জঙ্গিরা যেভাবে পালানোর পরিকল্পনা করে
ছিনতাই হওয়া জঙ্গি নেতাদের পুলিশের হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা হয় প্রায় এক মাস আগে। তবে গত ১৫ দিন ধরে বাইরে থাকা জঙ্গিদের সঙ্গে নিয়মিত মোবাইলফোনে যোগাযোগ রেখে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যায় জঙ্গিরা। সেই মোবাইলফোনের কললিস্টের সূত্র ধরেই ধরা পড়ে জঙ্গি রাকিব।গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, জঙ্গিদের আদালতে হাজির করা হলে সেখানেই তারা পরস্পরের যোগসাজশে জেল থেকে পালানোর পরিকল্পনা করে। সর্বশেষ একটি মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে গিয়ে বোমারু মিজান বন্দী সালেহীন ও রাকিবকে বলে বহুদিন হয়ে গেল আর জেলখানার জীবন ভালো লাগছে না, চল জেলখানা থেকে পালিয়ে যাই। সালেহীন ও রাকিব প্রথমে রাজি না হলেও পরে বোমারু মিজানের কথায় রাজি হয়ে যায়। এরপর থেকে বোমারু মিজান বাইরে থাকা জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে দেয়। গত ১৫ দিন আগে টাঙ্গাইল আদালতে হাজিরার তারিখ জানার পর তারা পালানোর ছক তৈরি করে। পালানোর পর ফের গ্রেফতার হওয়া জেএমবি সদস্য হাফিজ মাহমুদ রাকিব হাসান ও তাকে সহায়তাকারী জঙ্গি জাকারিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, কারাগারে থাকা মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত জেএমবি সদস্যদের ছিনতাইয়ের চূড়ান্ত পরিকল্পনা করা হয় ১৫ দিন আগে। এ জন্য তারা দুটি নতুন মাইক্রোবাস কেনে। গতকাল সকালে ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজনভ্যান থেকে আসামি ছিনতাইকালে ওই তিনটি মাইক্রোবাস ব্যবহার করা হয়। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, জেলখানা আদালত কিংবা পথ সর্বত্রই তারা ফোনে কথা বলার সুযোগ পায়। এর মধ্যে কখনো নিজের ফোন কখনো পুলিশের কখনো বা আদালতে দেখা করতে আসা স্বজনদের ফোন তারা ব্যবহার করে থাকে। রাকিব হাসান জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার বংশিবেলতলী গ্রামের সোবহানের ছেলে। সে তিন মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এ তিন মামলার একটি মৃত্যুদণ্ড, একটিতে যাবজ্জীবন ও অন্যটিতে ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি সে। টাঙ্গাইল জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম এ বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়ে বলেন, আসামিরা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনার বিষয়টি ১৫ দিন আগের বললেও তা বিশ্বাস করা যায় না। এটি দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা বলেই ধারণা পুলিশের। এর আগে গতকাল বিকাল পৌনে ৩টার দিকে সফিপুরের তক্তারচালা এলাকা থেকে পুলিশ রাকিব ও জাকারিয়াকে গ্রেফতার করে।
সৃত্র: বালাদেশ প্রতিদিন