তেজগাঁওকে ‘কমার্শিয়াল হাব’ করার প্রস্তাব ব্যবসায়ীদের, ঢাকা-১২ আসনে উন্নয়নের ১৪ বছর শীর্ষক আলোচনা
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমরা সৌভাগ্যবান যে বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা আমাদের দেশে জন্মেছিলেন। তাঁর কারণে আমরা স্বাধীন দেশে মাথা উঁচু করে চলতে পারি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়ে গেলেও তাঁর স্বপ্নের মতো করে দেশকে গোছাতে পারেননি। ষড়যন্ত্রকারীরা তাঁকে সপরিবারে হত্যা করে। তবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত পরিশ্রম করছেন।’ হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদের প্রশংসা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ. কে. আজাদ শুধু একজন শিল্পপতি ও সাবেক ছাত্রনেতাই নন। তিনি একজন মানবিক মানুষ। তিনি ভীষণ পরোপকারী।
শেখ কবির হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী যোগ্য লোককেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি কাজের মানুষ। দেখতে নরম মনে হলেও তিনি ভেতরে ভেতরে যথেষ্ট গরম। তাঁর যোগ্য নেতৃত্বের কারণেই সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে। শেখ কবির হোসেন আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে আবার বিজয়ী করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর নেতৃত্বের গুণে বিশ্বনেতায় পরিণত হয়েছেন।
সভাপতির বক্তব্যে এ. কে. আজাদ বলেন, জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন করে চলেছেন তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মায়ের মমতা দিয়ে পদ্মা সেতু ও এক্সপ্রেসওয়ে গড়েছেন। আর এই পদ্মা সেতুর কারণে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। ঢাকা থেকে এখন ফরিদপুরে দুই ঘণ্টায় যাওয়া যায়। পদ্মার ওপারে এখন শিল্পায়ন হচ্ছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। এ. কে. আজাদ আরও বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একজন সজ্জন মানুষ। ঢাকা-১২ আসনের এমপি। তাই তেজগাঁওয়ের ব্যবসায়ীরা যেন তাঁকে এই আসনের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা বলতে পারেন, সে জন্যই এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
মো. জসিম উদ্দিন বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নেতৃত্বের কারণে দেশের অপরাধরাজ্য আজ ভয়ে তটস্থ। আর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলেই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে। মো. জসিম উদ্দিন আরও বলেন, এক সময় সন্ত্রাসীদের ভয়ে তেজগাঁওয়ে স্বস্তিতে ব্যবসা করা যেত না। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে। যার সিংহভাগ কৃতিত্ব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। তিনি তেজগাঁও এলাকা কমার্শিয়াল এলাকায় রূপ নিচ্ছে বলে জানান। মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ইস্ট পাকিস্তান আমল থেকে তেজগাঁও অঞ্চলে শ্রমজীবী মানুষের বসবাস। কিন্তু এ অঞ্চল ছিল অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য। কেউ নিরাপদে ছিল না, ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারত না। এখন সে চিত্র একেবারেই পরিবর্তন হয়েছে। আবদুল মতিন চৌধুরী বলেন, ঢাকা শহরে তেজগাঁও ছাড়া আর কোথাও তিন বিঘার প্লট নেই। আর হাতিরঝিল হওয়ায় এই এলাকার কানেকটিভিটি বেড়েছে। তাই তেজগাঁওকে কমার্শিয়াল হাব হিসেবে গড়ে তুলতে গেলে বস্তি ও ট্রাক পার্কিং নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
শাইখ সিরাজ বলেন, হট সিটে বসে মাথা ঠান্ডা রেখে কীভাবে চলতে হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই তার উদাহরণ। তিনি ধৈর্যশীল মানুষ ও উন্নয়নকামী। শাইখ সিরাজ বলেন, তেজগাঁও এলাকাকে ম্যানহাটানের মতো ‘কমার্শিয়াল হাব’ হিসেবে গড়ে তোলা যেতে পারে। এই জনপদের যত্রতত্র বাস-ট্রাক পার্ক করে রাখায় চলাচলের পথ সরু হয়। সন্ধ্যার পর কিছু এলাকা অন্ধকারে থাকে। অসামাজিক কাজ চলে। তিনি আরও বলেন, তেজগাঁওয়ের পূর্ব অংশে ৪০ তলা ভবন নির্মাণের অনুমতি থাকলেও পশ্চিম অংশে মাত্র ১৫ তলার অনুমতি দেওয়া হয়। এতে বৈষম্য তৈরি হচ্ছে।
বিপুল ঘোষ বলেন, আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বেই সন্ত্রাস দমন হয়েছে। নেতৃত্বের যোগ্যতা দিয়েই তিনি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখেছেন। বিপুল ঘোষ আরও বলেন, হা-মীম গ্রুপের এমডি এ. কে. আজাদ সবসময়ই ফরিদপুরবাসীর পাশে থাকেন। এখন সময় এসেছে, তাঁর দিকে দৃষ্টি দেওয়ার। শেখ বজলুর রহমান বলেন, ‘অনেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিদায় দেখেছি। কারও বিদায় সুখকর ছিল না। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হলেন আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি সন্ত্রাস, জঙ্গি ও মৌলবাদীদের দমন করে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনেছেন।’ এস এম মান্নান কচি বলেন, এ দেশে সন্ত্রাস-মৌলবাদের যে নিয়ন্ত্রণ ছিল; বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্বে সেসবের শিকড় উপড়ে ফেলেছেন। আর ব্যবসায়ী ও মানুষের মধ্যে যে শান্তি ফিরে এসেছে, তা সম্ভব হয়েছে আইনশৃঙ্খলার স্থিতিশীলতা ফিরে আসায়।
প্রীতি চক্রবর্তী বলেন, এ সরকারের আমলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল দায়িত্ব নেওয়ার পরই সারাদেশের মানুষের মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন ফিরে এসেছে। মানুষ নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজাসহ সব উৎসব নির্বিঘ্নে করতে পারছে।
সফিউল্লাহ সফি বলেন, তেজগাঁও অঞ্চলে একটা সময় ছিল, যে সময় কোনো ব্যবসায়ী ঠিকমতো ব্যবসা করতে পারতেন না। তেজগাঁও অঞ্চল খুন, চাঁদাবাজি, ছিনতাইয়ের স্বর্গরাজ্য ছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওই পরিস্থিতি বদলে দিয়েছেন।
তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনায়েত হোসেন ইনু এবং চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ডিজিটাল শাখার প্রধান সাংবাদিক রাজীব খানের উপস্থাপনায় এ আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহ্ আলীমুজ্জামান, এফবিসিসিআইর তিন সহসভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ ডন, আমিন হেলালী ও আব্দুর রাজ্জাক খান, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী জাহিদ, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি মাসুদ, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মিনরুল হাসান মিঠু, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মনজুর, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামীম হাসান, এনার্জি প্যাকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন রশিদ, ডাচ্-বাংলা চেম্বারের সভাপতি আনোয়ার শওকাত আফসার, দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, উত্তরা মটরসের পরিচালক নুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, কারওয়ান বাজার কিচেন মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন, তেজগাঁও কলেজের অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই গত ১৪ বছরে ঢাকা-১২ আসনের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।