তুরস্কে জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত নিয়ে সমাজে বিভাজন

23/07/2016 5:13 pmViews: 8
তুরস্কে জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত নিয়ে সমাজে বিভাজন
 
তুরস্কে জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত নিয়ে সমাজে বিভাজন
তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পর প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানের জারি করা জরুরি অবস্থা নিয়ে এখন সেখানে অনেকটা বিভাজন ছড়িয়ে পড়েছে। সেদিনের ক্যু প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষ ঝাপিয়ে পড়লেও সরকারের বর্তমান পদক্ষেপ নিয়ে এখন অনেক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে জরুরি অবস্থার সুফল-কুফল নিয়ে। এরইমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নও সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। এদিকে দেশ আরো একটি অভ্যুত্থান চেষ্টার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম।
তুর্কি বার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মেটিন ফেইজিওগলু বলেন, ব্যর্থ ক্যু’র পর সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে, তা নিশ্চয়ই পরিস্থিতির বিবেচনায় প্রয়োজন এবং ভালো ছিল। তবে তিনি গণহারে সরকারের তরফ থেকে বরখাস্ত এবং গ্রেফতারের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, সরকারকে যদি এপথে চলতেই হয়, তাহলে এর কুফলের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। রাষ্ট্রযন্ত্র যদি মনে করে তাদেরকে সমালোচনা করার মতো আর কাউকে রাখা হবে না বা তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে; তাহলেতো আর সুশাসন কিংবা সভ্য সমাজ বলে কিছুই থাকবে না। আর এসব অব্যাহতভাবে চলতে থাকলে সমাজে বিভাজন আসতে বাধ্য। আঙ্কারা ভিত্তিক ফাউন্ডেশন সিতা’র অর্থনীতি ও রাজনীতি বিষয়ক গবেষণার পরিচালক ইউফোক ইউলুতাস সরকারের বর্তমান জরুরি অবস্থার জারিকে অনেকটা সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, সেদিন পার্লামেন্ট ভবন, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ এফ ১৬ জঙ্গি বিমান বোমা হামলা চালিয়েছিল। সেখানে বিভিন্ন স্থান থেকে হেলিকপ্টারের হামলা হয়েছিল। অভ্যুত্থান প্রচেষ্টাকারীরা সংখ্যায় অনেক ছিলেন। সরকারকে অবশ্যই এসব ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিতে হবে খুব ভেবে-চিন্তে। বিচার মন্ত্রী বেকির বোজদাগ বলেন, সতর্কতার সাথে পদক্ষেপ নেওয়ার অবশ্যই প্রয়োজন আছে। তবে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা নেওয়া অনেক জরুরি ছিল। কেননা আবার যে বিপথগামীরা তাদের ছোবল দিবে না তার নিশ্চয়তা কোথায়। তিনি বলেন, জরুরি অবস্থার পরিবর্তে অন্য কোনভাবে যদি সামনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায় তাহলে অবশ্যই আমরা তা ভেবে দেখবো। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, এটা জরুরি অবস্থা, কোন মার্শাল ল’ নয়।
পার্লামেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ( সিএইচপি) ও প্রধান বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির নেতা বুলেন্ট তেজকান বলেন, জরুরি অবস্থায় যে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তাতে ক্যু চেষ্টাকালে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে যে ঐক্য দেখা দিয়েছিল তাকে হেয় করা হচ্ছে। তিনি বলেন, পাবলিক স্কোয়ারে যা চলছে তা গোটা জাতির ইচ্ছার প্রতিফলন নয়। এটা একটা নির্দিষ্ট দলের প্রপাগান্ডা মাত্র। এদিকে তুর্কী প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম বলেন, আমরা আরো একটি অভ্যুত্থান চেষ্টার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি। তবে সরকার ও অনান্য প্রতিষ্ঠানের পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন। উল্লেখ্য ১৫ জুলাইয়ের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর ৬০ হাজারের বেশি সেনা, পুলিশ, বিচারক, সরকারি কর্মী ও শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়।
বিবিসি

Leave a Reply