তৃতীয়বারের জন্য জয়ী হলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান।

29/05/2023 12:36 pmViews: 5

mzamin

facebook sharing buttontwitter sharing buttonmessenger sharing button

তুরস্কের ঐতিহাসিক দ্বিতীয় দফার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন রিসেপ তাইয়েফ এরদোগান। ৯৯.৮৫ শতাংশ ভোট গণনা হয়ে গেছে। এতে এরদোগান পেয়েছেন ৫২.১৬ শতাংশ ভোট। অপরদিকে তার হেরে যাওয়া প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিচদারোগ্লু পেয়েছেন ৪৭.৮৪ শতাংশ ভোট। নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন প্রায় ৮৬ ভাগ ভোটার। এ খবর দিয়েছে টিআরটি ওয়ার্ল্ড। ১৯৯৪ সালে ইস্তাম্বুলের মেয়র হওয়ার মধ্য দিয়ে নিজের জয়ের ইতিহাসের শুরু করেছিলেন এরদোগান। এরপর তিনি একের পর এক নির্বাচন জিতে গেছেন। ২০০২ সালে তিনি তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৭ ও ২০১১ সালের নির্বাচনেও জয় হয় এরদোগানের। এরপর ২০১৪ সালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতাগ্রহণ করেন এরদোগান।

রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোট শুরু হয়ে বিকেল ৫টায় শেষ হয়েছে। এর আগে গত ১৪ই মে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট এরদোগান শতকরা ৪৯.৫ ভাগ ভোট পেয়েছিলেন এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিচদারোগ্লু পেয়েছিলেন ৪৪.৯% ভোট। নির্বাচনের তৃতীয় অবস্থানে থাকা সিনান ওগান রান অফ নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে সমর্থন দিয়েছিলেন। প্রথম দফার নির্বাচনে ওগান ৫.২ ভাগ ভোট পান। প্রথম দফার নির্বাচনে কোনো প্রার্থী শতকরা ৫০ ভাগের বেশি ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় গড়ায় দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।  এরপরেও রান-অফে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ভাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত একে পার্টির এরদোগানেরই জয় হলো। এর ফলে গত দুই দশক ধরে তুরস্কের ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা এরদোগানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আরো পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত হলো।

এরদোগানকে অভিনন্দন জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সামরিক জোট ন্যাটোও। দুই সংগঠনই জানিয়েছে, তুরস্কের কাছে তারা আরো বড় ভূমিকা আশা করে। তারা চায়, এরদোগান আরো বেশি সহায়ক শক্তি হয়ে উঠুন।

ইসলামপন্থি তরুণ অ্যাক্টিভিস্ট থেকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন এরদোগান। তার রাজনৈতিক জীবনে যেমন বহু বিতর্ক রয়েছে তেমনি তিনি জনপ্রিয়তারও শীর্ষে ছিলেন দীর্ঘ সময় ধরে। তুরস্কে ও বিদেশে তাকে নিয়ে নানা ধরণের অবস্থান রয়েছে। তাকে নব্য-অটোমান ‘সুলতান’ হিসেবেও বিবেচনা করেন অনেকে। আবার পশ্চিমারা প্রায়ই এরদোগানের শাসনের সঙ্গে স্বৈরাচারের সম্পর্ক খুঁজে পায়।

রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই ইসলামপন্থিদের বিভিন্ন দাবিদাওয়ার ব্যাপারে সচেতন ছিলেন তিনি। পাশাপাশি ন্যাটোতে তার নেতৃত্বে বড় ধরনের অবদান রাখছে তুরস্ক। ১৯৯৪ সালে ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হন এরদোগান। জনসমক্ষে বিতর্কিত কবিতা আবৃত্তির দায়ে জেলেও যেতে হয় এরদোগানকে। চার মাস জেল খাটেন তিনি। জেল থেকে বেরিয়ে আস্তে আস্তে নিজের নতুন দল গঠন শুরু করেন এরদোগান। ২০০২ সালে তার দল একেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করে। আর ২০০৩ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম বছরগুলোতে এরদোগান দেশবাসীকে সামাজিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান, অর্থনীতির উন্নয়ন এবং বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংস্কারের দিকে মনোযোগী হন। তবে কেউ কেউ এটাও মনে করেন যে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি রাজনীতিতে ধর্মের মিশ্রণ ঘটানোয় ভূমিকা রেখেছেন।

যদিও তুরস্কের সংবিধান দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থানকে সমর্থন করে, তারপরও এরদোগান কট্টর ইসলামপন্থিদের মন জয়ের নানা চেষ্টা করেছেন। তুরস্কের এই শীর্ষনেতা একসময় বলেছিলেন যে, তার লক্ষ্যগুলোর একটি হচ্ছে এক ‘ধার্মিক প্রজন্ম’ গড়ে তোলা। এরদোগানের সমর্থকরা এই লক্ষ্যের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, ধর্মচর্চা করা মুসলমানরা তুরস্কে নানাভাবে বঞ্চিত হচ্ছিল।

Leave a Reply