বসেই মাছ বিক্রি করে দিচ্ছেন।

জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল একটি সূত্রে জানা গেছে, অতিসম্প্রতি ৩৮ বিজিবি সদস্যরা সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে পাচার হওয়ার সময় বিপুল পরিমান ইলিশ মাছ আটক করেছে। এ ঘটনায় দুটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। তাই সড়ক পথে এখন নিরাপদ না ভেবে নদী পথেই চোরাচালানিরা ইলিশ মাছ পাচার শুরু করেছে।

Leave a Reply