ডিজিটাল বাংলাদেশ-স্বপ্ন নয় বাস্তব
খোকন আহম্মেদ হীরা ॥ ডিজিটাল বাংলাদেশ বির্নিমানে ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের সুফল পেতে শুরু করেছেন গ্রামীণ জনগণ। সেবা কেন্দ্রগুলোতে শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ হয়েছে। অতিসম্প্রতি সরকারি ভাবে বিদেশ গমনেচ্ছুকদের সফল ভাবে রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম, মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি করার জন্য লোক বাছাইয়ের কাজটিও করা হয়েছে তথ্য কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে। অনলাইন রেজিস্ট্রেশন থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে লটারির মাধ্যমে কর্মী নির্বাচন করে ইতোমধ্যে মালেশিয়ায় পাঠানো হয়েছে নির্বাচিত ব্যক্তিদের। ফলে ওইসব বিদেশে গমনেচ্ছুকদের জনশক্তি রপ্তানিকারকদের অফিসে দিনের পর দিন ধর্না দিতে হয়নি। গ্রামের প্রত্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য কেন্দ্রের মাধ্যমেই তারা নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়াও শিক্ষা খাতেও লেগেছে ডিজিটালের ছোঁয়া। বরিশাল জেলার অধিকাংশ স্কুলে সরকারি-বেসরকারি ভাবে দেয়া হয়েছে অসংখ্য কম্পিউটার। প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম। বরিশালে বিশেষ করে ডিজিটাল বাংলাদেশ বির্নিমানে একনিষ্ঠ ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস, বর্তমানে অগ্রনী ও সাবেক জনতা ব্যাংকের পরিচালক এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার এবং গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান সৈকত গুহ পিকলু। সাংসদ ইউনুস বর্তমান মহাজোট সরকারের শুরু থেকেই তার নির্বাচনী এলাকার প্রায় প্রতিটি শিক্ষা-গণমাধ্যম ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার বিতরণ শুরু করেন। এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার গোটা বরিশালের প্রায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে শত শত কম্পিউটার বিতরণ করেছেন। এছাড়াও তিনি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম প্রতিষ্ঠা করেছেন। সৈকত গুহ পিকলু বরিশালে প্রথম তার ইউনিয়নে তথ্য সেবা কেন্দ্র চালু করে উন্নত তথ্য প্রযুক্তির সেবা দিয়ে ইতোমধ্যে বরিশালের সর্বত্র বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে তিনি (সৈকত গুহ পিকলু) বিদেশের তথ্য প্রযুক্তি প্রত্যক্ষ করার জন্য নিজস্ব উদ্যোগে সপ্তাহব্যাপী মালয়েশিয়া সফর করেছেন। সেখানকার উন্নত তথ্য প্রযুক্তি স্বচক্ষে দেখে ইউনিয়নবাসী তথা গোটা উপজেলাবাসীর মধ্যে তথ্য সেবা প্রদানের মাধ্যমে তিনি (চেয়ারম্যান পিকলু) ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন। এছাড়াও মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুর উদ্যোগে ইউনিয়নের বেকার-যুবক ও তরুন-তরুনীদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, অসহায়-দুঃস্থ নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সেলাই প্রশিক্ষণের পর বিনামূল্যে সেলাই মেশিন বিতরণ, বেকার যুবকদের ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে মৎস্য চাষের প্রশিক্ষণ, উন্নত তথ্য প্রযুক্তির সেবা নিশ্চিত করন, বেকার-যুবক ও অসহায় পরিবারের আর্থিক সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন বাস্তবমুখী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, শতভাগ স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও সরকারের গৃহীত বাস্তবমুখী বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা এবং দারিদ্র্য কর্মসূচীর আওতায় যেমন-বয়স্ক ভাতা, বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্তা দুঃস্থ মহিলা ভাতা, চল্লি¬শ দিনের কর্মসূচীর সঠিক ভাবে প্রয়োগসহ ভিজিডি, ভিজিএফ কার্যক্রমে ডিজিটাল পরিমাপের মাধ্যমে তিনি (পিকলু) বেশ সফলতা অর্জন করেছেন। মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে ও তার সুফল প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে একজন কর্মী হিসেবে আমি কাজ করে যাচ্ছি মাত্র। তিনি দেশকে উন্নয়নের দিকে আরো একধাপ এগিয়ে নেয়ার জন্য প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ইউনিয়নবাসীর সেবা ও কার্যক্রম সম্পর্কে সিটিজেন চার্টার স্থাপন, রাজস্ব বৃদ্ধির উদ্যোগ, তথ্য প্রকাশ ও আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদের) স্থায়ী কমিটির পুনর্গঠন, জনসাধারনের চাহিদা অনুযায়ী স্থানীয় সরকারের সকল কাজে বিশেষ করে পরিকল্পনা প্রনয়নে সিদ্ধান্ত গ্রহন, সেবার মানোন্নয়ন এবং জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধি, কারিগরি বিদ্যালয় স্থাপন, গতানুগতিক রিলিফ বিতরনের পদ্ধতি বাতিল করে গরীব জনসাধারনের সরকারি রিলিফ বিতরনে স্বচ্ছতা এনে ডিজিটাল পরিমাপ যন্ত্রের ব্যবহারের জন্য গুরুত্বারোপ করেন। এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোগ ও সাফল্য ব্যাপক পরিসরে শুরু করতে পারলে প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থানীয় সরকার অনেক বেশি শক্তিশালী হবে বলেও তিনি (চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু) উল্লেখ করেন। বরিশাল জেলা প্রশাসক মোঃ শহীদুল আলম জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন স্বপ্ন নয় বাস্তব। দেশের প্রতিটি নাগরিক এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের গর্বিত অংশীদার। আইটি বিশেষ্ণদের মতে, সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করলেও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে এখনই ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া পৌঁছে গেছে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। সূত্রে আরো জানা গেছে, প্রযুক্তির উন্নতীর ফলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কৃষক সার, বীজ, সেচ, কীটনাশক প্রভৃতি বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, রোগীরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পারছেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ মাধ্যম আরো উন্নতী হয়েছে। প্রবাসী স্বজনদের সাথে ঘরে বসে স্কাপির মাধ্যমে ছবি দেখে কথা বলা, মোবাইলের এসএমএসের মাধ্যমে থানায় অভিযোগ দায়ের, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস, ট্রেনের টিকেট ক্রয়, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ইত্যাদির বিল পরিশোধ, ব্যাংকিং, প্রবাসীদের টাকা পাঠানো, মটরযানের কর ও ফি প্রদান, পরীক্ষার ফল প্রকাশ, চাকরির দরখাস্ত করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ফরম পূরণের সুযোগ পাচ্ছেন। এজন্য আগের মতো জনগণকে আর উপজেলা বা শহরে ছুটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না। আর এসব শুধু বর্তমান সরকারের ডিজিটালের সুফল হিসেবেই উল্লেখ করেন বিশেষ্ণরা।