জিএসপি স্থগিত শ্রমিকদের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত করবে: প্রধানমন্ত্রী
ডেস্ক: বাংলাদেশি পণ্যের জন্য জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রিফারেন্স (জিএসপি) সুবিধা স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে বোঝানোর জন্য দেশটির ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্সের যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপের এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিএসপি স্থগিতের ফলে তা জিএসপি কমপ্ল্যাইয়েন্স এবং শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিতের পরিবর্তে শ্রমিকদের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের কল্যাণ ও নিরাপত্তা এবং কমপ্ল্যাইয়েন্সের নামে জিএসপি সুবিধা স্থগিত সমর্থনযোগ্য নয়। কিছু দুর্ঘটনার কারণে জিএসপি সুবিধা স্থগিতও সমর্থনযোগ্য নয়। শিল্পক্ষেত্রে এ ধরনের দুর্ঘটনা বিশ্বের অন্যান্য স্থানে এমনকি উন্নত বিশ্বেও অনবরত ঘটে থাকে।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিয়েছে এবং আবারো তাদের বেতন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি এ প্রসঙ্গে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় নিহত গার্মেন্ট শ্রমিকদের পরিবার ও আহতদের আর্থিক সহায়তা প্রদানে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময়ে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেসসচিব বিজন লাল দেব ও মহাপরিচালক (জাতিসংঘ) সাদিয়া মুনা তাসনিম উপস্থিত ছিলেন।
মার্কিন প্রতিনিধিদল জানায়, তারা জিএসপি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে আগ্রহী। কারণ তারা মনে করেন, নীতিগত দিক থেকে জিএসপি বাতিল সঠিক হয়নি। শিগগিরই জিএসপি সুবিধা বাতিলের আদেশ প্রত্যাহারের আশা প্রকাশ করে চেম্বার নেতৃবৃন্দ বলেন, তারা ইতোমধ্যে মার্কিন সরকারকে তাদের মতামতের কথা জানিয়েছেন।
গত বছর ঢাকায় ২৬ মে থেকে ২৮ মে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। তারই ধারবাহিকতায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হল।
ইকবাল সোবহান জানান, বৈঠকে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এগিয়ে নিতে সরকারি ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি জানান, মূলত মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদল বলছে, বাংলাদেশ মার্কিন পণ্যের ক্রমবর্ধমান বাজার। তাই তারা বাংলাদেশের সঙ্গে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চায়।
মার্কিন দল মার্কিন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক এগিয়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। এছাড়া তারা ব্যবসা ও সরকারি নেতৃবৃন্দের মাঝে রাষ্ট্রীয় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠানে তাদের আগ্রহের কথা প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
বাংলাদেশের বিদ্যুত্, জ্বালানি ও সমুদ্র উপকূলে ড্রিলিং-এ মার্কিন বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, মার্কিন কোম্পানীগুলো জ্বালানি খাতে ভূতাত্ত্বিক জরিপ কার্যক্রম চালিয়ে যাচেছ। আর এর মাধ্যমে বাংলাদেশে নতুন তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
মার্কিন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের মনোভাবের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার বিশ্বাস করে-বেসরকারি খাত অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি,যেখানে সরকার সহায়কের ভূমিকা পালন করে।
তিনি বলেন, তার সরকার বিদ্যুত্ ও টেলিযোগাযোগসহ কিছু খাত বিদেশী বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। অথচ এর আগের সরকারের আমলে এসব খাত সুবিধাভোগীদের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণে ছিল। সূত্র:বাসস