জয়পুরহাটে একই পরিবারের ৪ জনকে কুপিয়ে হত্যা
২০ জুন, ২০১৫
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার হিলি সীমান্ত সংলগ্ন ভীমপুর-তালপাড়া আদিবাসী পল্লীতে শুক্রবার রাতে শ্বশুর বাড়িতে সুমন হেমরন (৩৬)নাামে এক মেয়ের জামাইয়ের হাতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন তার শ্বাশুড়ি সন্ধ্যারানী মার্ডি (৪৯), শ্যালিকা তেরেজা মার্ডি (১৮), ফুফুা শ্বশুর- মাইকেল (৫৩ ) ও তার নিজের ৬ বছরের শিশু সন্তান সানি । এ ছাড়াও তার চাপাতির আঘাতে গুরুত্বর আহত হয়ে এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছে ঘাতক সুমন হেমরনের স্ত্রী শশীলা মার্ডি।
এ ঘটনায় শনিবার ভোরে ঘাতক জামাই সুমন হেমরনকে আটক করেছে পাঁচবিবি থানা পুলিশ। আহত শশীলা মার্ডিকে উদ্ধার করে প্রথমে তাকে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি কার হয়। পরে সেখান থেকে তাকে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসাপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু আহত শশীলা মার্ডির অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটায় পরে সেখান থেকে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, নিহতরা সকলেই আদিবাসি পরিবারের সদস্য। কি কারণে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে তা তিনি তাৎক্ষণিক নিশ্চিত করে কিছু বলতে না পারলেও স্ত্রী শশীলা মাডির পরকীয়া প্রেমের কারণে এ নৃশস হত্যাকান্ড ঘটতে পারে। তবে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান। ঘাতক সুমন হেমরন জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার নওয়ানা গ্রামের নবীন হেমরমের ছেলে।
এলাকাবাসীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে সুমনের স্ত্রী- শশীলা মার্ডির সাথে প্রতিবেশি এক যুবকের পরকীয়া (প্রেমে) সর্ম্পক ছিল। সুমন স্ত্রীর এ অনৈতিক সর্ম্পকের বিষয়টি শ্বশুড়-শ্বাশুড়ীকে একাধিকবার জানালে এতে তারা কোনো কর্ণপাত করেনি। শুক্রবার রাতে সুমন শ্বশুর বাড়ীতে এসে স্ত্রীকে আগের মতই পরকীয়ায় জড়িত জানতে পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এ নিয়ে স্ত্রীর সাথে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে জামাই হেমরন রাগের মাথায় চাপাতি দিয়ে স্ত্রী শশীলা মার্ডি (২৯) কে আঘাত করে। এতে স্ত্রী গুরুত্বর আহত হয়। স্ত্রী মারা গেছে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে এর পরই সে একে একে নিজের শিশু সন্তান- সানি (৭), শ্বাশুরী- সন্ধ্যারানী মার্ডি (৪৯), শ্যালিকা তেরেজা মার্ডি (১৮)ও ফুফা শ্বশুর- মাইকেল (৫৩) কে কুপিয়ে ও গলাকেটে খুন করা হয়।
হত্যাকান্ডের খবর জানতে পেয়ে পুলিশ ভীমপুর আদিবাসী পল্লীতে গিয়ে ঘাতক সুমন হেমরনকে আটক করে এবং নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঁচবিবি থানায় নিয়ে যায়। অন্য দিকে আহত শশীলা মার্ডিকে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে পাঠিয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করে পুলিশ।
জানা গেছে, প্রায় ১২বছর আগে তার সাথে পাঁচবিবি উপজেলার হিলি সীমান্ত সংলগ্ন ভীমপুর আদিবাসী পল্লীর ফনি মাস্টারের মেয়ে শশীলা মার্ডিওর সাথে তার বিয়ে হয়। পরে তাদের সংসারে দুই ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়। তার মধ্যে বড় ছেলে সানি এ ঘটনা খুন হয়েছে। এ ঘটনার সময় সুমন হেমরনের শ্বশুর ফনি মাস্টার বাড়ির বাইরে ঢাকায় ছিলেন। ফনি মাস্টার ও তার জামাই সুমন হেমরন উভয়ে ঢাকায় পৃথক গার্মেন্টেসে চাকরি করেন বলে জানান স্থানীয়রা ।