বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সোচ্চার কণ্ঠে আমরা উচ্চারিত করবো, আর নয়। তুমি (সরকার) যাও। এনাফ ইজ এনাফ। এখন দয়া করে (ক্ষমতা) ছেড়ে দিয়ে জনগণের একটা রাষ্ট্র, সরকার ও সংসদ তৈরি করার ব্যবস্থা করে দাও। অন্যথায় তুমি পালানোর পথটাও খুঁজে পাবে না। মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘গণসংহতি আন্দোলনের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একদফার ভিত্তিতে গণঅভ্যুত্থান গড়ে তুলুন’ শীর্ষক এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে বড় দল, ছোট দল, মাঝারি দল, এটা বড় কথা নয়। বিএনপি, নাগরিক ঐক্য না কি গণসংহতি, না কি গণতন্ত্র মঞ্চ- এটা বড় কথা নয়। বড় হচ্ছে আমাদের দেশ ও মানুষ আজকে বিপদগ্রস্ত ও বিপন্ন। এই অস্তিত্বকে রক্ষা করা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব।
সেই দায়িত্ব নিয়ে আমাদের সামনে এগিয়ে আসতে হবে। ফখরুল বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর আওয়ামী লীগের শাসনে অত্যন্ত পরিকল্পিত ও সুচিন্তিতভাবে জনগণের অধিকারগুলোকে কেড়ে নেয়ার জন্য একটা আইনগত ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। আর আওয়ামী লীগের চরিত্র হচ্ছে, তারা ক্ষমতা এককভাবে ভোগ করতে চায়। আর সেখানে জনগণ তাদের কাছে কোন ব্যাপার না।
তিনি বলেন, এবারের আন্দোলনে একটা পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তন এসেছে, আমরা যে রাজনৈতিক দলগুলো একসঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করছি- আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি, আমরা একদফা দিয়েছি। অর্থাৎ এই সরকারের পতন।
জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, এই সরকারের পতন অবশ্যই হবে। পতন ঘণ্টা বেজে গেছে। তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবেও বিচ্ছিন্ন। সুতরাং সেপ্টেম্বর মাসে যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামি তাহলে এই সরকার পালাবার পথ পাবে না। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এখন আমাদের সময়। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক যুদ্ধে হেরে গেছে। সারা পৃথিবী তাদের পদত্যাগ চায়। তারা পৃথিবীর কাছে ঘৃণিত। সভাপতির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রকে দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। এরমধ্যে দিয়ে রাষ্ট্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে তারা হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ দেশকে অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়াত্বের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণফোরাম একাংশের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।