গৌরনদীতে আবারও বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম
প্রেমানন্দ ঘরামী ॥
বরিশালসহ গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ার খুচরা বাজারে দু’সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম প্রতি কেজিতে দু’থেকে তিন টাকা বেড়েছে। কমেনি পেঁয়াজ ও আদার ঝাঁঝ। সপ্তাহের শুরুর দিন গতকাল শনিবার বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এ চিত্র পাওয়া গেছে। আজ থেকে তিন দিনের হরতালকে সামনে রেখে বাজার আরো অস্থিশীল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা।
পৌর এলাকার আশোকাঠী বাজারে বসে কথা হয় ক্রেতা (একটি বস্ত্র বিতানের কর্মচারী) শহিদুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, টানা তিনদিনের হরতালের কারনে পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতারা সবধরনের পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। যা এখন সাধারন ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই হরতাল হচ্ছে রাজনৈতিক দলের ক্ষমতা দখলের জন্য গরীব মারার হরতাল। যারা হরতালের নামে গরীব মারার ফাঁদ পেতেছে তাদের সাধারন জনগনই ভোটের মাধ্যমে প্রতিহত করবে। এ কথাশুধু শহিদুলের একারই নয়; প্রায় একইভাবে বলেছেন অপর ক্রেতা সুজন সরদার, রহিম প্যাদা, নাসির হাওলাদার, গৃহিনী মমতাজ বেগমসহ অনেকেই। তারা সবাই ক্ষমতা দখলের নামে আন্দোলন সংগ্রামের জন্য হরতালের বিকল্প পন্থা অবলম্বন করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অনুরোধ করেন।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, গত সপ্তাহের প্রথমদিকে প্রতি কেজি স্বর্ণা ও বুলেট চাল ৩৩ টাকা থেকে এখন বেড়ে হয়েছে ৩৫ টাকা, আটাশ চাল ৩৬ টাকা থেকে ৩৮ টাকা এবং মিনিকেট ৪৪ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৫ টাকা। সূত্রে আরো জানা গেছে, টানা তিনদিনের হরতালকে সামনে রেখে ও অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে চালের আমদানী কম হওয়ায় পাইকাররা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে তাদেরও মূল্যবৃদ্ধি করে খুচরা বিক্রি করতে হচ্ছে। অপরদিকে ঝাঁঝ কমেনি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পেঁয়াজ ও আদার। প্রতি কেজি বড় আকারের দেশী পেঁয়াজ ৯৫ টাকা ও ছোট আকারের পেঁয়াজ ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আদা ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রসুনের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। দেশী রসুন স্থানভেদে প্রতিকেজি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা এবং এলসি রসুন ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন স্থানভেদে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চিনির কেজি ৪৪ টাকা থেকে ৪৬ টাকা। প্যাকেটজাত আটা ৩০ টাকা, খোলা আটা ২৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য মুদি পন্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। কাঁচা বাজারের তরকারির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিকেজি বাঁধাকপি ৩০ টাকা, ফুলকপি ৩৫ টাকা, বেগুন (সাদা) ২৫ টাকা, কালো ৩০ টাকা, করল্লা ৩৫ টাকা, পটল ৩০ টাকা ও কাঁচামরিচ ১’শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে ১১ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আবারো বাজারে উঠেছে ইলিশ। দামও রয়েছে সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে। শনিবার সকালে আশোকাঠী বাজারে প্রতি কেজি বড় ইলিশ ৪’শ টাকা, মাঝারি ইলিশ ৩৬০ টাকা, জাটকা ২৫০ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। অপরদিকে ফার্মের লেয়ার মুরগীর দাম ১০ টাকা কমে প্রতি কেজি ১২০ টাকা, সোনালী ২০ টাকা কমে প্রতি কেজি ২১০ টাকা এবং লেয়ার ১০ টাকা কমে ১৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা, খাসী ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে টানা তিনদিনের হরতালকে সামনে রেখে বর্তমান বাজার মূল্য কতোটা স্বাভাবিক থাকবে তা নিয়ে মহাদুশ্চিন্তায় রয়েছেন সাধারন ক্রেতা থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রেতারা পর্যন্ত।