ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীদের চাকরির দাবিতে অচল ইবি
ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীদের চাকরির দাবিতে অচল ইবি
চাকরির দাবিতে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী ও বহিরাগতদের অবরোধের মুখে অচল হয়ে পড়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। গত সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। মঙ্গলবারও ক্যাম্পাসে কোন ধরনের কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়নি। ক্যাম্পাসের অচলাবস্থা নিরসনে কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। এদিকে প্রশাসনের নিরবতার দরুন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-শৃংখলা অবনতির আশংকা করছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানায়, সকাল থেকেই বহিরাগত সাবেক ছাত্রলীগের ১৫/২০ জন তাদের চাকরির দাবীতে মেইন গেটে অবস্থান নিয়ে ক্যাম্পাস অবরোধ করে রাখে। সকাল ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটে, প্রশাসন ভবনের মুল ফটকে, ভিসি, ট্রেজারার, ও রেজিস্ট্রার অফিস, ইবি শাখা অগ্রনী ব্যাংকসহ সকল অফিসে তালা লাগিয়ে দেয় চাকরি প্রত্যাশীরা। এদিকে মঙ্গলবার অর্থনীতি বিভাগের নিয়োগ বোর্ডের ভাইভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। অনিবার্য কারণ বসত নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পরিবহণ অফিস ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার বিকেল থেকে বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচল। ফলে অচল হয়ে পড়েছে ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাস ছিল শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারি শূন্য। দুইটি বিভাগের পরীক্ষা ছাড়া অন্য কোন বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় নি। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কয়েকটি বিভাগের পূর্ব নির্ধারিত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
ক্যাম্পাস অচল হয়ে পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসাইন অভিযোগ করে বেলন- “র্দীঘ দিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।। আবার পরীক্ষা স্থগিত হওয়াতে আমাদের চরম ক্ষতি হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আবারো আমাদেরকে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।”
তালাবদ্ধ ভিসির অফিস
বিভিন্ন বিভাগের একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন-বর্তমান প্রশাসন টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার জন্যই এই অচল অবস্থা সৃষ্টি করে রেখেছে। বারবার ক্যাম্পাসে অচলাবস্থা সৃষ্টি হলেও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা তাদের দুর্নীতি বন্ধ করছেননা। এখন ক্যাম্পাসে যে অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে আবারো দীর্ঘমেয়াদী অস্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে। এটি বর্তমান প্রশাসনের জন্যও শুভকর নয়। সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে দুর্নীতি বন্ধ করে ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তারা।
অন্যদিকে ক্যাম্পাসের অচলাবস্থার নিরসন না হলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ ভিসি প্রফেসর ড. আব্দুল হাকিম সরকারের সাথে দেখা করে এ হুমকি দেন।
অবরোধকারীরা অভিযোগ করেন, হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতির পর এবার অর্থনীতি বিভাগের নিয়গে প্রশাসন বড় অংকের বাণিজ্য করছে। ভাইভার আগেই নিজ নিজ প্রার্থীদের প্রার্থীতা চূড়ান্ত করাছে প্রশাসনের কর্তারা। আমরা এই ধরনের দুর্নীতি চাইনা। আমরা চাই যোগ্য ও মেধাবীরা নিয়োগ পান।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. মামুনুর রহমান জানান-“আমরা ক্যাম্পাসে পরিবহন চলাচল সাভাবিক করার জন্য জোড় প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি পরিবহন সচল হবে।”
ইবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান ক্যাম্পাস অচলের ব্যাপারে বলেন- আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারারের সাথে ক্যাম্পাস সচলের ব্যাপারে দেখা করেছি এবং তাদেরকে অতি দ্রুত ক্যাম্পাস সচল করার জন্য আল্টিমেটাম দিয়ে এসেছি। দ্রুত ক্যাম্পাস সচল না হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব। কারন এভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল হাকিম সরকার জানান-“ আমরা দ্রুত ক্যাম্পাস সচল করার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। আশা করছি তাড়াতাড়ি সমাধান হয়ে যাবে।”