জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউটের ভুয়া বিল ভাউচার তৈরীর মাষ্টার মাইন্ড হিসাব রক্ষক মাহাবুবুর রহমানের শাস্তিমূলক বদলী ঠেকাতে কোটি টাকা নিয়ে মাঠে নেমেছেন!
জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউটের ভুয়া বিল ভাউচার তৈরীর মাষ্টার মাইন্ড হিসাব রক্ষক মাহাবুবুর রহমানের শাস্তিমূলক বদলী ঠেকাতে কোটি টাকা নিয়ে মাঠে নেমেছেন!
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
জন স্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউটের (আই পি এইচ) শত শত কোটি টাকা দূর্নীতি ও লুটপাটের অন্যতম হোতা হিসাব রক্ষক মাহাবুবুর রহমানকে অবশেষে পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ-২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রশাসনিক কারনে শাস্তিমূলক বদলী করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বদলীর আদেশে দেখা যায়, ০৩ (তিন) কার্য দিবসের মধ্যে ছাড়পত্র গ্রহণ করিতে হইবে, অন্যথায় ৪ কর্ম দিবসের দিন থেকে সরাসরি ষ্টান্ড রিলিজ পাইয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে। গত ০৫/০৮/২০২১ইং তারিখ অপরাহ্নে জন স্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউট ভয়ংকর এই দূর্নীতিবাজকে ছাড়পত্র প্রদান করেন। গত ০৩/০৮/২০২১ইং তারিখ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বদলী আদেশ জারী এবং ০৫/০৮/২০২১ইং তারিখ জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউট থেকে ছাড়পত্র প্রদান করা হলেও তিনি কর্তৃপক্ষের এই আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে তার বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদান না করে এই শীর্ষ দুর্নীতিবাজ মাহাবুব স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের কাছে বদলী ঠেকানোর জন্য ব্যাপক তদবির চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি দাম্ভিকতার সাথে বলে বেড়াচ্ছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাকি তার নিকট আত্মীয়। কত কোটি টাকা লাগবে বদলী ঠেকাতে আমি তত টাকা দিয়ে হলেও আমার বদলীর আদেশ বাতিল করে জন স্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউটে আবার ফিরে আসবো। দেশের একমাত্র স্যালাইন উৎপাদনকারী সরকারী প্রতিষ্ঠান জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউট (আই পি এইচ) দীর্ঘদিন ধরে দূর্নীতিবাজ মাহাবুব সিন্ডিকেট রাম রাজত্ব চালিয়ে আসছে। এই দূর্নীতিবাজ চক্র বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে ক্যাশ পারসেজ, কোটেশান, টেন্ডার বাণিজ্য, আউট সোসিং নিয়োগ, ভুয়া বিল-ভাউচার সহ নানান অপকর্মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে শত কোটি টাকার মালিক বনে গিয়েছেন। এই দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের মূল হোতা মাহাবুব। শুধু তাই নয়, এক সময় এই প্রতিষ্ঠান থেকে আইভি ফ্লুইড, ৩% সোডিয়াম ক্লোরাইড স্যালাইন সহ ১৭ প্রকার বিভিন্ন ধরনের স্যালাইন উৎপাদন করে দেশের ৪০% চাহিদা পুরন করতেন কিন্তু গত ০৩ বৎসর যাবৎ অতি সুকৌশলে সকল প্রকার স্যালাইন এবং বøাড ব্যাগ উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।জীবন রক্ষকারী দেশের একমাত্র সরকারী প্রতিষ্ঠান জনস্বাস্ত্য ইনষ্টিটিউটে দক্ষ জনবল, আধুনিক মেশিনারীজ বিদ্যমান থাকা স্বত্তে¦ও মাহাবুব সিন্ডিকেট চক্রান্তমূলক ভাবে আজ ধ্বংশের দারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন। এজন্য শুধু শাস্তিমূলকভাবে বদলী কিংবা লঘুদন্ড প্রদানই যথেষ্ট নয় তাকে চাকুরিচ্যুত, জেল- জরিমানা সহ আরো কঠোর শাস্তি হওয়া উচিৎ ছিল বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন। আই পি এইচ এর ভাইরোলজিষ্ট শাখায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান যে, মাহাবুব ভাইলোজিষ্ট শাখার পুরাতন পিসিআর মেশিনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি রং করে তার নিজস্ব মনোনিত ঠিকাদারের মাধ্যমে সরবরাহ করেছেন যা বর্তমানে অকার্যকর।
