জাতিসংঘের পানি বিষয়ক প্যানেলে প্রধানমন্ত্রী
জাতিসংঘের পানি বিষয়ক প্যানেলে প্রধানমন্ত্রী
জাতিসংঘের পানি বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের প্যানেলে সদস্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২১শে এপ্রিল জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বিশেষ ওই প্যানেলে প্রধানমন্ত্রীসহ ১০ জন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানকে নিয়োগের ঘোষণা দেন। এ ছাড়া প্যানেলে বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে দুজনের নাম ঘোষণা দেয়া হয়। জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্যানেলের সদস্যদের নাম জানানো হয়। প্যানেলের সদস্যরা হলেন- মরিশাসের প্রেসিডেন্ট আমিনা গারিব (সহ-সভাপতি), মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এনরিকে পেনা নিয়েটো (সহ-সভাপতি), বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট জ্যানোস আদের, জর্ডানের প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ এনসৌর, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সাল এবং তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট এমোমালি রাহমন। এ ছাড়া বিশেষ উপদেষ্টা পদে নিয়োগপ্রাপ্ত দুজন হলেন- দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হ্যান সিউং সু এবং পেরুর পরিবেশ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ম্যানুয়েল পালগার ভিদাল।
এই প্যানেলের লক্ষ্য হলো, গত জানুয়ারিতে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে গৃহীত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৬’ (সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল ৬) এর বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে ‘কার্যকর পদক্ষেপ’ গ্রহণ করা।
জাতিসংঘ মহাসচিব বান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘দারিদ্র্য নিরসনে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাগুলোর অন্যান্য লক্ষ্যগুলো অর্জনে সকলের জন্য পানি ও পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।’
ইউএন প্রেস সেন্টারের রিপোর্টে বলা হয়, বর্তমানে মানসম্মত পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা ব্যবহারের সুযোগ বঞ্চিত রয়েছেন ২৪০ কোটি মানুষ। কমপক্ষে ৬৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বিশুদ্ধ খাবার পানি পাচ্ছেন না। অনুন্নত পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা, পানি ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা সংক্রান্ত বিষয় থেকে প্রতিবছর ৬ লাখ ৭৫ হাজার প্রাণ ঝরে যায় অকালে। এসব কারণে কিছু দেশে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ হয় জাতীয় প্রবৃদ্ধির প্রায় ৭ শতাংশ।
বন্যা ও খরা বৈশ্বিকভাবে বড় ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি বয়ে নিয়ে আসে। আর জলবায়ুর বৈচিত্র্যতা পানি সংক্রান্ত বৈরী পরিবেশ আরও ভয়াবহ করে তুলবে। এখন যেভাবে চলছে, বিশ্ব যদি সেভাবেই চলতে থাকে তাহলে আগাম ধারণা থেকে ইঙ্গিত মেলে যে, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ পানির ঘাটতির মুখোমুখি হবে বিশ্ব। এসবের পরিণতি প্রভাব ফেলবে বিশ্বজুড়ে।
পানি বিষয়ক জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের এই প্যানেল এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় নেতৃত্ব প্রদান করবে। একইসঙ্গে পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনায় সমন্বিত, অংশগ্রহণমূলক এবং পারস্পরিক সহায়তামূলক পন্থা খুঁজে বের করবে। ফলশ্রুতিতে বিশুদ্ধ পানি ও পয়নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে অবদান রাখবে এই প্যানেল।