তত্ত্বাবধায়ক বাতিলের রায়ও তো অসাংবিধানিক: বিএনপি

অবসরে যাওয়ার পর রায় লেখার বৈধতা নিয়ে প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের বৈধতা থাকল কি না- সে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। বুধবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আজ পত্রিকায় এসেছে, দেশের প্রধান বিচারপতি বলেছেন যে, অবসর গ্রহণের পর যে রায় লেখা হয়, সেই রায় বেআইনি এবং অসাংবিধানিক। তাহলে যে রায়ের রেফারেন্স দিয়ে আপনারা পঞ্চদশ সংশোধনী করলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে দিলেন; সেই রায় তো আজকের প্রধান বিচারপতির ভাষায় বেআইনি ও অসাংবিধানিক।’
প্রধান বিচারপতির ওই বক্তব্যের পর পঞ্চদশ সংশোধনী ‘বাতিলযোগ্য হয়ে গেছে’ এবং বাংলাদেশের জনগণও ‘তা-ই চায়’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা নজরুল।
২০১১ সালের মে মাসে তত্কালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল বলে রায় দেন। ওই রায়ের ভিত্তিতে পঞ্চদশ সংশোধনী করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। খায়রুল হক অবসরে যাওয়ার পর ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত হয় পূর্ণাঙ্গ রায়।
মঙ্গলবার দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে একবছর পূর্তি উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে রায় লিখতে কোনো কোনো সহকর্মীর দেরিতে উষ্মা প্রকাশ করে বিচারিক এই দায়িত্ব কর্মজীবনেই শেষ করতে তাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা।
“কোনো কোনো বিচারপতি রায় লিখতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেন। আবার কেউ কেউ অবসর গ্রহণের দীর্ঘদিন পর পর্যন্ত রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধান পরিপন্থি।”
প্রধান বিচারপতি হিসেবে ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি শপথ নেন বিচারপতি এস কে সিনহা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ত্রয়োদশ সংশোধনী বিল বাতিলের প্রসঙ্গ টেনে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচন করে খুবই কমই তারা (আওয়ামী লীগ) জিততে পেরেছেন; যার জন্য তারা চান না সুষ্ঠু নির্বাচন করতে কিংবা বিএনপি যেন নির্বাচনে আসে। বহুবছর ধরে আমরা বলে আসছি, নির্বাচন করার যে বিধান জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সবার সম্মতিতে করা হয়েছে, তা বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচন যাবে না।’