চিকিৎসক-শিক্ষকরা কর্মস্থলে না থাকলে বরখাস্ত: প্রধানমন্ত্রী
কর্মস্থলে না থাকলে সরকারি চিকিৎসক এবং শিক্ষকদের বরখাস্তের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় সংসদে বুধবারের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যারা চাকরি নিয়ে কর্মস্থলে না থাকে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
“যারা চাকরি পেয়ে কর্মস্থলে থাকবে না, তাদের বিদায় দিয়ে নতুনদের নিয়োগের ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
চট্টগ্রাম-১৪ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এডহক ভিত্তিতে চিকিৎসক নিয়োগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “আমাদের অনেকের প্রবণতা আছে। কর্মস্থল থেকে অনেকেই রাজধানীতে চলে আসে। তাদের তো চাকরি করার দরকার নাই।
“আর, শিক্ষকদের একই অবস্থা। বেসরকারি হলে ঠিকই থাকে, সরকারি হলে শহরে না থাকলে ইজ্জত থাকে না- এমন একটা প্রবণতা।”
চিকিৎসকদের কর্মস্থলে না থাকার অভিযোগ অনেক দিনের। এনিয়ে গতবারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হকের পর বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমও চিকিৎসকদের হুঁশিয়ার করে আসছেন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর প্রস্তাব নাকচ করে দেন।
তিনি বলেন, “সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩২ করলে ছাত্র থাকে না, মধ্য বয়সে চলে আসে। তখন মনোযোগ কিভাবে থাকে।”
ছাত্রদের সরকারি চাকরিপ্রার্থীদের মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩২ থেকে বাড়ানোর দাবিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একদল শিক্ষার্থী নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে।
এছারাও সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করতে পারে সরকার। জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া নতুন অর্থবছরে এই ঘোষণা আসতে পারে বলে বুধবার সংসদকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর মো. ফরাসউদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন পর্যালোচনার কাজ শুরু করেছে, ইতিমধ্যে দু’বার মিটিং করেছে এই কমিটি।
আগামী ছয় মাসের মধ্যে কমিটি তাদের সুপারিশ পেশ করবেন বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর সেশনে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। সিলেট-৫ আসনের এমপি সেলিম উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, কমিশনের সুপারিশ মোতাবেক তার সরকার আসছে অর্থবছরে নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, গঠিত কমিশনের মেয়াদ ছয় মাস, কিন্তু কাজ শুরু করতে কমিশনের অনেক দেরি হয়েছে। গত বছর বিএনপি-জামায়াত-ই-ইসলামী জোটের তৈরি প্রতিবন্ধকতাই কমিশনের কাজে দেরি হওয়ার কারণ।
অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে সরকার জুলাই ২০১৩ থেকে সরকার ২০% মহার্ঘভাতা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। এই ব্যবস্থায় সরকারি চাকরিজীবীরা সর্বনিম্ন ১৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৬০০০ টাকার বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
বিভিন্ন পেশাজীবীদের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে গঠিত কমিশন প্রয়োজনীয় তথ্য এবং পরামর্শ নিচ্ছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ৬ সদস্যের একটি পরিবারের ব্যয় বিবেচনা করে কমিশন তার সুপারিশ সরকারের কাছে পেশ করবে।