চীন সফর করছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র চীন সফর করছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ সময়ে তিনি পশ্চিমাবিরোধী একটি জোট গড়ে তোলার প্রচেষ্টা বৃদ্ধি করবেন। একইসঙ্গে চীন-রাশিয়া বন্ধুত্বকে উদযাপন করবেন। গত বছরের শুরুতে শীতকালীন অলিম্পিক উদ্বোধনের সময় বেইজিং সফর করেছিলেন পুতিন। তখন তিনি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ঘোষণা দিয়েছিলেন দুই দেশের মধ্যে নতুন এক ‘সীমাহীন’ অংশীদারিত্ব। এবার আবার রাশিয়ার সেই নেতা ফিরেছেন চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে। মঙ্গলবার সকালে তার বেইজিং পৌঁছার কথা। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি, বিবিসি। এই সফরের ফল কি হবে, সম্পর্ক কতটা গাঢ় হবে তা নিয়ে প্রশংসায় ভাসছে চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়াগুলো। এ সপ্তাহে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) এক ফোরামে ১৩০টি দেশের প্রতিনিধিকে স্বাগত জানিয়েছে চীন। তারা মনে করছে এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে তাদের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে।
ক্রেমলিন থেকে বলা হয়েছে বিআরআই ফোরামের এক ফাঁকে বুধবার পুতিন ও শি’র মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এটা তখনই ঘটবে যখন বৈশ্বিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর শিরোনামে প্রাধান্য পাবে হামাসের সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধ। ৭ই অক্টোবর গাজা থেকে হামাস কয়েক হাজার রকেট হামলা চালায় ইসরাইলে। এতে কমপক্ষে ১৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরাইল। এর জবাবে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ইসরাইল। এই যুদ্ধের কারণে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে গেছে। পুরো গাজায় এক ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। ইসরাইলের বোমা হামলায় সেখানে কমপক্ষে ২৭৫০ জন মানুষ মারা গেছেন। এর বেশির ভাগই বেসামরিক। কিন্তু গাজা-ইসরাইল যুদ্ধ নিয়ে বিবৃতিতে হামাসের নাম উল্লেখ না করায় বেইজিংয়ের সমালোচনা করেছেন পশ্চিমা নেতারা। এ নিয়ে রোববার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে কথা বলেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ধরে রাখার জন্য চীনকে তার প্রভাব ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন ব্লিঙ্কেন।
ওদিকে সোমবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই একই সুরে কথা বলেছেন। বিআরআই ফোরামের সামিটে পুতিনকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ করার জন্য চীনের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন ল্যাভরভ। মস্কো থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। পরে আরও বলা হয়, বেইজিং থেকে উত্তর কোরিয়া যাবেন সের্গেই ল্যাভরভ। তার আগে তিনি ওয়াং ই’কে বলেছেন, বৈঠকে নিজেদের দেশের সব বিষয়ে আলোচনা করবেন পুতিন ও শি। ওয়াং ই বিআরআই-এ সমর্থন দেয়ার জন্য রাশিয়ার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, উভয় পক্ষ কর্মকাণ্ডের সূচনা পরিকল্পনা করবে, বৃদ্ধি করবে কৌশলগত পারস্পরিক আস্থা, বৃদ্ধি করবে বর্তমানের বন্ধুত্বকে। এই বন্ধুত্ব প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দেয়া হবে।