জঙ্গিবাদ রুখতে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান ফখরুলের

জঙ্গিবাদ রুখতে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
জঙ্গিবাদ নিয়ে অপরাজনীতি করা হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সারা বিশ্বেই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে উঠলেও আমাদের দেশে সরকারের সংকীর্ণতার কারণে এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠছে না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, সরকারের সংকীর্ণতা ও গণতন্ত্রহীন অবস্থা চলতে থাকলে উগ্র ও জঙ্গিবাদীরা সুযোগ নেবে। জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদীরা যেন মাথাচাড়া নিয়ে উঠতে না পারে সে জন্য গণতন্ত্র থাকতে হবে।
জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদ রুখতে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য সবার অংশগ্রহণে একটি জাতীয় নির্বাচন প্রয়োজন। গত নির্বাচন দেশ ও আন্তর্জাতিকভাবে কেউ গ্রহণ করেনি। আমরা বারবার বলছি, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আলোচনা প্রয়োজন। আলোচনার মাধ্যমে গণতন্ত্র বিকশিত হয়।
দুই বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনা তদন্তে রাজনৈতিক সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এই ঘটনায় বিএনপি নেতাদের হয়রানি না করারও আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া কিছু বিষয় নিয়ে আমরা গভীর উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে দুই বিদেশী নাগরিক হত্যার ঘটনায় আমরা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে দেশকে রক্ষায় প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হল, জাতির এ অবস্থায় অপরাজনীতি করা হচ্ছে। ফলে জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠছে না। সে ঐক্যে দেশের রাজনীতিক, সুশীল সমাজ, শিক্ষক, পেশাজীবী সমাজ ও আমাদের আলেম-ওলামারা থাকবেন।
ফখরুল বলেন, আপনারা জানেন, এর আগেও আমাদের দেশে জঙ্গিবাদের সূচনা হয়েছিল। সে সময় আমাদের আলেম-ওলামারা মসজিদে মসজিদে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ভূমিকা রেখেছেন। তাদের সহযোগিতায় আমরা দেশ থেকে সফলভাবে জঙ্গিবাদ নির্মূলও করেছি। পরিতাপের বিষয়, আজকে সরকারের একটি অংশের সঙ্গে আরেকটি অংশের কথার কোনো মিল নেই। একটি অংশ বলছে, দেশে আইএসের মত ভয়ংকর জঙ্গি গোষ্ঠীর অস্তিত্ব আছে। আবার আরেকটি অংশ বলছে নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সাহসের সঙ্গে অতীতে সব সমস্যার সমাধান করেছে, এখনও করবে। সরকার যদি দেশ ও দেশের মানুষকে ভালবাসে, স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে তাহলে তারা জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার উদ্যোগ নেবে। সরকার যেহেতু চালকের অবস্থায় রয়েছে-সেহেতু জাতীয় ঐক্য গঠনে তাদেরই উদ্যোগ নিতে হবে।
এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, দলের মুখপাত্র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।