গ্যাস-লাইন বাংলাদেশ পর্যন্ত সম্প্রসারিত হতে পারে
গ্যাস-লাইন বাংলাদেশ পর্যন্ত সম্প্রসারিত হতে পারে
ইরান থেকে পাকিস্তান হয়ে ভারত পর্যন্ত যে গ্যাস পাইপলাইন হবে তা বাংলাদেশ পর্যন্ত সম্প্রসারিত হতে পারে। ত্রি-দেশীয় এই গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ উপকৃত হতে পারে। ঢাকায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আব্বাস ভায়েজি দেহনবি মঙ্গরবার সকালে আয়োজিত জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত ‘ডি-ক্যাব টক’-এ এই তথ্য জানান। ডি-ক্যাব ঢাকায় কর্মরত কূটনীতিক সংবাদকর্মীদের সংগঠন।
ইরানের রাষ্ট্রদূত আব্বাস ভায়েজি দেহনবি বলেন, ‘বিশ্বের ছয় রাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু ইস্যূতে যে সমাঝোতা ঘটেছে তা ইতিবাচক। এই সমাঝোতা বিশ্বে শান্তি বয়ে আনবে। সমাঝোতার ফলে ইরানের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল তা ধারাবাহিকভাবে প্রত্যাহার হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে ইরান বিশ্ব উন্নয়নের জন্য বড় বড় উন্নয়নধর্মী প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।’
আব্বাস ভায়েজি বলেন, ‘ত্রি-দেশীয় গ্যাস পাইপলানের মাধ্যমে ইরান পাকিস্তান এবং ভারতে গ্যাস রফতানি করবে। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশও উপকৃত হতে পারে। ওই পাইপলাইন বাংলাদেশ পর্যন্ত সম্প্রসারিত হতে পারে। এ জন্য দুই দেশের জ্বালানী মন্ত্রণালয় আলাপ-আলোচনা করতে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ইরান থেকে তেলও আমদানি করতে পারবে।’
ত্রি-দেশীয় ওই পাইপলানের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ইরানের ভূ-খণ্ডে ৯০০ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। পাকিস্তান থেকে ভারতের সীমান্ত পর্যন্ত ওই পাইপলাইন পাকিস্তান বাস্তবায়ন করছে। পাকিস্তানের নির্মাণ কাজ শেষ হলে ভারত পাইপলাইনে যোগ দিতে পারবে। তারপর তা ভারত থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সম্প্রসারিত হতে পারে।’
জানা গেছে, ওই পাইপলাইনের মাধ্যমে ইরান প্রতিদিনই ২ কোটি ১৫ লাখ কিউবিক মিটার গ্যাস পাকিস্তানে রফতানি করতে পারবে।
বাংলাদেশ-ইরান অর্থনীতি ও বাণিজ্য সম্পর্কে আব্বাস ভায়েজি বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা দুইদেশ সফর করে বাণিজ্য বিষয়ে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত নিবে। কেননা, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইরান বিশেষ করে পাট ও পোশাক খাতে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে পারে। দেশ দু’টি থেকে সরকারি ছাড়াও বেসরকারিভাবে বাণিজ্য উন্নয়নেও আগ্রহী ইরান। এ জন্য বেসরকারি পর্যায় থেকেও অর্থনীতি ও বাণিজ্য উন্নয়নে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
ইরানে বাংলাদেশী শ্রমিক নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইরানে সামনের দিনগুলোতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে লোকবল প্রয়োজন হবে। সেখানে বাংলাদেশের কারিগরিভাবে দক্ষ কর্মীরা সহায়তা করতে পারবে। এ ছাড়া ইন্টারনেট টেকনোলজি, জাহাজ শিল্পমহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশী শ্রমিকরা ইরানে কাজ করার সুযোগ পাবে।’
আব্বাস ভায়েজি জানান, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারে। সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে ইরানের ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ এই অঞ্চলের সন্ত্রাসবাদ রুখতে কাজ করতে পারে।
তিনি আরও জানান, ইরানের ওপর থেকে বৈশ্বিক অবরোধ উঠে যাওয়ায় ইরান-বাংলাদেশ নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে। ইরান বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে আগ্রহী। দুই দেশের সম্পর্ক গভীর করতে আমি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিব। শিক্ষা, বাণিজ্য, জ্বালানী, ইন্টারনেট টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে বিনিময় হতে পারে।