জান্নাতি ৪ রমনী

03/01/2014 9:43 pmViews: 99
জান্নাতি ৪ রমনী

আল্লাহর রসুল (স) একবার চারটা দাগ কেটে ওনার সাহাবিদের জিজ্ঞেস করলেন ‘তোমরা কি জানো এগুলো কি?’ সাহাবিগণ উত্তর দিলেন ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভাল জানেন’।
রসুল (স) বললেন ‘এই চার দাগ হলো চারজন নারীর জন্য। আর এরা হলেন চারজন জান্নাতি নারী। সর্বশ্রেষ্ঠ চার জান্নাতি নারী হল খাদিজাহ বিনত খুআলিদ,ফাতিমাহ বিনতে মুহাম্মাদ, মারিয়াম বিনতে ইমরান,এবং আসিয়াহ বিনতে মুযাহিম ( ফেরাউনের স্ত্রী)।
হজরত খাদিজাহ হল প্রথম ব্যক্তি যিনি আল্লাহর রাসুলের প্রতি ইমান এনেছিলেন। কেন তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ নারীদের একজন বলা হয়েছে? এটাকি তাঁর ব্যবসায়িক সাফল্যের জন্য? তাঁর জ্ঞানের জন্য? ঠিক কি কারণে তাঁকে এই উপাধি দেয়া হয়েছে তা নিয়ে আমাদের গভীর ভাবে চিন্তা করা দরকার। বিশেষ করে আমাদের বোনদের।
আমার যদি এই চার মহীয়সী নারীর জীবন পর্যালোচনা করি তাহলে তাদের মধ্যে দুটি বিষয়ের মিল দেখি –
১। তারা অত্যন্ত মজবুত ইমানের অধিকারি ছিলেন। তাদের ইমান ছিল ইয়াকিনের পর্যায়ে। ইয়াকিন হল সেই রকম বিশ্বাস যাতে কোন ভাবেই চিড় ধরানো যায়না। যে অন্তরে ইয়াকিন আছে সে অন্তর চোখের দেখা, কানের শোনা কে উপেক্ষা করে তাঁর বিশ্বাসকে প্রাধান্য দেয়। তাদের সকলের ইমান যে ইয়াকিনের পর্যায়ে ছিল ,এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
ফিরাউনের স্ত্রী ,হজরত আসিয়াহ র উদাহরণ ধরুন। একজন মহিলা পৃথিবিতে যা চাইতে পারে তার সবই তাঁর ছিল। আরামদায়ক জীবন,ধন সম্পদ,ধনি ও প্রভাবশালী স্বামী,ক্ষমতা, দাসদাসী,খাদেম। কিন্তু ইমানের স্বার্থে,আল্লাহর জন্য তিনি এর সবই পরিত্যগ করতে রাজি ছিলেন।
তিনি বাস করতেন সে সময়ের সর্বোৎকৃষ্ট প্রাসাদে। কিন্তু তারপরও তিনি আল্লাহকে দোয়া করেছিলেন -(৬৬ – ১১.) আর ঈমানদারদের ব্যাপারে ফেরাউনের স্ত্রীর উদাহরণ পেশ করছেন। যখন সে দোয়া করলো,হে আমার রব,আমার জন্য তোমার কাছে জান্নাতে একটি ঘর বানিয়ে দাও …
আমাদের বুঝতে হবে হজরত আসিয়াহ একটি অত্যন্ত বিষাক্ত পরিবেশে ছিলেন,যা ছিল সব দিক থেকেই ইমানের পরিপন্থী। আল্লাহর শত্রুদের সাথেই ছিল তাঁর বসবাস। কুফরি শক্তিকে উপেক্ষা করে নিজেকে আল্লাহর পথে অটুট রেখে তিনি ইমানের এক অপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গিয়েছেন ।
আমরা অপর তিন জনের জীবন পর্যালোচনা করলেও একই রকম বলিয়ান ইমানের দৃষ্টান্ত দেখতে পাই।
২। তাদের মধ্যে দ্বিতীয় যে ব্যপারটি সাধারণ ছিল তা হোল তাঁরা সর্বশ্রেষ্ঠ মা অথবা স্ত্রী ছিলেন। এখন এই ব্যপারে নারীবাদীদের এবং আমাদের সেসব বোনদের যারা নারীবাদীদের দারা প্রভাবিত তাদের আপত্তি থাকতে পারে।
হজরত মরিয়ম বড় করেছিলেন হজরত ঈসাকে আর হজরত আসিয়াহ বড় করেছিলেন হজরত মুসা কে ।
হজরত খাদিজাহ কে আল্লাহ এত মর্যাদা দিয়েছেন তা কিন্তু এই জন্য নয় যে তিনি অনেক সফল ব্যবসায়ী ছিলেন।
বরং তিনি ছিলেন আল্লাহর রসুল মুহাম্মদ (স) এর অসাধারণ এক সহধর্মিণী। আল্লাহর রাসুলের (স) যখনি প্রয়োজন,তখনি তিনি পাশে পেয়েছিলেন হজরত খাদিজাকে। আল্লাহর রসুলের (স) নবুয়তের শুরুতে সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতিতে অবিচল সাহস আর প্রেরণা দিয়েছেন হজরত খাদিজাহ।
আর হজরত ফাতিমা ছিলেন আমিরুল মু’মিনিন হজরত আলির (র) সহধর্মিণী। হজরত আলি অত্যন্ত সাধারণ জীবনজাপন করতেন। ঘরের কাজ করতে হজরত ফাতিমাকে অনেক বেগ পেতে হত।
একবার তারা আল্লাহর রাসুল (স) এর কাছে একজন ভৃত্য প্রার্থনা করলেন। আল্লাহর রসুল (স) তাদের জবাবে বললেন আমি তোমাদের এরচেয়েও উত্তম কিছু শিখিয়ে দিচ্ছি। তোমরা শুতে যাবার আগে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ ,৩৪ বার আল্লাহু আকবর ও ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ বলবে।
ফাতেমাকে আল্লাহর রাসুল (স) অত্যন্ত ভালবাসতেন। তিনি বলেছিলেন ফাতিমা আমার একটি টুকরো। সে যাতে খুশি হয় ,আমিও তাতে খুশি হই। সে যাতে কষ্ট পায়,আমিও তাতে কষ্ট পাই। ফাতেমা ছিলেন আল্লাহর রাসুলের (স) একমাত্র জীবিত সন্তান।
আল্লাহর রাসুল (স) চাইলে ফাতেমাকে একজন কেন,দশ জন খাদেম দিতে পারতেন । কিন্তু তিনি তা না করে ফাতেমাকে উপদেশ দিলেন,ঘরের কাজ নিজের হাতে করে যেতে।
এবং এই কারণেই হজরত ফাতেমা চার সর্বশ্রেষ্ঠ নারীদের একজন। জ্ঞানের দিক থেকে হজরত আয়েশা( আল্লাহর রাসুলের স্ত্রী) খাদিজাহ ও ফাতেমার উপরে,কিন্তু মর্যাদার দিক থেকে উনি খাদিজাহ ও ফাতেমার সমকক্ষ ছিলন না।

– See more at: http://www.timenewsbd.com/news/detail/192#sthash.xeVfVEH7.dpuf

 

Leave a Reply