জাতীয় কবির ১১৭ তম জন্মবার্ষিকী আজ
আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৭তম জন্মবার্ষিকী। ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ, ১৮৯৯ সালের আজকের এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
দরিদ্রক্লিষ্ট কঠিন জীবন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠেন দুঃখী নজরুল। সেই দারিদ্র্যই তাকে করে তোলে মহান। এনে দেয় ‘অসংকোচ প্রকাশে দুরন্ত সাহস।’ প্রেম, দ্রোহ, মানবতাবাদ ও সাম্যের অমোঘ বাণী দিয়ে তিনি আলোড়ন তোলেন বাংলা সাহিত্যে। অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশির ঝঙ্কার তোলে উদিত হন ধূমকেতুরূপে।
‘বিদ্রোহী’ কবিতা লিখে চক্ষুশূল হন বৃটিশ রাজের। ১৯১২ সালের ৬ জানুয়ারি ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি ‘বিজলী’ পত্রিকায় প্রকাশের পর সাড়া পড়ে যায় সর্বমহলে। তার এ কবিতা দেশ ও কালের সীমা ছাড়িয়ে হয়ে ওঠে মানবতার মুক্তির কল্যাণের এক অমোঘ ঘোষণা।
ধর্মীয় সীমাবদ্ধতা আর জাতীয়তাবাদের ঊর্ধ্বে উঠে কবি বিশ্ব মানবতার স্বরূপ সন্ধান করেছেন তার লেখনীতে। কাজী নজরুল ইসলাম শুধু বিদ্রোহের কবি নন, তিনি প্রেমের কবি, সাম্য ও মানবতার কবি। নবজাগরণ, তারুণ্য, সত্য ও সুন্দরের কবি। গানে, কবিতায়, নাটকে, গদ্যসাহিত্যের সব শাখায় তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন জীবনের নানা চিত্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে তার লেখা কবিতা ও গান প্রেরণা জুগিয়েছে, উজ্জীবিত করেছে স্বাধীনতাকামী মানুষদের। জাতীয় কবির কৈশোর কেটেছে বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ববঙ্গে)। সুস্থ থাকাবস্থায় কবি অন্তত ৩০ বার বাংলাদেশে আসেন। ১৯৪২ সালের ৯ জুলাই কলকাতা বেতারে ‘রবিহারা’ কবিতাটি আবৃত্তি করতে গিয়ে কবি অসুস্থ হয়ে পড়েন। হয়ে যান বাকরুদ্ধ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অসুস্থ কবিকে দেশে নিয়ে আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তখন তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ঢাকায় থাকার ব্যবস্থা ও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয়। পরে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলে কবিকে দেয়া হয় একুশে পদক। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময়ে তাকে জাতীয় কবির মর্যাদা দেয়া হয়।
আজ জাতীয় কবির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারিভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নজরুল একাডেমি নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।