তারেকের বিরুদ্ধে ডিবির প্রতিবেদন দাখিল

অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার জুয়েল রানা আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর প্রতিবেদনটি গ্রহন করেন। একইসঙ্গে আদেশের জন্য আগামী ৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। ওইদিন মামলার বাদীকে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেয়া হয়ছে।
তারেক রহমান দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে দেশের স্বাধীনতা, স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস এবং ওই যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে প্রশ্নবিদ্ধ, বিকৃত ও অস্বীকার করার চেষ্টা করছেন- এমন অভিযোগে গত বছরের ১৯ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল মালেক ওরফে মশিউর মালেক বাদী হয়ে দন্ডবিধির ১২৩ (ক) ধারায় আদালতে নালিশি মামলা করেন।
ওইদিন বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের পর সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষ গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনারের পদমর্যাদার নিচে নয় এমন কর্মকর্তাকে দিয়ে অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়।
আরজিতে বলা হয়, তারেক রহমান গত ২৯ সেপ্টেম্বর ইস্ট লন্ডনের বেথনাল গ্রিন এলাকার ইয়র্ক হলে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত ‘বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বিশ্বনেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এক বক্তৃতায় বলেন, ‘শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু নন, পাকবন্ধু। তিনি জাতির জনক হতে পারেন না, তিনি হত্যাকারী।’
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনোই জনগণের মনের ভাষা বুঝতে পারেনি। তারা ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ কিংবা ২৫ মার্চ জনগণের মনের ভাষা বুঝেনি। শেখ মুজিব তার ৭ মার্চের ভাষণেও জয় বাংলার পর জয় পাকিস্তান বলেছিলেন।’
তারেক রহমানের এ বক্তব্য পরের দিন দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় ২০তম পৃষ্ঠায় ৭ম কলামে যুক্তরাজ্যে বিএনপির সভায় তারেক, শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু নন পাকবন্ধু শীর্ষক সংবাদটির মাধ্যমে আসামির রাষ্ট্রদ্রোহমূলক অপরাধের কথা জানতে পারেন এবং একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে ক্ষুব্ধ হয়ে এ মামলাটি করেন।
বাদী তারেক রহমানকে বাংলাদেশ ও দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার নীলনকশা প্রণয়নকারী বলেও আরজিতে উল্লেখ করেন।
এর আগে মামলার বাদী তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বরাষ্ট্র সচিব ও পুলিশের আইজি বরাবর রেজিস্ট্রি ডাকযোগে গত ১৪ অক্টোবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। নোটিশ প্রাপ্তির তিন দিনের মধ্যে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করে তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতার করে বিচারের সম্মুখীন করার উদ্যোগ নিতে বলা হয়।
অন্যথায় এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়া ঘোষণা দিয়ে ওই নোটিশে আরও বলা হয়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান তার লিখিত ‘জিয়াউর রহমান- ফার্স্ট প্রেসিডেন্ট অব বাংলাদেশ’ বইয়ে মিথ্যা কাল্পনিক ও ভুল তথ্যাবলি উল্লেখ করেছেন।
প্রসঙ্গত, সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ গ্রেফতার হন তারেক রহমান। এরপর তার বিরুদ্ধে প্রায় এক ডজন দুর্নীতির মামলা হয়। সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে পরের বছরের সেপ্টেম্বর মাসে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য যান তিনি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তখন থেকে সেখানেই রয়েছেন বিএনপির এ ভবিষ্যত কর্ণধার।