মাহাবুব ১৯৯২ইং সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৮ বছর ধরে একই পদে কর্মরত রয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলী হলেও মাহাবুব সর্বদা রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে। উক্ত প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসাবে যখন যিনি যোগদান করেন তাদেরকে বিভিন্ন রকমের উপঢেীকন দিয়ে ম্যানেজ করে ফেলে তার পর শুরু করেন নিজের ইচ্ছামত লুটপাট আর দূর্নীতি। দৈনিক সরেজমিন পত্রিকায় এই শীর্ষ দূর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে অসংখ্যবার দূর্নীতির খবর প্রকাশিত হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তার বিরুদ্ধে কয়েকটি তদন্ত কমিটি গঠন করলেও তিনি সেই সমস্ত তদন্ত কমিটির সদস্য বৃন্দকে তার পালিত গুন্ডাবহিনীকে দিয়ে ভয় ভীতি এমনকি প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে তদন্ত ভুন্ডল করে দিয়েছেন। কোন তদন্ত কমিটি তার বিরুদ্ধে কখনই তদন্ত করতে সাহস পাননি। সর্বশেষে ডাঃ হারুনার রশিদ, উপ-পরিচালক অর্থ ও সহকারী পরিচালক সৃঙ্খলা ডাঃ হিলিশ রঞ্জন সরকারকে দিয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন দতন্ত কমিটি গঠন করা হইলে তাঁরা সব ধরনের ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে দুর্নীতিবাজ মাহাবুব এর বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগসমুহ সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণীত হলে মাহাবুবের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের মধ্যে সাড়ে ছয় কোটি টাকা আত্মসাৎ, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের যায়গা দখল করে ঘরবাড়ী নির্মাণ করে নিজে বসবাস করেন এবং প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ভাড়া পান। সেই প্রেক্ষিতে গত ০৪/০৮/২০২১ইং তারিখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রশাসনিক আদেশে দেখা যায় সরকারী কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৩(খ) এবং ৩(ঘ) বিধি অনুযায়ী অসদাচরণ ও দূর্নীতির অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় অভিযোগের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি বিবেচনা করে তার বিরুদ্ধে দন্ডাদেশ প্রদান করেন। ক) দূর্নীতিবাজ মাহাবুবের ২টি বার্ষিক বর্ধিত বেতন স্থগিত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে উক্ত বার্ষিক বর্ধিত বেতনের বকেয়া দাবী করিতে পারিবে না। খ) “ক” বর্ণিত আদেশটি তাঁর চাকুরী বহিতে “লাল কালি” দিয়ে লিপিবদ্ধ করার আদেশ প্রদান করেছেন। এই প্রতিবেদক পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ ২০ সয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তাঁরা জানিয়েছেন, বদলিকৃত কর্মচারী অদ্যবদি যোগদান করেন নাই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বদলীর আদেশ অমান্য করে ১(এক) জন ৩য় শ্রেণীর কর্মচারী প্রতি দিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয়ে তার পালিত গুন্ডা বাহিনীদেরকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কি করে জনমনে একটাই প্রশ্ন? দূর্নীতিবাজ মাহাবুব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাজার কোটি টাকার কেরানি আফজাল ও শতকোটি টাকার মালিক ড্রাইভার আব্দুল মালেকের সেকেন্ড ইন কমান্ড বলে জানা যায়। এই প্রতিবেদক মাহাবুবুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।