চট্টগ্রামে মঞ্চে মেয়রকে দেখে মহিউদ্দিন বললেন ‘নাছির ভাই, ইক্কে আইয়্যুন’
চট্টগ্রামে মঞ্চে মেয়রকে দেখে মহিউদ্দিন বললেন ‘নাছির ভাই, ইক্কে আইয়্যুন’
চট্টগ্রামে গত ১৫ দিন ধরে উত্তাপ ছড়ানোর পর অবশেষে মেয়র নাছিরকে কাছে টেনে নিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী। এই দৃশ্য গতকাল সোমবার বিকেলে দেখেছেন অন্তত ১০ হাজার মানুষ। শহীদ মিনার চত্বরে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় নাছিরকে কাছে টেনে নেন মহিউদ্দিন। এই সময় তারা দু’জন একে অপরের হাতে ধরে একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দেন। নেতাকর্মীরা মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে তাদের এই ‘পুনর্মিলন’কে স্বাগত জানায়। এরমধ্য দিয়ে নগর আওয়ামী লীগের এই নেতার কয়েক মাস ধরে চলা চরম বিরোধের আপাতত অবসান ঘটলো বলে মনে করেন দলের নেতাকর্মীরা। নাছিরকে উদ্দেশ্য করে মহিউদ্দিন বলেন, ‘আসুন, আমরা সবকিছু ভুলে গিয়ে মিলেমিশে কাজ করি।’ গতকালের সভাকে ঘিরে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিনের অনুসারি নেতাকর্মীদের মধ্যে সীমাহীন উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। চরম উৎকণ্ঠায় ছিলেন সাধারণ নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে আগ্রহের কমতি ছিলো না নগরবাসীর মধ্যেও। ফলে সভায় যাতে কোন ধরনের সংঘর্ষ কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য শহীদ মিনার চত্বর সংলগ্ন সড়কের দু’পাশে ও সভাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।তবে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন সবাই। সভার শেষ পর্যায়ে সভাপতির বক্তব্য রাখছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। বক্তব্যের শেষের দিকে তিনি বলেন, ‘তিনি বলেন, ‘পদের জন্য প্রতিযোগিতা থাকবে। কিন্তু তা নিয়ে খুনোখুনি, মারামারি নয়। বক্তব্যে অনেক কথা বলেছি। অনেক হয়েছে। আর নয়। কেন বলেছি, এখন আরা না-ই বললাম।’ এ সময় মঞ্চে বসা নাছিরকে উদ্দেশ্যে বলেন, ‘নাছির ভাই, ইক্কে আইয়্যুন, (নাছির ভাই এদিকে আসুন)।’ কাছে যেতেই নাছিরকে নিজের দিকে টেনে মহিউদ্দিন। নেতাকর্মীদের দেখিয়ে দু’জন হাত ধরাধরি করেন এবং ওপরের তুলে ধরেন। তখন নাছিরও মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ঘোষণা দিলে আনন্দে ভাসেন নেতাকর্মীরা।
নাছিরকে উদ্দেশ্য করে মহিউদ্দিন আরো বলেন, ‘আমাদের কিছু কথার অমিল হতে পারে। কথা কাটাকাটি হতে পারে। কিন্তু তা নিয়ে যুদ্ধ নয়। আমি অনেক সময় গুছিয়ে বলতে পারি না।’ তবে তিনি বলেন, ‘আমি মহিউদ্দিন জীবিত আছি। তাই ঝুঁকি নিয়ে হলেও রাজনীতি করে যাবো।’ নাছিরের সঙ্গে সম্পর্কে অবনতির জন্য সাংবাদিকদেরও দোষারোপ করে মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরাও আমাদের ভাই। আমরা ভুল করতে পারি। ভুল হলে সংশোধন করে দেবেন। যাতে আমাদের মধ্যে ফাটল না হয়। ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে লাভ হবে না।’ বিকেল পাঁচটার দিকে সভাস্থলে আসেন মহিউদ্দিন। এর কিছুক্ষণপর আসেন নাছির উদ্দিন। একে অপরের সঙ্গে সামান্য কুশল বিনিময় করে পাশাপাশি বসেন তারা। এরপর সভায় তারা কী বলেন তা নিয়ে উদগ্রীব ছিলেন নেতাকর্মীরা। সভা শেষে এক সঙ্গে বেরিয়ে যান মহিউদ্দিন-নাছির। সভায় মহিউদ্দিন চৌধুরী ও নাছির উদ্দিন মুজিব নগর দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। সভায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।