চাঞ্চল্যকর বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ঈদ করতে এসে গ্রেপ্তার
চাঞ্চল্যকর বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ঈদ করতে এসে গ্রেপ্তার
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা থেকে ঢাকার চাঞ্চল্যকর বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আলাউদ্দিনকে (৩৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ উপজেলার মোকামতলা বাজার সংলগ্ন আলাউদ্দিনের শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। আলাউদ্দিন শ্বশুরবাড়িতে ঈদ করতে এসেছিলেন।
আলাউদ্দিন পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার ছোট ধাপ গ্রামের হবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি ২০১২ সালে বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পলাতক ছিলেন। গ্রেপ্তারের বিষয়ে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক কুমার দাস বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার ভোর রাতে মোকামতলায় আলাউদ্দিনের শ্বশুর কাজী নুরুল ইসলামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শ্বশুরবাড়িতে ঈদ উদযাপন করতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রীসহ বেড়াতে আসেন তিনি। শুক্রবার রাতে কর্মস্থল কক্সবাজার জেলার টেকনাফে চলে যেতেন। আলাউদ্দিন টেকনাফে এনজিও’তে চাকরি করেন। তার স্ত্রী নাহিদ ফেরদৌস টেকনাফে একটি বিদেশি সাহায্য সংস্থায় চাকরি করেন। সেখানেই আলাউদ্দিনের সঙ্গে পরিচয় হলে ২০১৬ সালে তারা বিয়ে করেন।
এর আগে, আলাউদ্দিন গাজীপুরে একটি পোল্ট্রি ফার্মে চাকরি করতেন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতেন এবং ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
২০১২ সালে আলাউদ্দিন যখন বিশ্বিদ্যালয়ের ৩য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন তখন সেই বছরের ৯ই ডিসেম্বর আলাউদ্দিনসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে প্রকাশ্যে দর্জি দোকান কর্মচারী বিশ্বজিৎ দাসকে হত্যা (২২) করেন।
কোনো কারণ ছাড়াই হত্যা করা হয় বিশ্বজিৎকে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্বজিতের ভাই উত্তম দাস ঢাকার সূত্রাপুর থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্ত শেষে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করলে ২০১৩ সালের ১৮ই ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ২১ জন আসামির মধ্যে আট জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারদণ্ড প্রদান করেন। ২১ জন আসামির মধ্যে আটজন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় এবং অপর ১৩ জন ঘটনার পর থেকেই পলাতক।
পরে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পক্ষে আপিল করা হলে হাইকোর্ট দু’জনের মৃত্যুদন্ড বহাল রাখেন এবং চার জনের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা এবং দু’জনকে খালাস দেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের মধ্যে আলাউদ্দিন একজন। বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের সময় তার বয়স ছিল ২৬ বছর। মামলার এজাহারে আলাউদ্দিন ৪নং আসামি ছিলেন।