তরুণীকে গণধর্ষণ : ধর্ষক তুষার ও চালক লাভলু গ্রেফতার
ঢাকা, ২৭ মে:
২০১৫
রাজধানীতে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে নৃজাতিগোষ্ঠীর গারো তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক আশরাফ ওরফে তুষার ও মাইক্রোবাসচালক লাভলুসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।
তবে তাদের কখন ও কোথায় থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা নিশ্চিত করেন তিনি। এছাড়া গ্রেফতার বাকি একজনের নামও নিশ্চিত করা হয়নি। র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকে শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে।
জানা গেছে, আইনশৃংখলা বাহিনীর একটি চৌকস গোয়েন্দা দল এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে চালকের কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। তবে আইনশৃংখলা বাহিনীর পক্ষে দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তাই আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি স্বীকার করছেন না। তারা বলছেন, তিন ধর্ষকের তথ্য এখন তাদের হাতে।
তবে একটি সূত্র জানায়, গণধর্ষণে জড়িতদের র্যাব ইতোমধ্যে তাদের হেফাজতে নিয়েছে। আজ হেফাজতে থাকা তিন ধর্ষককে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার দেখানো হতে পারে।
গত ২১ মে রাতে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ওই গারো তরুণীকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। তরুণীটি যমুনা ফিউচার পার্কের শপিংমলের টেক্সটমার্কের শাখায় বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করতো। এ ঘটনার পর শুক্রবার রাজধানীর ভাটারা থানায় মামলা করেন ওই তরুণী। কর্মস্থল থেকে বের হওয়ার পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুড়িল রোডে সিনহা মোটর্সের সামনে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ঠিক তখনই কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগে তাকে ছাই কালারের একটি মাইক্রোবাসে ওঠিয়ে নেয় ধর্ষকরা। পরে তাকে চলন্ত গাড়িতে গণধর্ষণ করা হয়।
জানা গেছে এক ধর্ষক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, গাড়িতে গণধর্ষণের পর তারা তরুণীকে হত্যার পরিকল্পনাও করে। কিন্তু তরুণীর অনুনয়-বিনয়ে তারা তাকে বাসার কাছে রেখে আসে। সে আরও জানিয়েছে, তরুণী তাদের আগের পরিচিত। আর তুষারের সঙ্গে তার কোনো বিষয়ে ঝামেলা চলছিল। তাই তাকে উচিত শিক্ষা দিতে এ অপরাধের আয়োজন করে।
র্যাবের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, শুক্রবার ঘটনার জানার পর থেকেই র্যাবের গোয়েন্দা দল কয়েকটি সূত্রকে কাজে লাগিয়ে অভিযানে নামে। অভিযানে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রথমে ছাই কালারের মাইক্রোবাসের সূত্র ধরে অভিযান চলে। আর এতে চালক তাদের হাতের মুঠোয় চলে আসে। পরে তাকে নিয়ে অভিযানে আরও দুজনের খোঁজ করা হয়। একপর্যায় সে দুজনেরও অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হয়। জানা গেছে, গাড়িটি যে কোনো মুহূর্তে জব্দ করা হতে পারে।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, র্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে যত স্পর্শকাতর ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর তদন্ত ও অনুসন্ধানে এ বাহিনীই সফল হয়েছে। তিনি বলেন, প্রযুক্তির এ যুগে র্যাব বিশ্বমানের সরঞ্জাম ব্যবহার করে। আগামীতেও র্যাব যে কোনো স্পর্শকাতর ও বড় ঘটনা তদন্তে সফল হতে আরও উচ্চমানের প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। তিনি জানান, তরুণী নির্যাতনের ঘটনায় র্যাব কাজ করছে। আশা করি সফলতা আসবে।