ঢাকা-মালে তিন চুক্তি সই: সহযোগিতা জোরদার করার প্রত্যয়
ঢাকা-মালে তিন চুক্তি সই:
সহযোগিতা জোরদার করার প্রত্যয়
আমরা আমাদের পূর্ববর্তী সিদ্ধান্তগুলোতে এ পর্যন্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছি এবং ফলাফল সন্তোষজনক পেয়েছি। তিনি বলেন, আমরা বহুপক্ষীয় ফোরামে সহযোগিতা, একে-অপরের প্রার্থীদের সমর্থন এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা করেছি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী দু’দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করতে গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি আধুনিক, সমৃদ্ধ ও উন্নত অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হওয়ার মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণে ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দু’দেশের জনগণের সুবিধার জন্য মালদ্বীপের সঙ্গে বাংলাদেশের অভিন্নতার ক্ষেত্রসমূহে অংশীদারিত্বে আগ্রহী। বাংলাদেশের বর্ধমান উৎপাদন ক্ষমতার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে মালদ্বীপে অনেক মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহের প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত সন্তুষ্টির বিষয় যে, বাংলাদেশ থেকে স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের নিয়োগের জন্য মালদ্বীপের প্রস্তাব বাংলাদেশ গ্রহণ করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা মালদ্বীপের ছাত্রদের জন্য বিশেষায়িত স্ন্নাতকোত্তর মেডিকেল কোর্সের সুযোগ তৈরি করবো। বাংলাদেশি এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলার ফ্লাইট শুরুর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সও ঢাকা-মালে’র মধ্যে ফ্লাইট চালু করার কথা ভাবছে। আমরা আশা করি, সরাসরি ফ্লাইটের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে যোগাযোগ এবং পর্যটন সহযোগিতার আদান-প্রদান বৃদ্ধি পাবে। আমরা একটি সরাসরি শিপিং লাইন স্থাপনের সম্ভাবনাও পর্যালোচনা করেছি। যেহেতু আমাদের নিজেদের জনগণের কল্যাণ আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার, সেহেতু কনস্যুলার এবং কমিউনিটির সমস্যাগুলো আমাদের আলোচনায় বিশেষভাবে প্রাধান্য পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁরা অনথিভুক্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়মিতকরণের বিষয়েও আলোচনা করেছেন, যাদের উভয় দেশের অর্থনীতিতে যথেষ্ট অবদান রয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতি উন্নতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার মালদ্বীপের নাগরিকদের জন্য আগমনের পর ভিসা অন-অ্যারাইভাল) ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে এলেও মালদ্বীপে এটি বাংলাদেশের সরকার প্রধানের এটাই প্রথম পূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সফর। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সাল বাংলাদেশ-মালদ্বীপ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য একটি যুগান্তকারী বছর। প্রধানমন্ত্রী চলতি বছরের মার্চ মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে দুটি মেগা ইভেন্ট উদ্যাপনে প্রেসিডেন্ট সলিহ’র উপস্থিত থাকার কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচায় বরণ: এর আগে প্রধানমন্ত্রী মালেতে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে পৌঁছালে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ তাঁকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেন। এ সময় শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার প্রদান ও গান স্যালুট দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী উভয় দেশের ‘লাইন অব প্রেজেন্টেশন’ পরিদর্শন করেন। শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে রক্ষিত দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন এবং সেখানে ফটো সেশনে অংশ নেন। গত বুধবার বিকালে (২২শে ডিসেম্বর) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে ছয়দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে মালদ্বীপের রাজধানী মালে পৌঁছেন বাংলাদেশের সরকার প্রধান।