দক্ষিণাঞ্চল থেকে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চরম দূর্ভোগ
খোকন আহম্মেদ হীরা ॥ সেই একই বিড়ম্বনার মধ্যদিয়ে ঈদে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষ ছুটেছেন কর্মস্থলে। দক্ষিণাঞ্চলের হাজারো মানুষের ভীড়ে গতকাল শুক্রবার লঞ্চ ও বাসে যেন তিল ধারনের ঠাঁই ছিলোনা। কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার প্রতিযোগীতায় যাত্রীদের যেন স্রোত নেমেছে বরিশাল লঞ্চ ঘাট ও বাস ষ্ট্যান্ডগুলোতে। লঞ্চ ও বাস কর্তৃপক্ষ পূর্ব প্রস্তুতি অনুযায়ী স্পেশাল সার্ভিস প্রস্তুত রাখলেও তা পর্যাপ্ত ছিলোনা। ঈদুল আযহার ছুটি শেষে গতকাল শুক্রবার বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক হাজার যাত্রী সড়ক ও নৌ-পথে ঢাকায় পাড়ি জমাতে মরিয়া হয়ে ওঠে। শুক্রবার যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ সামলাতে লঞ্চ মালিক সমিতি নিয়মিত পাঁচটি লঞ্চের পাশাপাশি অতিরিক্ত ৬টি লঞ্চ স্পেশাল সার্ভিস দেয়। কিন্তু বিকেল হতে না হতেই পুরো লঞ্চঘাট এলাকা ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের আগমনে পূর্ণ হয়ে যায়। ১১টি লঞ্চ ও ১টি জাহাজে স্থান না পেয়ে অনেক যাত্রীদের ফিরে যেতে দেখা গেছে। প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপের পরেও অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই ঘাট ত্যাগ করেছে অনেক লঞ্চ। ঢাকার একটি বেসরকারী কোম্পানীতে কর্মরত আরিফ মিয়া জানায়, শুক্রবার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘাটে এসে ব্যর্থ হয়ে তিনি পূর্ণরায় ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। শনিবার যে করেই হোক না কেন তাকে যেতেই হবে। অসংখ্য যাত্রীরা জানান, লঞ্চের কাউন্টারগুলোতে কোন টিকেট নেই ঈদের পূর্বেই তা বিক্রি হয়ে গেছে। সকাল ৯টা থেকে তিনটার মধ্যে সব লঞ্চ পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে যাত্রীতে। থাকছেনা তিল ধারণের ঠাঁই। যাত্রীরা অভিযোগ করেন, ঈদ আর কোরবানী আসলেই সড়ক ও নৌ-পথে যাতায়াতকারী লঞ্চ ও বাসের টিকিট চলে যাচ্ছে কালোবাজারীদের হাতে। এতে যাত্রীদের সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হয়। গতকাল শুক্রবার সকালে বরিশালে কয়েকটি লঞ্চের টিকেট কাউন্টারে যোগাযোগ করে কোন কেবিন বা সোফার টিকেট পাওয়া যায়নি। সরেজমিনে লঞ্চ ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, এমভি সুরভী, পারাবত, টিপু, কালাম খান, কীর্তনখোলা, সুন্দরবন লঞ্চের ষ্টাফরা তাদের রুমগুলো কেবিন হিসেবে ৮থেকে ১১’শ টাকায় যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। অপরদিকে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন পরিবহন কোম্পানী তাদের নিয়মিত সার্ভিসের সাথে একটি করে স্পেশাল সার্ভিস দিয়েছে। এরপরেও যাত্রীরা টিকেট না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। সব মিলিয়ে সাধারণ যাত্রীদের কর্মস্থলে ফিরতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।